ঢাকা ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আসন্ন নির্বাচন সহজ হবে না, সতর্ক থাকতে বললেন তারেক রহমান Logo নুরাল পাগলের ভক্ত রাসেল হত্যায় ৪ হাজার আসামীর বিরুদ্ধে মামলা- গ্রেফতার ২ Logo ত্রিশালে মোটরসাইকেল চাপায় নারী নিহত Logo চাঁদপুরে কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় পালিয়ে গেল ডাকাত দল, দেশীয় অস্ত্র জব্দ Logo পীরগঞ্জে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত Logo নরসিংদীতে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ Logo কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট Logo নাটোরে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় Logo উখিয়ায় বিজিবির অভিযানে ১ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবা পিস উদ্ধার Logo টেকনাফে বিজিবি অভিযানে ২ কিশোর উদ্ধার ও ১ মানব পাচারকারী আটক

আসন্ন নির্বাচন সহজ হবে না, সতর্ক থাকতে বললেন তারেক রহমান

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৮৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন যে, আসন্ন নির্বাচনকে সহজভাবে নিলে ভুল হবে। তিনি বলেন, “আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, আমরা যত সহজ ভাবছি তত সহজ নয় ব্যাপারটি।” লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সোমবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “ আমাদের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য বছরের পর বছর রাজপথে নেমে এসেছিল। বিভিন্ন কিছু তারা মোকাবিলা করে জনগণের আন্দোলনকে সফল করেছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত জনগণের সামনে তুলে ধরবে এবং জনগণই তাদের পছন্দমতো নেতৃত্ব বেছে নেবে। তারেক রহমান আরও যোগ করেন যে, “আজকে যদি আমরা জনগণকে বাইরে রেখে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকি, তাহলে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা দেশ ও জনগণের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়।”
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি প্রায় আড়াই বছর আগে ৩১ দফার মাধ্যমে জনগণের কাছে তাদের ভিশন তুলে ধরেছে। তিনি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কমিটির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রায় সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করেছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “সেখানে যে বিষয়গুলোতে আমরা একমত হতে পারিনি, আসুন জনগণের উপর যদি বিশ্বাস রাখেন, জনগণের উপর যদি আস্থা রাখেন, তাহলে জনগণের উপর ছেড়ে দিন।” তিনি বলেন, “দিনশেষে রাজনীতিতে আমাদের আস্থা, আমাদের বিশ্বাস বাংলাদেশের জনগণ।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বর্তমানে আল¬াহর রহমতে বিএনপি বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল।” তিনি এর জন্য দেশের মানুষ এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা প্রত্যেকে এক একজন পোড়খাওয়া রাজনৈতিক কর্মী। নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন কোথাও হয়তো কেউ কোনো কিছু করার চেষ্টা করছে। যার মাধ্যমে জনগণের সেই প্রস্তাবিত গণতান্ত্রিক যে যাত্রা সেই যাত্রা ব্যাহত হতে পারে।” তিনি সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের উপর দায়িত্ব যে গণতন্ত্রের প্রতি যে কোনো হুমকিতে আমরা মোকাবেলা করব।”
সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা যখন দীর্ঘ ১৫ বছর মরণপণ সংগ্রাম করে লড়াই করে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ পেয়েছি… এর মধ্যে আমাদের প্রায় দুই হাজার তরুণ কিশোর নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। আমাদের প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে।” তিনি বলেন, “আজকে যখন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অন্তবর্তী সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন করার, ঠিক তখনই বাংলাদেশের সেই শত্রুরা যারা বারবার বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে… সেই চক্রান্তকারীরা আবার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করবার ষড়যন্ত্র করছে।”
তিনি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেছেন যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, ড. ইউনুস বলেছেন “একমাত্র আল¬াহ তাআলা ছাড়া আর কোনো শক্তি নাই এখান থেকে(অনুষ্ঠিত নির্বাচন থেকে) তাকে সরাতে পারে।” মির্জা ফখরুল অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “যারা আজকে ভুল করছেন এই চিন্তা করে যে তারা বিঘ্ন করলে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে তারা উপকৃত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে না।” তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, “আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি, আপনারা সব সময় সতর্ক থাকবেন।”
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিনকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্ধিতা ছিল না। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জেলার ৫ উপজেলা ও ৩ পৌরসভার মোট ৮০৮ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেন। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলামসহ জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূর করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আসন্ন নির্বাচন সহজ হবে না, সতর্ক থাকতে বললেন তারেক রহমান

