ঢাকা ০৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বিএনপির কর্মীসম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo পঞ্চগড়ে পেনশন মেলার উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo তারাকান্দায় সিএনজি  ও বাস মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত ৬ Logo নওগাঁয় মন্দিরের জায়গা দখলচেষ্টা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলন Logo কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, আটক-৪ Logo ফরিদপুর সদর উপজেলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ  Logo তিতাসে ১৭০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ১ Logo কক্সবাজারের রামুতে ইসলামি ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ কর্মসূচি পালিত Logo কেশবপুরে  রিইব’র মানবাধিকার সুরক্ষা দলের ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo নরসিংদীতে লটকন চাষীদের মাথায় হাত

বন্যায় ৮ মৃত্যু, তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখের বেশি মানুষ

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪ ৩০৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণার ১৩ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের ৬৭ হাজার ৫২০টি পরিবার পানিবন্দি। এ পর্যন্ত বন্যায় ৮ মৃত্যু হয়েছে এবং তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখের বেশি মানুষ। মৃত্যু আটজনের সবাই শেরপুর জেলার।

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বেড়ে ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণায় সৃষ্ট বন্যায় এ পর্যন্ত ২ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার দুপুরে বন্যা সম্পর্কিত নিয়মিত প্রতিবেদনে বলেছে, তিন জেলার ১৩ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের ৬৭ হাজার ৫২০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। জেলাগুলোতে মোট ১২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৫১৭ জন মানুষ ও ৯৪৮টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, বন্যায় শেরপুরের ৫ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫৯ হাজার ৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনও পানিবন্দি ১৩ হাজার ৮০টি পরিবার।বন্যায় শেরপুরের নলিতাবাড়ী উপজেলার ছয়জন আর নকলা উপজেলার দুইজন মারা গেছেন।

তারা হলেন, ইদ্রিস আলী (৬৫), জহরা (৭০), আমিজা খাতুন (৪৫), মো. হাতেম আলী (৩০), আলমগীর হোসেন (১৬), জিমি (৮), আব্দুর রাজ্জাক (৫২) ও রাহিম (৫)।

শেরপুরের ৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০৬ জন মানুষ ও ৭৩৭টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলায় ১৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি টিম কাজ করছে।

বন্যাকবলিত ময়মনসিংহের তিন উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মোট ১ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলায় ৩২ হাজার ৪৪০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

এ জেলায় মোট ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১ হাজার ১০৬ জন মানুষ এবং ২১১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের সহায়তায় ২৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে; যেখানে ছয়টি টিম কাজ করছে।

অপরদিকে বন্যাক্রান্ত নেত্রকোণার পাঁচ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের মোট ২৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ২২ হাজার পরিবার।

এ জেলার মোট সাতটি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলায় কাজ করছে পাঁচটি মেডিকেল টিম।

বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢলে অগাস্টের মাঝামাঝিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে টানা ভারি বৃষ্টিতে রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে এমন বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বেড়ে ডুবেছে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন জেলা।

মঙ্গলবার বিকালের তথ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, এ বিভাগের নীল জিঞ্জিরাম নদীর গোয়ালকান্দা পয়েন্টে পানি ১ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আর নেত্রকোণা জেলার সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি ৫ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

বন্যা কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ময়মনসিংহ বিভাগের জিঞ্জিরাম নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে, ভুগাই-কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাতে বন্যা তথ্যে বলা হয়েছে, আগামী তিন দিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও এর উজানে অতিভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী তিন দিন পর্যন্ত ভুগাই-কংস নদীর পানি কমতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

অপরদিকে আগামী এক দিন জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী এক দিন পর্যন্ত জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন ধীর গতিতে উন্নতি লাভ করতে পারে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বন্যায় ৮ মৃত্যু, তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখের বেশি মানুষ

আপডেট সময় : ০৯:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

 

ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণার ১৩ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের ৬৭ হাজার ৫২০টি পরিবার পানিবন্দি। এ পর্যন্ত বন্যায় ৮ মৃত্যু হয়েছে এবং তিন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখের বেশি মানুষ। মৃত্যু আটজনের সবাই শেরপুর জেলার।

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বেড়ে ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণায় সৃষ্ট বন্যায় এ পর্যন্ত ২ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার দুপুরে বন্যা সম্পর্কিত নিয়মিত প্রতিবেদনে বলেছে, তিন জেলার ১৩ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের ৬৭ হাজার ৫২০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। জেলাগুলোতে মোট ১২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৫১৭ জন মানুষ ও ৯৪৮টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে।

মন্ত্রণালয় বলছে, বন্যায় শেরপুরের ৫ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ৫৯ হাজার ৯০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখনও পানিবন্দি ১৩ হাজার ৮০টি পরিবার।বন্যায় শেরপুরের নলিতাবাড়ী উপজেলার ছয়জন আর নকলা উপজেলার দুইজন মারা গেছেন।

তারা হলেন, ইদ্রিস আলী (৬৫), জহরা (৭০), আমিজা খাতুন (৪৫), মো. হাতেম আলী (৩০), আলমগীর হোসেন (১৬), জিমি (৮), আব্দুর রাজ্জাক (৫২) ও রাহিম (৫)।

শেরপুরের ৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০৬ জন মানুষ ও ৭৩৭টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলায় ১৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়টি টিম কাজ করছে।

বন্যাকবলিত ময়মনসিংহের তিন উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মোট ১ লাখ ৪৯ হাজার ২০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলায় ৩২ হাজার ৪৪০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

এ জেলায় মোট ২২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১ হাজার ১০৬ জন মানুষ এবং ২১১টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের সহায়তায় ২৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে; যেখানে ছয়টি টিম কাজ করছে।

অপরদিকে বন্যাক্রান্ত নেত্রকোণার পাঁচ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের মোট ২৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ২২ হাজার পরিবার।

এ জেলার মোট সাতটি আশ্রয়কেন্দ্রে ১০৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলায় কাজ করছে পাঁচটি মেডিকেল টিম।

বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢলে অগাস্টের মাঝামাঝিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে টানা ভারি বৃষ্টিতে রংপুর, নীলফামারীসহ উত্তরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে এমন বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বেড়ে ডুবেছে ময়মনসিংহ বিভাগের তিন জেলা।

মঙ্গলবার বিকালের তথ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, এ বিভাগের নীল জিঞ্জিরাম নদীর গোয়ালকান্দা পয়েন্টে পানি ১ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আর নেত্রকোণা জেলার সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি ৫ সেন্টিমিটার কমলেও এখনও ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

বন্যা কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ময়মনসিংহ বিভাগের জিঞ্জিরাম নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে, ভুগাই-কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাতে বন্যা তথ্যে বলা হয়েছে, আগামী তিন দিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও এর উজানে অতিভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী তিন দিন পর্যন্ত ভুগাই-কংস নদীর পানি কমতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

অপরদিকে আগামী এক দিন জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী এক দিন পর্যন্ত জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন ধীর গতিতে উন্নতি লাভ করতে পারে।