ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কামারজানীতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে কঠোর হুশিয়ারি এলাকাবাসীর

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২৯২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানীর গোঘাটে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে কামারজানীর সকল শ্রেনি-পেশার শত শত মানুষ অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার দাবিতে উত্তাল হয়ে বিক্ষোভ করেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া অনেকে জানায়, সরকার বালু মহাল ঘোষনার পর থেকে বালু মহাল প্রত্যাহার বা বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। জনগনের বিরুদ্ধে গিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে বিভ্রান্তিকর কর্মকান্ড করে চলেছে। প্রকাশ্যে অবৈধ বালু উত্তোলন করার ঘোষণা দেয় বালু ব্যবসায়ীরা এবং জনগন ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গেলে জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালায় বালু ব্যবসায়ী চক্রটি। বালু ব্যবসায়ীদের হামলায় আহতরা স্থানীয় ৮জন। তাদের গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি করা হয়।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে স্থানীয় মো. আবুয়াল শাঈদ বাবু বলেন, কোন হুুমকি-ধামকি বা বন্ধুকের গুলি ব্যবহার করে জনতার আন্দোলন দমানো যাবে না। কামারজানী বন্দর থাকলে সবাই ভোট করে জনপ্রতিনিধি হতে পারবে কিন্তু যদি বন্দর না থাকে তবে কারো জনপ্রতিনিধির স্বপ্নও পূরন হবে না।

কামারজানী ফসলি জমিসহ বন্দর রক্ষায় বালু মহাল প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব মো. মাজু আহমেদ বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তাতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়দের উপর হামলা চালিয়ে ৮জনকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে থেকে একটি এজাহার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত হামলাকারী অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। কালক্ষেপণ করলে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর মাধ্যমে তাদের গ্রেফতার দাবি জানাচ্ছি।
কামারজানী ফসলি জমিসহ বন্দর রক্ষায় বালু মহাল প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। বালু ব্যবসায়ী চক্রটি আলামত নষ্ট করতে গভীর রাতে জব্দকৃত বাল্কহেট ছিনতাই করতে এসে ছিল কিন্তু স্থানীয়রা টের পেয়ে ধাওয়া দিলে ছিনতাইকারীরা একটি মোটর সাইকেল রেখেই পালিয়ে যায়।
স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠক এম সাদ্দাম হোসেন পবন বলেন, অস্তিত্ব রক্ষায় আমাদের সবাইকে এক সাথে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হবে। তবে প্রশাসনের উচিৎ বালু মহাল দ্রুত প্রত্যাহার বা বাতিল করা । এলাকার মানুষ এখন তাকিয়ে আছে প্রশাসনের দিকে,কখন বালু মহাল বাতিল হয়ে শান্তি ফিরে আসবে।

কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান বিক্ষোভে তার বক্তব্যে বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিত ভাবে স্থানীয়দের উপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি। এই এলাকায় আমরা ভেসে আসি নাই,কেউ হুুমকি-ধামকি দিলেই নিরব হবো। অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ধর্য্যশীল এবং শান্ত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছি। প্রসঙ্গত: বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে দশটার সময় বালু ব্যবসায়ী মো. রানা মিয়া,মো. জাহাঙ্গীর আলম, মিলন মিয়া,আনিছুর রহমানরা গোঘাটে বাল্কহেট দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করার সময় স্থানীয়রা বন্ধ করতে বলায় তাদের উপর হামলা চালায় চক্রটি। বালু ব্যবসায়ীদের হামলায় ৮জন স্থানীয় আহত হয়। স্থানীয়দের উপর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে হাজারো জনসাধারণ প্রতিরোধ গড়তে ঘটনাস্থলে গেলে কৌশলে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে জনসাধারণ অবৈধ বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত দুটি বাল্কহেট আটক করে কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘাটে রেখেছেন। পুলিশ ও সেনা বাহিনী এসে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন এবং পুলিশ বাল্কহেট দুটি জব্দ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কামারজানীতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে কঠোর হুশিয়ারি এলাকাবাসীর