আপডেট সময় :

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন যে, আসন্ন নির্বাচনকে সহজভাবে নিলে ভুল হবে। তিনি বলেন, “আমি এক বছর আগে বলেছিলাম, আমরা যত সহজ ভাবছি তত সহজ নয় ব্যাপারটি।” লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সোমবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “ আমাদের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য বছরের পর বছর রাজপথে নেমে এসেছিল। বিভিন্ন কিছু তারা মোকাবিলা করে জনগণের আন্দোলনকে সফল করেছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত জনগণের সামনে তুলে ধরবে এবং জনগণই তাদের পছন্দমতো নেতৃত্ব বেছে নেবে। তারেক রহমান আরও যোগ করেন যে, “আজকে যদি আমরা জনগণকে বাইরে রেখে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকি, তাহলে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা দেশ ও জনগণের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়।”
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি প্রায় আড়াই বছর আগে ৩১ দফার মাধ্যমে জনগণের কাছে তাদের ভিশন তুলে ধরেছে। তিনি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কমিটির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রায় সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করেছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “সেখানে যে বিষয়গুলোতে আমরা একমত হতে পারিনি, আসুন জনগণের উপর যদি বিশ্বাস রাখেন, জনগণের উপর যদি আস্থা রাখেন, তাহলে জনগণের উপর ছেড়ে দিন।” তিনি বলেন, “দিনশেষে রাজনীতিতে আমাদের আস্থা, আমাদের বিশ্বাস বাংলাদেশের জনগণ।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বর্তমানে আল¬াহর রহমতে বিএনপি বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল।” তিনি এর জন্য দেশের মানুষ এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা প্রত্যেকে এক একজন পোড়খাওয়া রাজনৈতিক কর্মী। নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন কোথাও হয়তো কেউ কোনো কিছু করার চেষ্টা করছে। যার মাধ্যমে জনগণের সেই প্রস্তাবিত গণতান্ত্রিক যে যাত্রা সেই যাত্রা ব্যাহত হতে পারে।” তিনি সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের উপর দায়িত্ব যে গণতন্ত্রের প্রতি যে কোনো হুমকিতে আমরা মোকাবেলা করব।”
সম্মেলনে উদ্বোধকের বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা যখন দীর্ঘ ১৫ বছর মরণপণ সংগ্রাম করে লড়াই করে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ পেয়েছি… এর মধ্যে আমাদের প্রায় দুই হাজার তরুণ কিশোর নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। আমাদের প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে।” তিনি বলেন, “আজকে যখন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অন্তবর্তী সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন করার, ঠিক তখনই বাংলাদেশের সেই শত্রুরা যারা বারবার বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে… সেই চক্রান্তকারীরা আবার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করবার ষড়যন্ত্র করছে।”
তিনি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেছেন যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, ড. ইউনুস বলেছেন “একমাত্র আল¬াহ তাআলা ছাড়া আর কোনো শক্তি নাই এখান থেকে(অনুষ্ঠিত নির্বাচন থেকে) তাকে সরাতে পারে।” মির্জা ফখরুল অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করে বলেন, “যারা আজকে ভুল করছেন এই চিন্তা করে যে তারা বিঘ্ন করলে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে তারা উপকৃত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হবে না।” তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, “আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি, আপনারা সব সময় সতর্ক থাকবেন।”
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিনকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। সভাপতি পদে কোনো প্রতিদ্বন্ধিতা ছিল না। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জেলার ৫ উপজেলা ও ৩ পৌরসভার মোট ৮০৮ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেন। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলামসহ জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূর করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।