মাহিদুরের বিরুদ্ধে রাতের অন্ধকারে দোকানের মালামাল থাকা গোয়ালঘরে আগুন দেয়ার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০৩:০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫ ৪১ বার পড়া হয়েছে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে এক আওয়ামী লীগের নেতা ও এনামুল হত্যা মামলার আসামীর বিরুদ্ধে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দোকানের আসবাবপত্র থাকা গোয়ালঘরে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২৫ মে) রাত ৩টার দিকে নাচোল সদর ইউনিয়নের খেসবা গ্রামের সহবুল হকের ছেলে আনারুল ইসলামের গোয়ালঘরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি দোকান মালিক আনারুল ইসলামের। এতে একটি বাছুর গরু, দোকানের বিভিন্ন মালামাল, আসবাবপত্র, ছাউনীর টিন আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভিযুক্ত আ.লীগ নেতা খেসবা গ্রামের রাইস উদ্দীনের ছেলে মাহিদুল ইসলাম৷
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ বছর ধরে নিজ বাড়ির সামনে মুদি দোকান দিয়ে জীবন ধারন করছিলেন আনারুল ইসলাম (৪৫)। ঝড়-বৃষ্টিতে খড়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় প্রায় দেড় মাস আগে ইট দিয়ে পাঁকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন তিনি৷ এসময় ঘর নির্মানে বাঁধা দেন আনারুলের আপন চাচা মাহিদুল ইসলাম। এনিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান, থানা ও এসিল্যান্ড অফিসে অভিযোগ দেন মাহিদুল ইসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় এই আগুন দেয়ার ঘটনা বলে অভিযোগ দোকান মালিক আনারুল ইসলামের। তবে দায় চাপানোর উদ্দেশ্যেই এমন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে দাবি মাহিদুল ইসলামের। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক আনারুল ইসলাম বলেন, পূর্বের খড়ের দোকানের জায়গায় ইটের ঘর নির্মাণ করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান, থানা ও এসিল্যান্ড অফিসে অভিযোগ দেয় মাহিদুল ইসলাম। এসব জায়গায় অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় রাতের অন্ধকারে দোকানের মালামাল থাকা গোয়ালঘরে আগুন দেয়া হয়। মাহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় এলাকায় তার ব্যাপক দাপট রয়েছে। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনি গত ১৭ বছরে। এখনও তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।
দোকান মালিক আনারুল ইসলামের ভাই মনিরুল ইসলাম জানান, নাচোল উপজেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেত্রী জান্নাতুন নাইম মুন্নীর ঘনিষ্ঠ সহচর ও লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান মাহিদুল ইসলাম। আ.লীগের প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল, টেন্ডার বানিজ্য, সরকারি প্রকল্প হরিলুট করেছ মাহিদুল। এখনও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। আমার ভাই নিজের জায়গায় বাড়ির সামনে দোকানঘর নির্মাণ করছে, তাতেও সে বাধা দিচ্ছে। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়েও দিয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে এনিয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়। তবে আগুন দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন মাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, আমার জমির ভেতরে এতে ইট দিয়ে পাঁকা ঘর নির্মাণ করছে ভাতিজা আনারুল ইসলাম। খড়ের দোকানের জায়গা বাদ দিয়ে আমার দিকে চেপে আমার জায়গা দখল করতে পাঁকা ঘর নির্মাণ করতে গেলে আমি বাধা দেয়। বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধর ও হুমকি দেয়। পরে নিয়ে নাচোল থানায় জিডি করেছি। জোরপূর্বক তারা দোকানঘর করতে চাই। আগুন দেয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা বানোয়াট বলেও জানান তিনি। নাচোল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আনারুল ইসলাম বাড়ির সামনের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে মাটি ও খড়ের দোকানঘর চালিয়ে জীবন ধারন করে আসছে। এখন সেখানে সে ইট দিয়ে সেখানে পাঁকা ঘর নির্মাণ করছে। এতে বাধা দিচ্ছে তার চাচা মাহিদুল ইসলাম। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, রাতে গোয়ালঘরে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এনিয়ে তদন্তকাজ চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।