আপডেট সময় : ০৩:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানীর গোঘাটে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে কামারজানীর সকল শ্রেনি-পেশার শত শত মানুষ অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার দাবিতে উত্তাল হয়ে বিক্ষোভ করেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া অনেকে জানায়, সরকার বালু মহাল ঘোষনার পর থেকে বালু মহাল প্রত্যাহার বা বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। জনগনের বিরুদ্ধে গিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে বিভ্রান্তিকর কর্মকান্ড করে চলেছে। প্রকাশ্যে অবৈধ বালু উত্তোলন করার ঘোষণা দেয় বালু ব্যবসায়ীরা এবং জনগন ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গেলে জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালায় বালু ব্যবসায়ী চক্রটি। বালু ব্যবসায়ীদের হামলায় আহতরা স্থানীয় ৮জন। তাদের গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি করা হয়।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে স্থানীয় মো. আবুয়াল শাঈদ বাবু বলেন, কোন হুুমকি-ধামকি বা বন্ধুকের গুলি ব্যবহার করে জনতার আন্দোলন দমানো যাবে না। কামারজানী বন্দর থাকলে সবাই ভোট করে জনপ্রতিনিধি হতে পারবে কিন্তু যদি বন্দর না থাকে তবে কারো জনপ্রতিনিধির স্বপ্নও পূরন হবে না।

কামারজানী ফসলি জমিসহ বন্দর রক্ষায় বালু মহাল প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব মো. মাজু আহমেদ বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তাতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয়দের উপর হামলা চালিয়ে ৮জনকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে থেকে একটি এজাহার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত হামলাকারী অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। কালক্ষেপণ করলে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর মাধ্যমে তাদের গ্রেফতার দাবি জানাচ্ছি।
কামারজানী ফসলি জমিসহ বন্দর রক্ষায় বালু মহাল প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। বালু ব্যবসায়ী চক্রটি আলামত নষ্ট করতে গভীর রাতে জব্দকৃত বাল্কহেট ছিনতাই করতে এসে ছিল কিন্তু স্থানীয়রা টের পেয়ে ধাওয়া দিলে ছিনতাইকারীরা একটি মোটর সাইকেল রেখেই পালিয়ে যায়।
স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠক এম সাদ্দাম হোসেন পবন বলেন, অস্তিত্ব রক্ষায় আমাদের সবাইকে এক সাথে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হবে। তবে প্রশাসনের উচিৎ বালু মহাল দ্রুত প্রত্যাহার বা বাতিল করা । এলাকার মানুষ এখন তাকিয়ে আছে প্রশাসনের দিকে,কখন বালু মহাল বাতিল হয়ে শান্তি ফিরে আসবে।

কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান বিক্ষোভে তার বক্তব্যে বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিত ভাবে স্থানীয়দের উপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বালু ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি। এই এলাকায় আমরা ভেসে আসি নাই,কেউ হুুমকি-ধামকি দিলেই নিরব হবো। অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ধর্য্যশীল এবং শান্ত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছি। প্রসঙ্গত: বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে দশটার সময় বালু ব্যবসায়ী মো. রানা মিয়া,মো. জাহাঙ্গীর আলম, মিলন মিয়া,আনিছুর রহমানরা গোঘাটে বাল্কহেট দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করার সময় স্থানীয়রা বন্ধ করতে বলায় তাদের উপর হামলা চালায় চক্রটি। বালু ব্যবসায়ীদের হামলায় ৮জন স্থানীয় আহত হয়। স্থানীয়দের উপর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের হামলার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে হাজারো জনসাধারণ প্রতিরোধ গড়তে ঘটনাস্থলে গেলে কৌশলে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে জনসাধারণ অবৈধ বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত দুটি বাল্কহেট আটক করে কামারজানী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ঘাটে রেখেছেন। পুলিশ ও সেনা বাহিনী এসে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন এবং পুলিশ বাল্কহেট দুটি জব্দ করেছেন।