ঢাকা ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালিগঞ্জে নিরাপদ সড়ক দিবসে র‍্যালি ও আলোচনা সভা Logo মোংলায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন Logo কক্সবাজারে পর্যটক নিরাপত্তায় রিজিয়ন ট্যুরিস্ট পুলিশের এডিআইজি আপেল মাহমুদ Logo সিরাজদিখানে গ্রাম পুলিশের মাঝে পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ Logo কালিগঞ্জে মাংসের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত Logo পলাশবাড়ী পৌরসভার বহুমুখী উন্নয়নে কাস্টার ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান শীর্ষক দিনব্যাপি কর্মশালা Logo টেকনাফে পাহাড়ের পর সাগর পথে পাচার কালে ২৯ জন ভুক্তভোগী সহ মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য আটক Logo তিতাসে বিএনপির লিপলেট বিতরণ Logo গোমস্তাপুরে জোরপূর্বক ধানীজমি দখলের চেষ্টা Logo কিশোরগঞ্জে রেলের গাছ কেটে বিক্রি করলেন কর্মচারীরা

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১৩১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন থানা ও পুলিশের অন্যান্য স্থাপনা থেকে লুট হওয়া বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গুলি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বেশিরভাগ অস্ত্র উদ্ধার করলেও বাইরে রয়ে গেছে চাইনিজ রাইফেল, চাইনিজ এসএমজিসহ প্রায় দেড় হাজার অস্ত্র ও প্রায় আড়াই লাখ রাউন্ড গুলি।
বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, লুট হওয়া এসব অবৈধ অস্ত্র-গুলিই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সাধারণ জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় দেশে মোট ৪৬০টি পুলিশ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার মধ্যে ১১৪টি থানা (ভাঙচুর ৫৮, অগ্নিসংযোগ ৫৬) এবং বিভিন্ন ধরনের ১,০২৪টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় মোট ৫,৭৫৬টি অস্ত্র লুট হয়েছে; এর মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ৪,৪১৩টি। এখনও বাকি আছে ১,৩৪৩টি অস্ত্র। মোট লুট হওয়া গুলির সংখ্যা ৬,৫২,০৮২ রাউন্ড, যার মধ্যে ৩,৯৪,৪৩৪ রাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, চাইনিজ রাইফেল, পিস্তল ও কিছু চাইনিজ এসএমজি উদ্ধার হয়নি, সি ক্যাটাগরির সব এসএমজি উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি এক মাসের অভিযানে মোট ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে, একই সময় ৯,৭৯৪টি অস্ত্র এবং ২,৮৭,৩৫৯ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত অভিযানে বিভিন্ন অবৈধ সামগ্রী উদ্ধার করা হচ্ছে সাম্প্রতিক অভিযানে পাওয়া গেছে দেশীয় পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের প্রবাহ ও লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের কাছে থাকার কারণে তা আগামী নির্বাচনে অস্থিরতার কারণ হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাই এগুলো যদি অপরাধীদের হাতে থেকেই যায়, নির্বাচনের সময় বা অন্য কোনো সময়ে বড় ধরনের অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে যায়। প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা-তথ্য কাজে লাগিয়ে লুট হওয়া অস্ত্র দ্রুত উদ্ধার করতে হবে। পাশাপাশি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া দাগি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আর জাতীয় নির্বাচন হবে দেশ জুড়ে, শুধু ঢাকাকে প্রাধান্য দিলে হবে না। সারাদেশ থেকেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
সরকার ও বাহিনীর প্রতিশ্রুতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, লুট হওয়া অস্ত্রের সবগুলো উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে। নির্বাচনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হবে। পুলিশ বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও অবৈধ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হচ্ছে। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি

আপডেট সময় :

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন থানা ও পুলিশের অন্যান্য স্থাপনা থেকে লুট হওয়া বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গুলি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বেশিরভাগ অস্ত্র উদ্ধার করলেও বাইরে রয়ে গেছে চাইনিজ রাইফেল, চাইনিজ এসএমজিসহ প্রায় দেড় হাজার অস্ত্র ও প্রায় আড়াই লাখ রাউন্ড গুলি।
বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, লুট হওয়া এসব অবৈধ অস্ত্র-গুলিই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সাধারণ জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় দেশে মোট ৪৬০টি পুলিশ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার মধ্যে ১১৪টি থানা (ভাঙচুর ৫৮, অগ্নিসংযোগ ৫৬) এবং বিভিন্ন ধরনের ১,০২৪টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় মোট ৫,৭৫৬টি অস্ত্র লুট হয়েছে; এর মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ৪,৪১৩টি। এখনও বাকি আছে ১,৩৪৩টি অস্ত্র। মোট লুট হওয়া গুলির সংখ্যা ৬,৫২,০৮২ রাউন্ড, যার মধ্যে ৩,৯৪,৪৩৪ রাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, চাইনিজ রাইফেল, পিস্তল ও কিছু চাইনিজ এসএমজি উদ্ধার হয়নি, সি ক্যাটাগরির সব এসএমজি উদ্ধার করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি এক মাসের অভিযানে মোট ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে, একই সময় ৯,৭৯৪টি অস্ত্র এবং ২,৮৭,৩৫৯ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত অভিযানে বিভিন্ন অবৈধ সামগ্রী উদ্ধার করা হচ্ছে সাম্প্রতিক অভিযানে পাওয়া গেছে দেশীয় পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অস্ত্রের প্রবাহ ও লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের কাছে থাকার কারণে তা আগামী নির্বাচনে অস্থিরতার কারণ হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাই এগুলো যদি অপরাধীদের হাতে থেকেই যায়, নির্বাচনের সময় বা অন্য কোনো সময়ে বড় ধরনের অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে যায়। প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা-তথ্য কাজে লাগিয়ে লুট হওয়া অস্ত্র দ্রুত উদ্ধার করতে হবে। পাশাপাশি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া দাগি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আর জাতীয় নির্বাচন হবে দেশ জুড়ে, শুধু ঢাকাকে প্রাধান্য দিলে হবে না। সারাদেশ থেকেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
সরকার ও বাহিনীর প্রতিশ্রুতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে রাখার আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, লুট হওয়া অস্ত্রের সবগুলো উদ্ধার করা সম্ভব নাও হতে পারে। নির্বাচনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হবে। পুলিশ বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও অবৈধ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হচ্ছে। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।