ভান্ডারিয়ায় আরবী ক্যালিগ্রাফিতে দৃষ্টিনন্দন তিন স্তম্ভ

- আপডেট সময় : ০১:৫৪:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৯৩ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার পবিত্র আরবী হরফের ক্যালিগ্রাফিতে গড়ে তোলা তিনটি স্তম্ভ হয়েছে তিনটি চত্বর। সুউচ্চ মিনারের চারপাশ জুড়ে আরবী ক্যালিগ্রাফির এ স্তম্ভ একদিকে যেমনি শোভা বর্ধন করেছে তেমনি জন মানুষের কাছে স্তম্ভ তিনটি দৃষ্টি কাড়ছে। শহরের ঢাকা-বরিশাস বাসস্টাণ্ড মোড়ে ত্রিমোহনায় গড়ে তোলা হয়েছে কালিমা চত্বর, ভান্ডারিয়ার চরখালী ফেরিঘাটের কাছে মঠবাড়িয়া-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর মহাসড়কের চৌরাস্তা মোহনায় গড়ে তোলা হয়েছে বিসমিল্লাহ চত্বর ও ভান্ডারিয়া ধাওয়া সড়কের ত্রিমোহনায় ফুলতলা বাজারে গড়ে তোলা হয়েছে সুবহান-আল্লাহ চত্বর। এ তিন চত্বরে গড়ে তোলা মিনার আকৃতির স্তম্ভজুড়ে আরবী ক্যালিগ্রাফির শোভন কারুকাজ খচিত উপকূলে আরবী ক্যালিওগ্রাফির ইসলামী বাণী সম্বলিত এমন শোভন স্তম্ভ আর দেখা মেলেনা। ফলে এ তিন স্তম্ভ ভাণ্ডারিয়া উপজেলা শহরকে বিশেষ পরিচিতি এনে দিয়েছে।
কালিমা চত্বর..
ভান্ডারিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাস স্ট্যাণ্ড মোড়ের ত্রি মোহনায় ৩১৫ ফুট স্থান জুড়ে ১৫ ফুট মাটির উঁচু ডিবির ওপর ১৭ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার স্তম্ভটি গড়ে তোলা হয়েছে ১৯৯৮ সালে ।
চারপাশে রেলিং ঘেরা আর নানান বাহারী ফুল গাছে ঘেরা এ স্তম্ভটির নাম করণ করা হয় কালিমা চত্বর।
১৭ ফুট ৬ ইঞ্চির এ স্তম্ভটির ব্যাক গ্র্যাউন্ডে স্তম্ভ সমান লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ লেখা আরবী হরফের ক্যালিওগ্রাফি নির্মাণ করা হয়। কেবলামুখি এ হরফগুলি আকাশী রঙের টাইলসে ডিজাইন করা হয়েছে। বহুদুর থেকে পথচারী সকল মানুষের নজরে পড়ে এ ইসলামী বাণী। প্রায় ২১ বছর আগে গড়ে তোলা এ স্তম্ভটি দেশের ইসলামী বাণী সমৃদ্ধ প্রথম ক্যালিগ্রাফি স্থাপনা। ১৯৯৮ সালের ২৪ মে তৎকালিন যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু কালিমা চত্বরটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সম্পূর্ণ তাঁর ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ইসলামী বাণী সমৃদ্ধ স্তম্ভ দৃশ্যত স্থানে নির্মাণ করে ধর্মীয় এক মহানুভবতার পরিচয় দেন। ৭ লাখ টাকারও অধিক ব্যায়ে এ নির্মিত এ কালিমা চত্বরটি পরে কয়েক দফা সংস্কার ও পরিবর্ধন করে আরও দৃষ্টি নন্দন করা হয়।
বিসমিল্লাহ চত্বর ….
ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর সড়কের চরখালী ফেরিঘাটের কাছে চৌরাস্তার মোহনায় ২০০০ সালে গড়ে তোলা হয় ইসলামী বাণী সমৃদ্ধ আরও একটি সুউচ্চ স্তম্ভ। গোলাকৃতির রেলিং ঘেরা প্রয় ৩০ ফুট উচ্চতার মিনার আকৃতির স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্থায়নে। তিনটি স্তম্ভের ওপর দণ্ডায়মান স্তম্ভটির উপরের অংশটি অনেকটাই মসজিদের গম্ভুজ আকৃতির। তিনটি পিলারের নিচের অংশে আলাদা প্রস্তর মিনারটিকে বেশ নয়ণাভিরাম করেছে। নিচের তিনটি প্রস্তরে দুই পীঠে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লেখা আরবী ক্যালিওগ্রাফি স্তম্ভটির ভিন্ন মাত্রা দৃশ্যমান। লাল আর সবুজ রঙের টাইলসের বিশালকৃতির এ ক্যালিওগ্রাফি বহু দুর থেকে দৃশ্যমান হয়। এ স্তম্ভটির বিশেষত এই যে মূল ডিজাইনের সাথে একটি ফোয়ারা সংযোজিত রয়েছে। সেই সাথে নানা বর্ণিল আলোকছটা সন্ধ্যায় অপূর্ব শোভন রূপ আবহে মানুষকে বিমোহিত করে। চরখালী চৌরাস্তা মোহনার এ স্তম্ভটির পরিচিতি বিসমিল্লাহ চত্বর।
সুবাহান-আল্লাহ চত্বর….
ভান্ডারিয়া পৌরশহর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে ধাওয়া সড়কের ফুলতলা বাজারের ত্রিমোহনা সড়কে গড়ে তোলা হয়েছে আরও একটি দৃষ্টিনন্দন স্তম্ভ। ২০১৭ সালে পিরোজপুর জেলা পরিষদের অর্থায়নে গড়ে তোলা মিনার আকৃতির এ স্তম্ভটির নামকরণ করা হয়েছে সুবহান-আল্লাহ চত্বর। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার গোলাকৃতির এ স্তম্ভটি অনেকটাই মিনার গম্ভুজ আদলে গড়া। নানা বর্ণিল টাইলসে গড়ে তোলা গোলাকৃতির এ স্তম্ভটি নান্দনিক শোভা বর্ধন করেছে। তিনটি পিলারে গড়ে তোলা এ স্তম্ভটির নিচের মাঝখানে ছোট একটি স্তম্ভে ষ্টিলের হরফে লেখা রয়েছে আল্লাহু আকবর। আর তিনটি পিলারের নিচের অংশে লেখা রয়েছে আরবী ভাষায় আল্লহর ৯৯ নাম। সুবহান-আল্লাহ চত্বরটি ২০১৭ সালে ১০ মে তৎকালীন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এটি এমন ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে মোহনার তিনটি সড়কের বহু দুর থেকে এটি দৃশ্যমান।