৩৫০ টাকার জন্য অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যা

- আপডেট সময় : ৩৪ বার পড়া হয়েছে
মুদির দোকানে ৩৫০ টাকা বাকির তুচ্ছ ঘটনায় ফাহিম নামে অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজিবসহ ১২ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার শিবপুর গ্রামে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফাহিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় যুবক ফাহিমের বাড়িতে শোকের মাতম বইছে।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বোর্ডঘর মোড় এলকার বাসিন্দা মজনু মিয়ার ছেলের ইয়াসিনের কাছে পার্শ্ববর্তী আলগীরচর এলাকার মুদির দোকানদার রাসেল ৩৫০ টাকা বাকি পেত। এ ঘটনায় মজনু মিয়ার ছেলে ইয়াছিন ও তার ভাতিজা অটোরিকশা চালক ফাহিমের কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে সোমবার দুপুরে মানকোন বোর্ডঘর মোড়ে মুদির দোকানদার রাসেলের পক্ষ হয়ে মানকোন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজিব মিয়ার নেতৃত্বে একদল যুবক একত্রিত হয়। পরে সেখানে ফাহিমকে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়। পরে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে স’মিলের কাঠ দিয়ে ফাহিমকে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। তাকে ফেরাতে গেলে তার চাচা মজনু মিয়া, দাদী ফিরোজা খাতুন, বোন ফারজানা খাতুন, চাচাতো ভাই ইয়াছিন গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার দুপুরে ফাহিমের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহত ফাহিমের মা রুবি আক্তার বাদি হয়ে মুক্তাগাছা থানায় ছাত্রদল নেতা সজিব মিয়াকে এক নম্বর আসামী করে ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বুধবার দুপুরে নিহত ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়িতে শোকের মাতম বইছে। ফাহিমের নয় মাসের কন্যা শিশু ফাওজিয়াকে নিয়ে তার স্ত্রী খাদিজা বুক চাপড়ে কান্না করছে। পাশেই তার দাদা হাকিম ও তার দাদী ফিরোজা খাতুন মাটিতে লুটে নাতিকে হারিয়ে কান্না করছে। তার বোনেরাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে। এ যেন এক পুরো বাড়িজুড়ে শোকের মাতম বইছে।
নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম নয় মাসের শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে বলেন, আমর এই শিশু সন্তান তার বাবার জন্য পাগল। বাবাকে না দেখলে সে কান্না করে। এখন কে তার কান্না থামাবে। কে তাকে দুধ কিনে দিবে । আমার এই সন্তানের ভবিষ্যত কি। আমার স্বামীকে বিনা দোষে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি তার খুনিদের ফাঁসি চাই।
সাংবাদিকদের দেখা মাত্র ফাহিমের দাদা কান্নায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার আদরের নাতীকে দোকানের সামান্য ৩৫০ টাকা বাকির জন্য সজিব ও তার সহযোগিরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। এখন আমার ছেলে ও বউমা কি নিয়ে থাকবে। আমি জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোবারক হোসেন বলেন, ইউনিয়ন ছাত্রদলে সভাপতি সজিব ও তার লোকজন অটোরিকশা চালক ফাহিমকে স’মিলের কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরকে সরিয়ে দেয়। আমরা এ ঘটনার চূড়ান্তা বিচার দাবি করছি।
মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মঞ্জুরুল হক আরিফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে তাকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তাগাছা থানাে ওসি রিপন চন্দ্র গোপ বলেন, দোকানের বাকি নিয়ে ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটোরিকশা চালক ফাহিমের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।