৮ জুলাই বেইজিং সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১২:২৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪ ২১০ বার পড়া হয়েছে
রিজার্ভ সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তার ঘোষণা দিতে পারে চীন
৮ জুলাই বেইজিং সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে ঢাকা-বেইজিং উভয়পক্ষই বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর ঘিরে উভয় পক্ষই ১৫টি চুক্তির প্রস্তুতিও নিয়েছে।
২০১৯ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরে গিয়েছিলেন। ৫ বছর পর আবারও চীন সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে ঢাকার তরফে উন্নয়ন ইস্যুকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।
বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে দুই দেশের আলোচনা প্রাধান্য পাবে। এসব খাতে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে অন্তত ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই বার্তা দিয়েছে বেইজিং। চীনের তরফে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পারিক রাজনৈতিক বিশ্বাসকে আরও গভীর করতে চায় বেইজিং।
একই সঙ্গে দুই দেশের উন্নয়ন কৌশলগুলোকে আরও একত্রিত, বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার উচ্চ অগ্রগতি, বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো, বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করতে চায় বেইজিং।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত বিশেষ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এই খাতে অন্তত ৭ চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে এই গ্যাস আনার জন্য পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে একশ কোটি মার্কিন ডলার। চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি হতে পারে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রিজার্ভ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। রিজার্ভ সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তার ঘোষণা দিতে পারে চীন। বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক নগদের সঙ্গে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন যেন আরো সহজ হয়, সে লক্ষ্যে এই চুক্তি সই হচ্ছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে একযোগে কাজ করছে। তবে রাখাইনে অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা উঠতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন অংশীদার। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন যেমন কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা সেতুসহ অনেক আইকনিক স্থাপনায় চীন আমাদের সহায়তা করেছে। আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় চীন ভূমিকা পালন করে আসছে। উন্নয়ন অভিযাত্রা যেন বেগবান হয়, সফরে এটাই প্রাধান্য পাবে।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর হবে আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর হবে গেম চেঞ্জার।
প্রধানমন্ত্রীর সফর সূচি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছাবেন। ৯ জুলাই দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে চুক্তি ও সমঝোতা সই হবে। আগামী ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিনে চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অব চায়নার প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। চীন সফরে বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাচ্ছেন। তারা সেখানে চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।