ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

আ.লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে মুজিবের কালো আইনে ১৯ ধারায়

হালিম মোহাম্মদ
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন

অর্ন্তবর্তী সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী শেখ মুজিবের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় সরকার চাইলে দলটি নিষিদ্ধ করতে পারে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা আলোচনা সাপেক্ষে নিষিদ্ধ করতে পারে। এটি শুধু এখন সময়েয়র ব্যাপার মাত্র। এমন তথ্য দিয়েছেন এটর্নী জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণ হত্যাকারী, খুনী ও ফ্যাসিস্ট একটি দল। জাতিসংঘের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে জুলাই বিপ্লবে তারা দুই হাজার মানুষকে খুন করেছে। ৩০ হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে। ফলে ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী শেখ মুজিবের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় সরকার চাইলে দলটি নিষিদ্ধ করতে পারে। অ্যাটর্নি জেনারেল গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের শৈলকূপা শহরের নতুন বাজার এলাকায় শৈলকূপা বণিক সমিতির আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এদিকে গত কয়েকদিন যাবত জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধেও দাবিকে সমাবেশ, বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসুচী পালন করে আসছিল। সেই আন্দোলন চলমান রয়েছে। এই আন্দোলন ক্রমান্বয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। হাইওয়ে সড়কে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মানুণ হয়রানির শিকার হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও এবং জামঅয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচী পালক করছে। আওয়ামী লীগকে ‌‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে আজ শনিবার সারা দেশে গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এক অবরোধ কর্মসূচি থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
হাসনাত জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল ৩টায় শাহবাগ মোড়ে মূল গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। একই সময়ে সারা দেশেও জুলাইয়ের আন্দোলনের পয়েন্টগুলোতে গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই আন্দোলন ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে, এটা বাংলাদেশপন্থী জনতার লড়াই। ৫ আগস্ট জনগণ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন সেটাকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার সময় এসেছে। তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলগত বিচারের বিধান সংযুক্ত করা। ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ জারি করা।
অপরদিকে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আরও বলেন, গত ১৭ বছরে বাংলাদেশে ৭০০ মানুষকে খুন করা হয়েছে। সাড়ে চার হাজার মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। ১৭ বছরে ৬০ লাখ মানুষের নামে গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এই যখন অবস্থা তখন সব কিছুই মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে গণ্য হবে। বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিচার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেই ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যতই ষড়যন্ত্র করুক, আস্ফালন করুক দেশের সংবিধান ও আইনের হাত অনেক লম্বা। আর তাদের বিচার করার জন্যই এখনও লক্ষ-কোটি জনতা রাজপথে আছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে গুম, হত্যা ও খুনের বিচার হবে।
তিনি জুলাই বিপ্লবকে স্মরণ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার করা না গেলে শহীদ মুগ্ধ ওয়াসিম ও শিশু আনাসের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের বিচার করার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে সরকার। সেই আইনে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের খুনীদের বিচার করে বাংলাদেশকে কলঙ্ক মুক্ত করা হবে।
অন্যদিকে হাসনাত আরও জানান, আমাদের অবস্থানের ২৫ ঘণ্টা পার হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে। কর্মসূচিতে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রচর্চা করেনি। দলটি বিভিন্ন সময় গণহত্যার জন্য দলগতভাবে দায়ী। তাদের দলগত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, এই আন্দোলন কোনো দলের নয়, এটি ‘জুলাই’ নামক জনতার প্ল্যাটফর্ম থেকে পরিচালিত। ১৬ ডিসেম্বর, শাপলা চত্বর, পিলখানা, জুলাই ইত্যাদি ঘটনাগুলোর বিচার জনগণ চায়। জুলাই ঐক্য’র এবি জুবায়ের জানান, তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। রাত সাড়ে ১১টায় ইনকিলাব মঞ্চে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ বিষয়ে একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আ.লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে মুজিবের কালো আইনে ১৯ ধারায়

