ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাটোরে ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে  জেলা যুবদলের বর্ণাঢ্য র‍্যালি Logo কুড়িগ্রামে যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাগেরহাটে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যালী Logo মনোহরগঞ্জে পরিবেশ দূষণে প্রস্তুত হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা Logo বেনাপোলে নিখোঁজের দুই দিন পর ডোবায় মিলল যুবকের মরদেহ Logo রামুতে ৯২০০ পিস বার্মিজ ইয়াবাসহ একজন আটক Logo জয়পুরহাটে সফল পোল্ট্রি উদ্যোক্তা টুকু-কর্মসংস্থান শতাধিক Logo বগুড়ায় বাপা জেলা শাখার নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক Logo এনসিপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারী ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে: সারজিস Logo কুড়িগ্রামে চোরাকারবারিদের হামলায় চার বিজিবি সদস্য আহত

মাসের ব্যবধানে নিভে গেল জবির ৫ প্রাণ

নাইমুর রহমান
  • আপডেট সময় : ৩৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হারিয়েছে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে। এর মধ্যে তিনজন বর্তমান এবং দুজন সাবেক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহতরা হলেন- ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের আবুল কালাম এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ সেশনের মানজুরা আক্তার। মানজুরা আক্তারের সঙ্গে একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা।
ভূগোল বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান গত ৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পুরান ঢাকার স্টার কাবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
সানজিদা ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সহপাঠীদের মতে, তিনি বিভাগের অন্যতম মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনদিন জ্বরে ভোগার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
জোবায়েদ হোসাইন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী, ১৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশন করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তিনি বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।
তদন্তে জানা যায়, বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমান পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। প্রায় ২৫ দিনের পরিকল্পনায় তারা ওই দিন বিকেলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। পুলিশ এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। জোবায়েদ জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
মানজুরা আক্তার, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী, ২৪ অক্টোবর সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় নিহত হন। সকালে ইনাতনগর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারানো সেঁজুতি ট্রাভেলসের বাসটি খাদে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি ও তার মেয়ে আয়েশা।
জানা যায়, তিনি বিসিআইসি-এর কর্মকর্তা ছিলেন এবং পরিবার নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে যাচ্ছিলেন।
আবুল কালাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী, ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ফার্মগেটে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। দুপুরে মেট্রোরেল প্রকল্পের একটি পিলার থেকে ‘বিয়ারিং প্যাড’ (স্প্রিং) ছিটকে পড়ে তার মাথায় লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিয়ারিং প্যাডটি পড়ে কাছের দোকানের কাঁচ ভেঙে দোকানদারও আহত হন।
মাত্র ২৩ দিনের ব্যবধানে এভাবে পাঁচজন শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে হারিয়ে শোকে নিমজ্জিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নির্ধারিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ এবং ক্যাম্পাসে করা আলোকসজ্জাও খুলে ফেলা হয়েছে সম্মানের নিদর্শন হিসেবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাসের ব্যবধানে নিভে গেল জবির ৫ প্রাণ

আপডেট সময় :

১ মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) হারিয়েছে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে। এর মধ্যে তিনজন বর্তমান এবং দুজন সাবেক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহতরা হলেন- ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের আবুল কালাম এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ সেশনের মানজুরা আক্তার। মানজুরা আক্তারের সঙ্গে একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা।
ভূগোল বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান গত ৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পুরান ঢাকার স্টার কাবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
সানজিদা ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সহপাঠীদের মতে, তিনি বিভাগের অন্যতম মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনদিন জ্বরে ভোগার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
জোবায়েদ হোসাইন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী, ১৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় টিউশন করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তিনি বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।
তদন্তে জানা যায়, বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমান পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। প্রায় ২৫ দিনের পরিকল্পনায় তারা ওই দিন বিকেলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। পুলিশ এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। জোবায়েদ জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
মানজুরা আক্তার, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী, ২৪ অক্টোবর সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় নিহত হন। সকালে ইনাতনগর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারানো সেঁজুতি ট্রাভেলসের বাসটি খাদে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি ও তার মেয়ে আয়েশা।
জানা যায়, তিনি বিসিআইসি-এর কর্মকর্তা ছিলেন এবং পরিবার নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে যাচ্ছিলেন।
আবুল কালাম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী, ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ফার্মগেটে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। দুপুরে মেট্রোরেল প্রকল্পের একটি পিলার থেকে ‘বিয়ারিং প্যাড’ (স্প্রিং) ছিটকে পড়ে তার মাথায় লাগে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিয়ারিং প্যাডটি পড়ে কাছের দোকানের কাঁচ ভেঙে দোকানদারও আহত হন।
মাত্র ২৩ দিনের ব্যবধানে এভাবে পাঁচজন শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে হারিয়ে শোকে নিমজ্জিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নির্ধারিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ এবং ক্যাম্পাসে করা আলোকসজ্জাও খুলে ফেলা হয়েছে সম্মানের নিদর্শন হিসেবে।