ঢাকা ০৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ঠাকুরগাঁওয়ে জুলাই বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে জুলাইয়ের মায়েদের গল্প শোনা ও সংবর্ধনা প্রদান Logo টাঙ্গাইলে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির ঘটনায় ৪ বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫ Logo সরিষাবাড়ী সাতপোয়া আল-বূশরা সামাজিক গোরস্তানের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন Logo শ্রমিকবান্ধব দেশগঠনে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে গণ জোয়ার সৃষ্টি করতে হবে Logo তিতাসে জুলাই বিপ্লবের বিজয় মিছিল উপলক্ষে বিএনপির প্রস্ততি সভা Logo গোবিন্দগঞ্জে এক যুবকের মরদে’হ উদ্ধার Logo মালখানগর রথবাড়ি তালতলা রাস্তার বেহাল দশা, জনগণের চরম ভোগান্তি Logo কোম্পানীগঞ্জে বাসাপ’র বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি Logo হোমনা-মেঘনা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-২ আসন বহাল রাখার দাবিতে বিএনপির সাংবাদ সম্মেলন Logo কেশবপুরে বিএনপির উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শেরপুরের সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, শেরপুর
  • আপডেট সময় : ৫৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। গত রোববার দুপুরে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নুর আমিন (৩৮) তিনি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকার নুর ইসলামের ছেলে।
নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত জলিলের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা মাসিক দশ শতাংশ হারে সুদে নেয় ব্যবসায়ী নূর আমিন। সুদের টাকা কয়েকমাস নিয়মিত দিয়েছেনও তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হয়ে পরায় কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। এসময় মারধরের অভিযোগ তোলে কোর্টে মামলা করেন জলিল। এছাড়াও এক মাসের কথা বলে টাকা ফেরত না দিয়ে ছয় বছর হয়ে যাওয়ায় এলাকায় কয়েক দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিচার সালিশ করেও সুরাহা হয়নি। এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটক করে রাখে জলিল। গত এক বছর যাবত মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে।মোটরসাইকেলটি আটক করে রাখার পর নুর আলম শ্রীবরদী থানা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা চলছিলো বেশ কয়েকদিন যাবত। এর জের ধরে টাকা আদায়ের জন্য বাজার থেকে নূর আলমকে ধরে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, সুদের টাকা বাকি পরার কারণে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটক করে রেখেছে অনেক দিন হয়। পরবর্তীতে জলিল বলেছে আমার টাকা পয়সাতে আর কোন দাবি নাই।
এ বিষয়ে জলিল মিয়া জানান, আমি টাকা পাই টাকার পরিবর্তে মোটরসাইকেল নিয়েছি। তার কাছে আমার আর কোন দাবি নেই। এছাড়াও সে আমার বিরুদ্ধে কোর্টেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেই মামলা কোর্টে পরিচালনা করছি। আজ আমাকে লংগরপাড়া বাজার থেকে ৬-৭ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়িতে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। উল্টো বলেতেছে আমি নাকি গরু চোর। এভাবে তারা আমার মান সম্মান নষ্ট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
স্থানীয় খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন,আমি ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি নূর আমিন বাধা অবস্থায় আছে এবং বাড়িতে প্রায় শতাধিক মানুষ ভিড় করেছে। আমি তাদেরকে বলি এভাবে মানুষ আটকে রাখা যাবে না। পরে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুই পক্ষকে সম্মত করি। তবে বেঁধে রাখার বিষয়টা নিয়ে আমরা সামাজিকভাবে জলিলকে তিরস্কার করেছি।
অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আমি তার কাছে অনেকদিন যাবৎ টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোন মারধর করি নাই। আমি নিয়ে আসার পরে তাকে বাড়িতে স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম।তাকে যখন আটকাতে পারতেছি না তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ এসে আমাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দেই।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। তাদের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেরপুরের সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন

আপডেট সময় :

 

শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। গত রোববার দুপুরে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নুর আমিন (৩৮) তিনি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকার নুর ইসলামের ছেলে।
নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত জলিলের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা মাসিক দশ শতাংশ হারে সুদে নেয় ব্যবসায়ী নূর আমিন। সুদের টাকা কয়েকমাস নিয়মিত দিয়েছেনও তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হয়ে পরায় কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। এসময় মারধরের অভিযোগ তোলে কোর্টে মামলা করেন জলিল। এছাড়াও এক মাসের কথা বলে টাকা ফেরত না দিয়ে ছয় বছর হয়ে যাওয়ায় এলাকায় কয়েক দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিচার সালিশ করেও সুরাহা হয়নি। এক পর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটক করে রাখে জলিল। গত এক বছর যাবত মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে।মোটরসাইকেলটি আটক করে রাখার পর নুর আলম শ্রীবরদী থানা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা চলছিলো বেশ কয়েকদিন যাবত। এর জের ধরে টাকা আদায়ের জন্য বাজার থেকে নূর আলমকে ধরে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, সুদের টাকা বাকি পরার কারণে আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আটক করে রেখেছে অনেক দিন হয়। পরবর্তীতে জলিল বলেছে আমার টাকা পয়সাতে আর কোন দাবি নাই।
এ বিষয়ে জলিল মিয়া জানান, আমি টাকা পাই টাকার পরিবর্তে মোটরসাইকেল নিয়েছি। তার কাছে আমার আর কোন দাবি নেই। এছাড়াও সে আমার বিরুদ্ধে কোর্টেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সেই মামলা কোর্টে পরিচালনা করছি। আজ আমাকে লংগরপাড়া বাজার থেকে ৬-৭ জন সন্ত্রাসী দিয়ে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়িতে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। উল্টো বলেতেছে আমি নাকি গরু চোর। এভাবে তারা আমার মান সম্মান নষ্ট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
স্থানীয় খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন,আমি ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি নূর আমিন বাধা অবস্থায় আছে এবং বাড়িতে প্রায় শতাধিক মানুষ ভিড় করেছে। আমি তাদেরকে বলি এভাবে মানুষ আটকে রাখা যাবে না। পরে আমি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুই পক্ষকে সম্মত করি। তবে বেঁধে রাখার বিষয়টা নিয়ে আমরা সামাজিকভাবে জলিলকে তিরস্কার করেছি।
অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আমি তার কাছে অনেকদিন যাবৎ টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোন মারধর করি নাই। আমি নিয়ে আসার পরে তাকে বাড়িতে স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম।তাকে যখন আটকাতে পারতেছি না তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ এসে আমাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দেই।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। তাদের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।