৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের পর ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসতে পারবে না: অ্যাটর্নি জেনারেল
- আপডেট সময় : ০৫:৩১:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১০ বার পড়া হয়েছে
রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৬টি কমিশন গঠন করেছে সরকার, তাতে জনমানুষের আঙ্খাকার প্রতিফলন ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যখন সংস্কারের কাজ চলছে, তখন সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারের দাবি নতুন করে সামনে আনলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার হোক। ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার হলে এতে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা জেঁকে বসতে পারবে না।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্যরা কোনো নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে বা ফ্লোর ক্রস করতে পারেন না।
ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরূপে মনোনীত হইয়া কোনো ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-
(ক) উক্ত দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা
(খ) সংসদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন,
তাহা হইলে সংসদে তাঁহার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।
এই অনুচ্ছেদের কারণে জাতীয় সংসদেই পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ থাকছে না বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। সে কারণে সংবিধান থেকে ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়ার দাবি বহু পুরনো।
একই মত প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর হাতে চলে গিয়েছিল। এখন আমরা এমন বিচার বিভাগ চাই যে বিচার বিভাগ হবে জনগণের।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন আপিল বিভাগের মতামত নিয়েই
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
তিনি বলেন, গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রীসহ তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা পালিয়ে যান। সংসদ সদস্যরা নিখোঁজ হয়ে যান।
এ অবস্থায় করণীয় জানতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখন আপিল বিভাগের মতামত নিয়েই অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর রাষ্ট্রপতি সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করা যায় কি না, তা আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপ্রধান।
গত ৯ অগাস্ট রাত ৯টায় মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণের আগে সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি ভার্চুয়ালি বসেন।
ঘণ্টাখানেকের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ বলে, দুর্যোগ মুহূর্তে অন্তর্র্বতী সরকার গঠন করা যেতে পারে।
আসাদুজ্জামান বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত সব কাজ সংবিধান অনুসারে করছে। এই সরকার গঠনের আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে লিখিত বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে ৬টি কমিশন গঠন করেছে, তাতে জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।