প্রচণ্ড গরমে কেশবপুরে তালশাঁসের কদর বেড়েছে কেশবপুরে তালের শাঁস বিক্রির ধুম

- আপডেট সময় : ০৩:৫৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ ১৭ বার পড়া হয়েছে
এখন চলছে মধু মাস। আর এই মধু মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু ফল। এই ফলের তালিকায় রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ছাড়াও অন্যতম আরেকটি ভিন্নধর্মী ফল তাল। তালের ভেতরের অংশ (বিচি ) খুবই সুস্বাদু। গ্রাম্য ভাষায় এটি তালের শাঁস নামে বেশি পরিচিত। প্রচণ্ড গরমে তালের এই শাঁসটি শহর কিংবা গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
বর্তমান সময়ে শহর থেকে শুরু করে গ্রামের বিভিন্ন অলি-গলি, পাড়া-মহল্লাতে এই মৌসুমি ফল তালের শাঁস বিক্রি বেড়ে গেছে। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তালগাছ থেকে অপরিপক্ব তাল ফল পাইকারি কিনে এনে কেটে কেটে বিভিন্ন দামে বিক্রি করে থাকে। তবে নরম অবস্থায় তাল শাঁসের দাম অনেক বেশি। কিন্তু, দিন যতই যেতে থাকে এই তাল শাঁস ততই শক্ত হতে থাকে। তখন শাঁসের দাম কমতে থাকে এবং এক সময় তাল পরিপক্ব হয়ে গেলে তখন আর এই শাঁস খাওয়া সম্ভব হয় না।
কেশবপুর উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ তালের শাঁস বিক্রি বেড়ে গেছে। মধু মাসের এ ফলকে কেউ বলে তালের শাঁস, কেউ বলে তালকুর, কেউ বলে তালের আটি আবার কেউ বলে তালের বিচি। গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে ভালের শাঁস অনেক উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অনেক গুণাগুণ। তাই জৈষ্ঠ্যের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল উঠলেও যশোরের কেশবপুর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তালের শাঁস। গ্রীষ্মের এই দিনে কেশবপুর বিভিন্ন হাটে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। তাই সবার হাতে শৌঁছে যায় কঁচি তালের শাঁস। সরেজমিন দেখা গেছে, তালের শাঁস বর্তমানে এর চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিক্রেতা শাঁস কেটে সারতে পারছে না, ক্রেতারা দাঁড়িয়ে রয়েছে শাঁস নিতে। জানা গেছে, এ উপজেলার গৃহস্থদের গাছের তাল ফলের চাহিদা শেষে পার্শ্ববর্তী উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। সব বয়সি লোকের মধ্যে এই তালের শাঁসের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। যশোর জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলায়ই তালগাছ রয়েছে।
উপজেলা প্রতাপপুর গ্রামের তাল শাঁস বিক্রেতা কুদ্দুস বলেন, প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালান। অন্য অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেরে এনে শাঁস বিক্রি কয়েন তিনি। তবে গাছে উঠে, বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে কষ্টকর। বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ।
প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ শাঁস বিক্রি করা যায়। প্রতিটি শাঁস ৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে তার প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয় ও এতে ৫-৬ শত টাকা লাভ হয়। সাংবাদিক আশরাফুজ্জামান বলেন, তালের শাঁস একটি সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে তালের শাঁস খেতে ভালোই লাগে, সেই সঙ্গে মনটা জুড়িয়ে যায়। ফলে এর কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে, কবির সে কবিতার মতো সারি সারি তালগাছ রাস্তার দুইধারে এমন দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। অনেকে বাড়ির পাশে কিংবা রাস্তার ধারে তালের বীজ বপন করত। কিন্তু এখন আর তা চোখে পড়ে না। তবে সরকারি উদ্যোগে কেশবপুর উপজেলা কোথাও কোথাও তালের বীজ বপন করা হয়েছে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে বলেও তিনি দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর বলেন, তাল শাঁস একে সুস্বাদু, অন্যদিকে কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায় তা দেহের পানিশূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের এ গরমে কেশবপুর হাট-বাজারে বেশ কদর বেড়েছে তাল শাঁসের।