গোলাপগঞ্জে আ’লীগ নেতার দাপটে নিজ ভুমিতে ঘর করতে পারছেন না অসহায় একটি পরিবার

- আপডেট সময় : ০৩:৩০:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের গোলাপগঞ্জের পল্লী এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতার ক্ষমতার দাপটে নিজ ভূমিতে ঘর নির্মাণ করতে না পারায় জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছেন অসহায় এক পরিবার। ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পরও অসহায় গোলাপগঞ্জের পল্লীতে আওয়ামী লীগের নেতার দাপটে মাথা গোজার ঠাঁই করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন রোসনা বেগম নামে এক নারী।
২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরও ফ্যাসিস্ট সরকারের লালিত দলীয় বাহিনীর অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতনে অসহায় হয়ে পড়ছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জের পল্লী এলাকার একটি পরিবার। তাদের অত্যাচারে দানপত্রে সাড়ে ৩ শতক ভূমির মালিক হয়ে মাথা গোজার ঠাঁই করতে পারছেন না রোসনার পরিবার। জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ইতোমধ্যে ফ্যাসিস্ট সরকারের বাহিনী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জমির আলী গংরা অসহায় পরিবারের বসতঘর, গরুর ঘর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর মালামাল লোপাট করে নিয়ে উল্টো বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিলেটে বিবিধ মামলা নং-৮৯ দায়ের করে একের পর এক হয়রানি করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুলিশের দারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পাননি তারা। দলীয় দাপটে এলাকার মানুষজনও ছিলো রহস্যজনক কারণে নীরব। ফ্যাসিস্ট সরকারের লালিত বাহিনীর কবলে পড়ে নির্যাতিত হচ্ছেন উপজেলার পল্লী অঞ্চল ৭নং লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের ফুলশাইন্দ গ্রামের আতিক উদ্দিনের স্ত্রী রোসনা বেগম (৫৫)।
সরেজমিনে ঘটনা স্থলে গেলে ভূক্তভোগী পরিবার আওয়ামী লীগ নেতাদের হয়রানি, হামলা-মারধর, বসতঘর, গরুর ঘর ভাঙচুর করার করুন চিত্র তুলে ধরেন রোসনা বেগম এ প্রতিবেদকের কাছে। বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার উপজেলার ফুলশাইন্দ গ্রামের আতিক মিয়ার স্ত্রী রোসনা বেগম জানান, ফুলশাইন্দ মৌজার জেল নং-৬৭, খতিয়ান নং-১৮৪১, দাগ নং- ৫৭৯৭ ভূমিতে স্বামীর মাত্র সাড়ে ৩ শতক ভূমিতে স্বামীসহ ৪ সন্তান নিয়ে ছোট একটি ঘর নির্মাণ করে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছেন।
একাধিক সন্তানদের বিবাহ দেয়ায় স্বল্প ভূমিতে বসবাসে সংকুলান না হওয়ায় অতিকষ্টে বসবাস করছেন রোসনা বেগম। অবশেষে তার স্বামীর বোন খয়তুন্নেছা ফয়তুন বিবি ওরফে কয়তুন বেগম তাদের বসবাসের দুর্ভোগ দেখে রোসনা বেগমের বসত ঘরের পাশেই একই মৌজার ১৬৯৩ খতিয়ানের ৫৭৯৮ দাগের সাড়ে ৩ শতক ভূমি ২০২৩ সালে ২৫২২নং দলিল মূলে দানপত্র করে দেন। এতে করে রোসনা বেগম আশার আলো দেখেন। অভাবের তাড়নায় পর্যাক্রমে ঘর বর্ধিত করে নির্মাণ করতে থাকেন। সেই থেকে ভয়ংকর ও হিংস্র হয়ে উঠেন একই এলাকার পাশ্ববর্তী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে জমির আলী, নিজাম উদ্দিন, টিপু আহমদ ও কুতুব আলী।
তারা সকলই ফ্যাসিস্ট সরকারের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। শুরু হয় রোসনা বেগমের উপর স্টিম রোলার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে হামলা চালিয়ে বসতঘর, গরুর ঘর ভাঙচুর করে মালপত্র লোপাট করে নিয়ে গিয়ে উল্টো ২০২৪ সালে ভূমির মালিক দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতা মো: নিজাম উদ্দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সিলেটে বিবিধ মামলা নং-৮৯ দাখিল করেন এবং চলতি বছরের ১৩ মার্চ রোসনা বেগমসহ তার স্বামী বিরুদ্ধে ইট, রড, বাঁশের খুঁটি, পাকা পিলার ইত্যাদি নিয়ে ঘর নির্মাণের পায়তার করছেন মর্মে বিবিধ মামলার সাথে আরো একটি মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যাহা সঠিক নয় তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেন রোসনা বেগম। এভাবে অসহায় রোসনা বেগমের পরিবারের উপর নির্যাতন, স্টিম রোলার চালিয়ে হয়রানি করে আসছেন এই আওয়ামীলীগ নেতা জমির আলী, নিজাম উদ্দিন গংরা।
রোসনা বেগম অসহায় হয়ে এ প্রতিবেদককে জানান, চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পরও আওয়ামী লীগের নেতার ক্ষমতার দাপটে তিনি তার স্বামী-সন্তানদের নিয়ে চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে বসবাস করছেন। এখনও তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আমার পরিবারকে ভিটে ছাড়া করার জন্য এ ভাবে এখনো দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নির্যাতন করছেন। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারের লালিত বাহিনীর নানা নির্যাতন ও হয়রানির কবল থেকে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা জমির আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আমার ভাই নিজাম উদ্দিন। রোসনা বেগমের দানকৃত ভূমির দাগ ও খতিয়ানে প্রায় ২৩ শতক ভূমি রয়েছে। উল্লেখীত দাগ ও খতিয়ানে আমি নিজেসহ একাধিক অংশীদার রয়েছেন বিধায় চিহ্নিত করে ঘর নির্মাণের জন্য বাঁধা প্রদান করেছি। বসতঘর ভাঙচুরের বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি।