পাট ও পাটকাঠির দাম দ্বিগুনেরও বেশি, রাজবাড়ীর পাটকাঠি যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

- আপডেট সময় : ৫১ বার পড়া হয়েছে
রাজবাড়ীতে এবছর পাটের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি পাটকাঠিরও ফলন ভালো হয়েছে। গতবারের চাইতে এবছর পাটকাঠির দাম দ্বিগুনেরও বেশি হওয়ায় পাট আবাদের সব খরচ পাটকাঠি বিক্রি থেকেই উঠে এসেছে।বিঘা প্রতি দশ হাজার টাকার পাটকাঠি বিক্রি করতে পারছেন রাজবাড়ীর কৃষক।বিভন্ন জেলা থেকে চড়া দামে পাটকাঠি কিনে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজবাড়ী জেলাটি কৃষি নির্ভর জেলা ।এ জেলায় পাটের ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে।জেলার সদর উপজেলা ,বালিয়াকান্দি,গোয়ালন্দ ও পাংশা উপজেলার সব খানেই এবছর লক্ষমাত্রার চাইতে বেশি পাট উৎপাদন হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হওয়ায় পাটকাঠির ভালো ফলন হয়েছে।এবছর বপনের শুরুতে বৃষ্টির পানি পাওয়ায় পাটের উৎপাদনের সাথে পাটকাঠির আকারও বড় হয়েছে।এতে গত বছরের চাইতে এবছর পাটকাঠির বাজার দর দ্বিগুনেরও বেশি পাচ্ছেন চাষিরা।হার্ডবোর্ড,পিসবোর্ড ও চারকোল ফ্যাক্টরী সহ বিভিন্ন পাটকাঠির কোম্পানি রাজবাড়ী থেকে পাটকাঠি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।জেলার সদরের জৌকুরা, ধাওয়াপাড়া,কালুখালীর রতনদিয়া সহ নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে ট্রাক ও ট্রলারে বোঝাই করে পাটকাঠি নিয়ে যাচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহীয়, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, চাপাইনবাবগঞ্জ, চট্রগ্রাম ও নারায়নগঞ্জ জেলায় যাচ্ছে রাজবাড়ীর পাটকাঠি। বর্তমানে একশত আটি পাটকাঠি এক হাজার থেকে দের হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। আর এক হাজার পাটকাঠি দশ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।বিঘা প্রতি পাট আবাদ ও উৎপাদনে যা খরচ হচ্ছে তার পুরোটাই পাটকাঠি থেকে উঠে আসছে।পাটকাঠি বিক্রি করে বাড়তি একটা আয় পাওয়া যাচ্ছে।কৃষকরা পাট আবাদ করে গতবারের চাইতে পাট বিক্রি করে যেমনি দ্বিগুন দাম পাচ্ছেন তেমনি পাটকাঠি থেকেও দ্বিগুন দাম পাচ্ছেন। বাজার দর ভালো হওয়ায় চাষিরা পাটকাঠির যত্ন করে রাস্তার পাশে শুকিয়ে নিচ্ছেন।চাহিদা থাকায় শুকনো ভেজা সব পাটকাঠিই বিক্রি হচ্ছে।রাজবাড়ীতে এবছর ৪৭ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে।
গত বছরের চাইতে ১ হাজার ৪ শত হেক্টর বেশি জমিতে পাট আবাদ হয়েছে।আর এ ৪৭ হাজার ৫ শত হেক্টর জমির পাট থেকে প্রায় ৩০ কোটি আটি পাটকাঠি উৎপাদন হয়েছে।
কালুখালী উপজেলার পদ্মানদী সংলগ্ন রতনদিয়া ইউনিয়নের গঙ্গানন্দপুর গ্রামের পাটচাষি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এবছর পাটের আবাদ করে বাজার দর ভালো পেয়েছেন, পাশাপাশি পাটকাঠি বিক্রি করে ভালো লাভবান হয়েছেন।
গতবারের চাইতে বাজার দর দ্বিগুন হওয়ায় পাট আবাদ ও উৎপাদন খরচ পাটকাঠি থেকেই উঠে যাচ্ছে।বিঘা প্রতি দশ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যাচ্ছে।আলমগীর হোসেনের মতো আরো পাট চাষিরা এবছর পাট আবাদ করে গত বারের চাইতে দ্বিগুন অর্থ পেয়েছেন বলে জানান। আগামী বছর তারা আরো পাটের আবাদ বাড়ানোর কথা বলেন।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপ- পরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন,বাই প্রডাক্ট হিসেবে পাটকাঠির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এ পাটকাঠি বিক্রি করে লাভজনক হচ্ছেন চাষিরা।এ থেকে পাট চাষের খরচও উঠে যাচ্ছে।চাহিদা থাকায় বিভিন্ন চারকোল সহ কল, বোর্ড কোম্পানি ও পানের বরজে ব্যবহৃত চাষিরা পাটকাঠি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।কৃষক পাট চাষে উৎসাহ বোধ করায় আগামীতে আরো বেশি পাট উৎপাদনে এগিয়ে আসবে।