আপডেট সময় : ০৫:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

 সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন

অর্ন্তবর্তী সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী শেখ মুজিবের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় সরকার চাইলে দলটি নিষিদ্ধ করতে পারে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা আলোচনা সাপেক্ষে নিষিদ্ধ করতে পারে। এটি শুধু এখন সময়েয়র ব্যাপার মাত্র। এমন তথ্য দিয়েছেন এটর্নী জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণ হত্যাকারী, খুনী ও ফ্যাসিস্ট একটি দল। জাতিসংঘের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে জুলাই বিপ্লবে তারা দুই হাজার মানুষকে খুন করেছে। ৩০ হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে। ফলে ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী শেখ মুজিবের করা কালো আইনের ১৯ ধারায় সরকার চাইলে দলটি নিষিদ্ধ করতে পারে। অ্যাটর্নি জেনারেল গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের শৈলকূপা শহরের নতুন বাজার এলাকায় শৈলকূপা বণিক সমিতির আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এদিকে গত কয়েকদিন যাবত জাতীয় নাগরিক পার্টি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধেও দাবিকে সমাবেশ, বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসুচী পালন করে আসছিল। সেই আন্দোলন চলমান রয়েছে। এই আন্দোলন ক্রমান্বয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। হাইওয়ে সড়কে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মানুণ হয়রানির শিকার হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও এবং জামঅয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ শাহবাগে অবরোধ কর্মসূচী পালক করছে। আওয়ামী লীগকে ‌‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে আজ শনিবার সারা দেশে গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ শুক্রবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এক অবরোধ কর্মসূচি থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
হাসনাত জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল ৩টায় শাহবাগ মোড়ে মূল গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। একই সময়ে সারা দেশেও জুলাইয়ের আন্দোলনের পয়েন্টগুলোতে গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই আন্দোলন ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে, এটা বাংলাদেশপন্থী জনতার লড়াই। ৫ আগস্ট জনগণ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন সেটাকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার সময় এসেছে। তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলগত বিচারের বিধান সংযুক্ত করা। ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ জারি করা।
অপরদিকে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আরও বলেন, গত ১৭ বছরে বাংলাদেশে ৭০০ মানুষকে খুন করা হয়েছে। সাড়ে চার হাজার মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। ১৭ বছরে ৬০ লাখ মানুষের নামে গায়েবি মামলা করা হয়েছে। এই যখন অবস্থা তখন সব কিছুই মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে গণ্য হবে। বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিচার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেই ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যতই ষড়যন্ত্র করুক, আস্ফালন করুক দেশের সংবিধান ও আইনের হাত অনেক লম্বা। আর তাদের বিচার করার জন্যই এখনও লক্ষ-কোটি জনতা রাজপথে আছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে গুম, হত্যা ও খুনের বিচার হবে।
তিনি জুলাই বিপ্লবকে স্মরণ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার করা না গেলে শহীদ মুগ্ধ ওয়াসিম ও শিশু আনাসের আত্মার সঙ্গে বেইমানি করা হবে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের বিচার করার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে সরকার। সেই আইনে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের খুনীদের বিচার করে বাংলাদেশকে কলঙ্ক মুক্ত করা হবে।
অন্যদিকে হাসনাত আরও জানান, আমাদের অবস্থানের ২৫ ঘণ্টা পার হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে। কর্মসূচিতে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রচর্চা করেনি। দলটি বিভিন্ন সময় গণহত্যার জন্য দলগতভাবে দায়ী। তাদের দলগত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, এই আন্দোলন কোনো দলের নয়, এটি ‘জুলাই’ নামক জনতার প্ল্যাটফর্ম থেকে পরিচালিত। ১৬ ডিসেম্বর, শাপলা চত্বর, পিলখানা, জুলাই ইত্যাদি ঘটনাগুলোর বিচার জনগণ চায়। জুলাই ঐক্য’র এবি জুবায়ের জানান, তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। রাত সাড়ে ১১টায় ইনকিলাব মঞ্চে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ বিষয়ে একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।