ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-০১ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন যারা

- আপডেট সময় : ১২:৪২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাগুরার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতির মাঠে বেশ সরব হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সংসদীয় দুটি আসনেই নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।
নীতি নির্ধারনী মহল এবং সম্ভাব্য নির্বাচনী বোর্ডের নজর কাড়তে একক উদ্যোগ সহ দলীয় কর্মী সমর্থকদের মধ্যে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন উভয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও নতুন নিবন্ধন পাওয়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি।
মাগুরা-০১ আসন : মাগুরা পৌরসভা, সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন এবং শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে সংসদীয় এ আসনটি গঠিত। বিগত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে বিএনপি প্রার্থী মেজর জেনারেল মজিদ উল হক ৩ বার (৭৯, ৯১ এবং ৯৬’র ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি) এবং জাতীয় পার্টি প্রার্থী মেজর জেনারেল এমএ মতিন ২ বার (৮৬ এবং ৮৮) এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। বাকি ৭টি নির্বাচনে বিজয়ী হয় আওয়ামীলীগ।
এরমধ্যে ৭৩ এর প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী সোহরাব হোসেন এবং ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পরপর ৪বার নির্বাচিত হন আন্তর্জাতিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল আকবর। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী হন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পান মাগুরা জেলা বিএনপির বর্তমান সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান। কিন্তু নির্বাচনের আগেই নাশকতার মামলায় তাকে কারা অন্তরিণ রেখে নির্বাচিত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর।
আগামী সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কারা নির্যাতিত বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন খান। বরাবরের মতোই দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহায়তা প্রদান এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি নিজের জনসমর্থন বাড়ানোর চেষ্টায় ছুটে বেড়াচ্ছেন। বিশেষ করে ২৪’র জুলাই আগস্ট আন্দোলনে মাগুরায় নিহত এবং আহতদের পরিবারকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক ও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। নিজের স্বচ্ছতা, পরিচ্ছন্ন ইমেজের কারণে আগামী নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মনোয়ার হোসেন খান।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক আলি আহমেদও এ আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে দলের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি নেতা-কর্মী সমর্থকদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে মাগুরার রাজনৈতিক অঙ্গণে আরো বেশকিছু নতুন মুখের পদাচারণা দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মেজর জেনারেল এম মজিদ-উল হকের মেয়ে ডাক্তার সিমিন আকতার অনজু। তিনবার বাবার দখলে থাকা আসনটিতে মনোনয়ন পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রাভা হেল্থ এর চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিমিন। এছাড়াও সাবেক মন্ত্রী এম মজিদ উল হকের সহকারী একান্ত সচিব শামসুল আলম, শ্রীপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বদরুল আলম হিরো দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। তবে মনোনয়ন যিনিই পান দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন বলেও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মতামত দিয়েছেন।
মাগুরা জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান বলেন, সব সময় দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে গেছি। এটি আমার পরিচয়। বিগত নির্বাচনে আমাকে হারাতে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সকল শক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে জেলে আটকে রেখেও তাদের আশঙ্কা ছিল আমি জিতে যাবো। বিধায় রাতে ভোট কেটে নেওয়ার পরও দিনে বিএনপির ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেয়নি। মনোনয়ন পেলে সকল শ্রেণির মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে অতিতের জবাব দেবে নিশ্চিত।
অন্যদিকে নিজের মনোনয়ন পাবার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে জেলা বিএনপির আহবায়ক আলি আহমেদ বলেন, সব কিছুই নির্ভর করছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং নির্বাচনী বোর্ডের উপর। দলের পক্ষ থেকে মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সকলেই ঐক্যবদ্ধ থাকবো।
এদিকে ৫ আগস্ট বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা অভ্যন্তরিণ কোন্দল, গ্রুপিং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কথিত নানা অপকর্ম সহ নানা বিরোধে জড়িয়ে পড়লেও মাগুরায় জামায়াতে ইসলামী বেশ সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আমির ড. শফিককে নিয়ে মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে বিশাল জনসমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের নজর কাড়তে সমর্থ হয়েছে দলটি।
এ আসনে মাগুরা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আব্দুল মতিনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দলীয় প্রার্থির বিজয়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের সাংগঠিক ভিত মজবুত এবং দলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামী অমুসলিম শাখা গঠন করে সংখ্যালঘু শ্রেণি এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোটারদের সমর্থন পেতেও সংগঠনটির বিভিন্ন কর্মসূচি সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছে।
এ আসনে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান বেশ সুদৃঢ়। বিগত বছরগুলোতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী দিয়ে বিজয় লাভের মধ্যে দিয়ে নিজেদের সেই অবস্থানের জানান দিয়েছে দলটি। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাগুরা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা নাজিরুল ইসলাম প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়াও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন এবং গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডক্টর মিজানুর রহমান এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন এবং দলীয় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোন্দল বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।