মানবতার ফেরিওয়ালা কুষ্টিয়ার কাজী সোহান শরীফ

- আপডেট সময় : ৩৭ বার পড়া হয়েছে
মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে সর্বমহলে প্রসংশা কুড়িয়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন কাজী সোহান শরীফ।
তিনি প্রায় ২ যুগ ধরে কারো কোন সহযোগিতা ছাড়াই নিজের প্রচেষ্টায় পথে পথে ঘুরে প্রতিবন্ধী, পথশিশু, গরীব অসহায় ও নিন্ম শ্রেণীর মানুষের মাঝে বই, খাবার স্যালাইন ও শিশু খাদ্যসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করে যাচ্ছেন।
কাজী সোহান শরীফ, অন্ধদের জন্য তৈরী করেছেন আল্টা সেন্সর চশমা ও লাঠি, যা চোখে দিয়ে একজন অন্ধ অনেকটা দূর্ঘটনা এড়িয়ে পথ চলতে পারেন। প্রতিবন্ধীদের ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের এগিয়ে নিতে নি:স্বার্থভাবেই কাজ করা এই কাজী সোহান শরীফ পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের পরম বন্ধু হয়ে উঠেছেন।
কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার কালিবাড়ি এলাকার মৃত আব্দুল হামিদ ও সুফিয়া খাতুন এর পুত্র কাজী সোহান শরীফ, তার শৈশব বেড়ে উঠেছে এ এলাকায়, লেখাপড়া করেছেন খোকসা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাইলট হাই স্কুলে। জীবিকার তাগিদে চলে যান কুষ্টিয়া শহরে। সেখানে এখন থানাপাড়ার গোলাম রহমান রোডের বাসিন্দা তিনি। ছোট বেলায় পারিবারিক কষ্টের কারণে অনেকটা অবহেলায় বড় হয়েছেন। সেই থেকেই তার অসহায় ও পথশিশুদের পাশে থাকার চেতনা তৈরী হয়। বীমা কোম্পানিতে ১৮ বছর চাকরি করেন তিনি। পরে চাকরি ছেড়ে পেশা হিসেবে প্রতিবন্ধী ও পঙ্গুদের সার্জিক্যাল পন্য তৈরীর কাজ বেছে নেন। এসবের পাশাপাশি গত ২২ বছর ধরে তিনি পথে পথে ঘুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে স্বর বর্ণের বই ও স্যালাইন বিতরণ করে আসছেন। পথশিশুদের অক্ষর জ্ঞান দিতে ও ডায়রিয়া থেকে বাচাঁতে তিনি বিনামূল্যে বই ও স্যালাইন বিতরণ করে চলেছেন। প্রতি বছরের শুরুতেই ব্যাগ ভর্তি নতুন স্বর বর্ণের বই নিয়ে পথশিশুদের মাঝে হাজির হন কাজী সোহান শরীফ । আর শীত কিংবা গরম বছর জুড়েই চলে তার খাবার স্যালাইন বিতরণ। অন্যদিকে বাবর আলী গেইটে নিজের দোকানে বসে প্রতিবন্ধী ও পঙ্গুদের জন্য হুইল চেয়ার বানানো, কৃত্তিম হাত পা সহ বিভিন্ন কাজ করেন। এখানেও তিনি গরীব অসহায়দের জন্য কোন লভ্যাংশ ছাড়াই কাজ করে দেন। এছাড়াও রেল স্টেশন পরিস্কার, খাবার পানির ব্যবস্থা করা ও কাপড় বিতরনের কাজও তিনি করে থাকেন । পথশিুশু ও অসহায়দের পাশে সোহান এক অনন্য দৃষ্টান্ত। শুধু তাই নয়, কাজী সোহান শরীফ একজন উদার মনের মানবিক মানুষ। তিনি মানুষের বিপদে আপদে বন্ধু হিসেবে সব সময় পাশেই থেকেছেন। পরোপকারী মনোভাবের মানুষ তিনি, সর্বমহলে তিনি প্রসংশার দাবিদার।
ডা: নওয়াব আলী বলেন, কাজী সোহান শরীফ গরিব অসহায় ও পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টার পর সে
অন্ধদের জন্য তৈরী করেছেন আল্টা সেন্সর চশমা। যা পরে একজন অন্ধ দূর্ঘটনা এড়িয়ে বেশ ভালবাবেই পথ চলতে পারেন। চশমা চোখে পরে চলাচলের সময় কাছাকাছি সামনে কোন বস্তু, দেয়াল, খুটি, গাড়ীঘোড়া কিংবা মানুষ থাকলেই চশমা সংকেত দেবে। রাতেও এই আল্টা সেন্সর চশমা কাজ করে। ইউটিউব দেখে ও নিজের বুদ্ধিতে তিন মাসের চেস্টায় স্বল্প খরচে এই চশমা তৈরী করেছেন সোহান।
চর থানাপাড়ার শারমিন বলেন, আমরা শিশুদের নানান রকম সেবা নিয়ে থাকি তার কাছ থেকে। আমরা চাই সে আরো এগিয়ে যাক। গরম পড়লেই শিশুদের স্যালাইন ও স্বর বর্ণের বই দিয়ে থাকে সেই সাথে সেমাই চিনি কম্বল দেন এলাকার অসহায় মানুষদের।
কাজী সোহান শরীফ বলেন, কোন রকম কারো সহযোগিতা ছাড়া শিশুদের নিয়ে কাজ করি সরকারী কোন সহযোগিতা পায়না তার পরেও কাজ করে যায় এই প্রযুক্তির আধুনিকায়ন করে বানিজ্যিকভাবে চশমা তৈরীর জন্য সরকার বা কোন সংস্থার কাছে অনুরোধ করছি।
সচেতন মহল বলেন,
সোহানের মত করে না হলেও যার যার স্থান থেকে সবাই প্রতিবন্ধী ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পাশে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিলেই দেশ আরো এগিয়ে যাবে।