সংবাদ শিরোনাম ::
রামগতিতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভূয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদানের অভিযোগ

জহির,রামগতি (লক্ষ্মীপুর)
- আপডেট সময় : ০১:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সোনিয়া বেগম(৪৩) নামে এক নারী শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চর আলগী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মো জাকির হোসেন লিটন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভূয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদানের অভিযোগ করে। তিনি বলেন,আমার স্বামীর মৃত্যুর পর কৌশলে আমাকে বাদ রেখে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরির মাধ্যমে চেয়ারম্যান এর সহযোগিতায় সম্পত্তি দখলের পায়তারা করছে প্রথম স্ত্রী শাহিনুর বেগম ও তার ছয় সন্তান।
জানা যায়, উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর টগবী গ্রামের ব্রিক ফিল্ডের মালিক আবদুল ওহাব (৭০) মে মাসের ২ তারিখে মৃত্যু বরণ করে । তিনি পারিবারিক জীবনে দুটি বিয়ে করে। প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আবদুল ওহাব আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সবুজ গ্রামের মো. ইউসুফের মেয়ে সোনিয়া বেগমকে (৪৩) কে দ্বিতীয় বিয়ে করে। পাবিরাবিক ভাবে দ্বিতীয় স্ত্রীকে প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানরা সহ্য করতে না পারায় নোয়াখালীর মাইজদীতে একটি ভাড়া বাসায় রেখে আবদুল ওহাব নিয়মিত দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে যাতায়াত করতেন। দ্বিতীয় স্ত্রীসহ প্রথম স্ত্রীর আগের ঘরের সন্তানদের ভরণ পোষণ ও পড়ালেখার ব্যয় বহন করে আসছে।
আবদুল ওহাব মারা যাওয়ার পর প্রথম স্ত্রী শাহিনুর বেগম ও তার ৬ সন্তান-আব্দুল হান্নান, পারভেজ, বাবলু,লাভু,কহিনুর ও মনি সংঘবদ্ধ হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী ও অফিস সহকারী মো. খসরুর সহযোগীতায় ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে। সংবাদ সম্মেলনে বিয়ের কাবিননামা দেখিয়ে সোনিয়া বলেন ২০২০ সালে নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী নুরল আমিনের অফিসে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সবুজ গ্রামের মো. মফিজের ছেলে মোহাম্মদ হৃদয় এবং মাইজদী কোর্ট এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে আবুল কালাম। সোনিয়া বেগম বলেন, উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে আমি স্ত্রী হিসেবে সব ধরনের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে বাদ রেখে ওয়ারিশ সনদ প্রদানের বিষয়ে সরাসরি গিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরীকে অবহিত করি। তিনি আমার থেকে এবিষয়ে সমাধান করার জন্য দুইদিন সময় নিয়েছেন। যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ওয়ারিশ সনদ দিবেন বলে জানালেও পরবর্তীতে তালবাহানা শুরু করে। আমার স্বামীর রেখে যাওয়া সহায় সম্পদ ও অধিকার থেকে আমাকে কৌশলে বাদ রাখতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্বামী আবদুল ওহাবের প্রথম স্ত্রী ও তার ছয় সন্তান মিলে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহন করছে। যা দেশের ওয়ারিশ সম্পদ বন্টন নীতিমালার পরিপূর্ণ বিরোধী। আমি প্রকৃত ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করাসহ এবং স্ত্রী হিসেবে আমার সকল অধিকার পাওয়ার আশায় স্থানীয় প্রশাসন ও গন্যমান্যদের কাছে সু বিচার প্রত্যাশা করছি।
চরআলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী জানান, মৃত আবদুল ওহাবের ওয়ারিশদের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদেরকে সনদ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে শুনলাম তার দ্বিতীয় স্ত্রী রয়েছে। কাবিনামার ফটোকপি নিয়ে আমি নিজ উদ্যোগে নোয়াখালীর ওই কাজী অফিসে লোক পাঠিয়ে যোগাযোগ করি। উক্ত কাবিন নামাটি প্রাথমিক ভাবে সত্যতা মেলেনি। তিনি আরো বলেন, সোনিয়া বেগম যথাযথ কাগজপত্র প্রদর্শন করতে পারলে আমি আগের ওয়ারিশসনদটি বাতিল করে নতুন সনদ প্রদান করব।কাজী মো. নুরুল আমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উক্ত কাবিন নামাটির বিষয়ে চরআলগী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মো. খসরু নামের এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করে। তখন তাড়াহুড়া করে যথাযথ ভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তীতে যাচাই বাছাই করে সোনিয়া বেগম এবং আবদুল ওহাবের কাবিন নামা রেজিস্ট্রারে পাওয়া গেছে। উক্ত কাবিননামা সঠিক।