তালতলীতে আওয়ামী, বিএনপি ও নিরীহ মানুষ সহ ১০১ জনের নামে মামলা

- আপডেট সময় : ১২ বার পড়া হয়েছে
২০২৩ সালে বিএনপির ইফতার পার্টিতে হামলা ও অফিস ভাংচুরের অভিযোগে বরগুনার তালতলী ও আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, বিএনপি কর্মী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সহ সাধারণ মানুষের নামে মামলা করেছে তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. ছগির হাওলাদার। তিনি তালতলী বন্দর এলাকার বাসিন্দা আ. খবির হাওলাদারের ছেলে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল (শনিবার) বিকেলে তালতলী ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে ইফতার পার্টির আয়োজন করে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা। বিকেল ৫ টা নাগাদ বিএনপির আলোচনা সভা চলাকালে আওয়ামী এবং ছাত্রলীগের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীরা বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত ইফতার পার্টিতে অনুপ্রবেশ করে হামলা ও চেয়ার ভাংচুর চালায়। তৎকালীন সময়ে বিএনপি এবং সাধারণ মানুষ সম্মিলিত হয়ে আওয়ামী এবং ছাত্রলীগের কর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে পিটিয়ে বিতাড়িত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই ২০২৫) আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. ছগির হাওলাদার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়।
বিএনপি নেতা মো. ছগির হাওলাদার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্তত ২০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে মামলায় আসামি করেছেন। অভিযোগকারীরা বলছেন, জমি দখল, মামলা বাণিজ্য এবং নিরীহ মানুষকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতা-কর্মী, রাখাইন এবং নিরীহ মানুষকে নামে-বেনামে আসামি করেছে।
দায়ের কৃত রাজনৈতিক মামলার আসামিদের তালিকায় রয়েছে শারিকখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. নিজাম আকন , তার ভাই যুবদল নেতা বেল্লাল আকন, বড়বগী ইউনিয়নের যুবদল নেতা হাবিব, শ্রমিক দল নেতা হারুন চৌকিদার, রাখাইন সম্প্রদায়ের মংনানসে, মংনান্ট এবং থুইমং সুঁই তালুকদার সহ আরও অনেকে।
রাখাইন মংনানসে মংনান্ট বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নাই এবং কখনও ছিলাম না। বাদীর সাথে ২০১৫ সাল থেকে জমি নিয়ে বিরোধের জন্য হয়রানি মূলক মামলা দিয়েছে। মামলায় বর্ণিত ১৪ নং আসামি বাদশা বলেন, আমার সাথে বহু বছর ধরে মো. ছগির হাওলাদারের সাথে জমিজমা বিরোধ রয়েছে, আদালতে এখনও মামলা চলমান। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। প্রশাসনকে অনুরোধ করব ভিডিও ফুটেজ দেখে সুষ্ঠ তদন্ত করার জন্য।
পঁচাকোড়ালীয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং তালতলী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, হামলা চলাকালে আমি সহ অনেক নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। হামলার সাথে আমি সম্পৃক্ত না। আমাদেরকে হয়রানি মূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। তৎকালীন সময়ের ভিডিও ফুটেজ আছে। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি ভিডিও ফুটেজ দেখে সুষ্ঠ তদন্ত করার জন্য।
বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, আদালতের আদেশ পেয়েছি। মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।