ঢাকা ০৩:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কেশবপুর উপজেলা মাসিক এনজিও সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত Logo জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অব কিশোরগঞ্জ এর কমিটি ঘোষণা Logo সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে, রামগতিতে মৌসুম শুরুর আগেই ইট উৎপাদনে প্রস্তুত ৫১ অবৈধ ইটভাটা Logo গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন নাজমুল হাসান সোহাগ Logo পীরগঞ্জে দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে বিনামূল্যে টিউবওয়েল বিতরণ Logo ডামুড্যায় দুই কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ Logo শেরপুরে আগুনে পুড়ে মাদরাসাছাত্রী নাবিলার মর্মান্তিক মৃত্যু Logo ভূরুঙ্গামারীতে টেকসই উদ্যোক্তা ও জীবিকা উন্নয়নে কর্মশালা Logo সিলেট-৬ ধানের শীষের কান্ডারী এড. এমরান আহমদ চৌধুরী Logo সিংগাইরে নায়েবের মারপ্যাচে দালালের ফাঁদ

নতুন দল নিবন্ধনে ইসির গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের রুল

কোর্ট রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ২১৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গণবিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিব ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা রিট আবেদনকারীর দলের (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) ক্ষেত্রে স্থগিত করা হয়েছে। ইসির গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে গতকাল রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবেদা গুলরুখ। রিটকারী আইনজীবী আবেদা গুলরুখ বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার চেতনা ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ব্যর্থ করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০খ-এর আলোকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ওই গণবিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এর আগে গত ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেয় নির্বাচন কমিশন। এর বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম রিটটি করেন। তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবেদা গুলরুখ গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটের আর্জিতে দেখা যায়, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ব্যর্থ করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০খ–এর আলোকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে ১০ মার্চ প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে রিটে রুল চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ চারজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। ইসির গণবিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক–এর অধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় উল্লিখিত শর্ত পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ পূরণ করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০খ উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে কমিশনে দলের নাম নিবন্ধন করতে পারবে। ৯০খ ধারায় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় ছাড়াও নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত উল্লেখ রয়েছে। যেমন কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা; অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস প্রতিষ্ঠা, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের তালিকাভুক্তি ইত্যাদি। রিট আবেদন নিয়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ১০০ উপজেলা ও ২২ জেলায় দলের কমিটি থাকতে হবে বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। অথচ পার্বত্য তিন জেলায় ২০টি উপজেলা রয়েছে। যে কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আগ্রহী হলেও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করতে পারবে না। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সময় ২০১১ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ওই শর্ত যুক্ত করা হয়। ৫ শতাংশ উপজেলায় এবং ১০ শতাংশ জেলা কমিটি থাকাসহ সর্বমোট ৫ হাজার সদস্য থাকলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পুরোনো আইনে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সংবিধানে রাজনৈতিক দলের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, এই গণবিজ্ঞপ্তি সেই চেতনার পরিপন্থি মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নতুন দল নিবন্ধনে ইসির গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের রুল

আপডেট সময় :

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গণবিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিব ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা রিট আবেদনকারীর দলের (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) ক্ষেত্রে স্থগিত করা হয়েছে। ইসির গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে গতকাল রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবেদা গুলরুখ। রিটকারী আইনজীবী আবেদা গুলরুখ বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত রাজনৈতিক দলের সংজ্ঞার চেতনা ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ব্যর্থ করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০খ-এর আলোকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ওই গণবিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এর আগে গত ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেয় নির্বাচন কমিশন। এর বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম রিটটি করেন। তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবেদা গুলরুখ গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটের আর্জিতে দেখা যায়, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ব্যর্থ করতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০খ–এর আলোকে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে ১০ মার্চ প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তি কেন আইনগত কর্তৃত্ব–বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে রিটে রুল চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ চারজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। ইসির গণবিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক–এর অধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় উল্লিখিত শর্ত পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ পূরণ করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ক অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০খ উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে কমিশনে দলের নাম নিবন্ধন করতে পারবে। ৯০খ ধারায় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় ছাড়াও নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত উল্লেখ রয়েছে। যেমন কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা; অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস প্রতিষ্ঠা, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের তালিকাভুক্তি ইত্যাদি। রিট আবেদন নিয়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ১০০ উপজেলা ও ২২ জেলায় দলের কমিটি থাকতে হবে বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। অথচ পার্বত্য তিন জেলায় ২০টি উপজেলা রয়েছে। যে কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আগ্রহী হলেও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করতে পারবে না। স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সময় ২০১১ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ওই শর্ত যুক্ত করা হয়। ৫ শতাংশ উপজেলায় এবং ১০ শতাংশ জেলা কমিটি থাকাসহ সর্বমোট ৫ হাজার সদস্য থাকলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পুরোনো আইনে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সংবিধানে রাজনৈতিক দলের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, এই গণবিজ্ঞপ্তি সেই চেতনার পরিপন্থি মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।