ঢাকা ০৯:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাটোরে ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে  জেলা যুবদলের বর্ণাঢ্য র‍্যালি Logo কুড়িগ্রামে যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাগেরহাটে যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যালী Logo মনোহরগঞ্জে পরিবেশ দূষণে প্রস্তুত হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা Logo বেনাপোলে নিখোঁজের দুই দিন পর ডোবায় মিলল যুবকের মরদেহ Logo রামুতে ৯২০০ পিস বার্মিজ ইয়াবাসহ একজন আটক Logo জয়পুরহাটে সফল পোল্ট্রি উদ্যোক্তা টুকু-কর্মসংস্থান শতাধিক Logo বগুড়ায় বাপা জেলা শাখার নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক Logo এনসিপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারী ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে: সারজিস Logo কুড়িগ্রামে চোরাকারবারিদের হামলায় চার বিজিবি সদস্য আহত

এনসিপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারী ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে: সারজিস

কাঞ্চন সিকদার, কিশোরগঞ্জ
  • আপডেট সময় : ২৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, শাপলা প্রতীক মার্কা হিসেবে পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই। আমরা সকল আইনজ্ঞ, আইন প্রণেতা, আইনবিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বারবার কথা বলেছি। তারা বলেছেন, শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপির কোনো আইনগত বাধা নেই। এই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের জায়গা থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করছে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কাছে এই ধরনের স্বেচ্ছাচার, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ কখনোই প্রত্যাশা করি না। তারা যদি এখনও অভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতায় নিজেদের ওইটুকু স্বাধীনতা, স্বকীয়তা প্রদর্শন করতে না পারেন তাহলে আগামী নির্বাচনে তাদের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারবো না। যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক পেতে রাজপথে রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে এনসিপি একই সাথে স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও যাবে।
তিনি গত রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভায় বক্তব্য প্রদান শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আগামীতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশরে প্রত্যেকটি ঘরে পৌঁছানোর জন্য, সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব সংসদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এই সাংগঠনিক প্রক্রিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকবে এবং পর্যায়ক্রমে ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা ছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে পর্যায়ে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে।
সারজিস আরম বলেন, আগামী সংসদে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব থাকা অবশ্য প্রয়োজন। কারণ এই তরুণরাই প্রথমে ভারতীয় আধিপত্যবাদসহ বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট কাঠামোর বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে রাজপথে লড়ই করেছিল। তখন এই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর অস্তিত্ব অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তরুণরা এগিয়ে এসে হাল ধারে এবং তরুণদের নেতৃত্বে একটি গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে আমারা আমাদের আপসহীন অবস্থান ব্যক্ত করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যখন জুলাই সনদের প্রশ্নে নিশ্চয়তার যে প্রয়োজন ছিল, সেই নিশ্চয়তার প্রসেসটি কীভাবে হবে, কবে হবে সেটি নিশ্চিত না হয়ে, শুধুমাত্র নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাাক্ষর করলো। তখন এনসিপি তাদের জায়গা থেকে মেরুদণ্ড সোজা করে সেই নিশ্চয়তা দাবি করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। আমরা মনে করি যেদিন জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, যেদিন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি করা হবে এবং গণভোটে জুলাই সনদের পক্ষে যদি রায় আসে, তখন ‘কোনো নোট অব ডিসেন্ট’কে বিবেচেনা করা হবে না – এই নিশ্চয়তা যেদিন আসবে সেদিনই এনসিপি নির্দ্ধিধায় বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। তার আগে শুধু একটি কাগুজি লেখায় স্বাক্ষর করে এনসিপি বাংলাদেশর মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে না।
জোট গঠন প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, এনসিপি শুধুমাত্র কয়েকটি আসনকে সামনে রেখে সংসদে যাওয়ার জন্য জোট গড়ার জন্য কোনো চেষ্টা করছে না। কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতি কমিটেড থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কমিটেড থাকে, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কমিটেড থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে ওই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স হতে পারে। জনগণের আকক্সক্ষাকে এক পাশে রেখে শুধুমাত্র সীট পাওয়ার জন্য কোনো ইলেক্টরেল অ্যালায়েন্স এনসিপি করবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সারজিস আলম বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক কমিটির জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে আমাদের কোনো আহ্বায়ক কমিটিত অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী সময়ের আওয়ামী লীগ বা তার অঙ্গ সংগঠনের কেউ আসতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় নেতা সাঈদ উজ্জ্বল, খায়রুল কবীর, দিদার শাহ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এনসিপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারী ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে: সারজিস

আপডেট সময় :

জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, শাপলা প্রতীক মার্কা হিসেবে পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই। আমরা সকল আইনজ্ঞ, আইন প্রণেতা, আইনবিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বারবার কথা বলেছি। তারা বলেছেন, শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপির কোনো আইনগত বাধা নেই। এই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের জায়গা থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করছে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কাছে এই ধরনের স্বেচ্ছাচার, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ কখনোই প্রত্যাশা করি না। তারা যদি এখনও অভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতায় নিজেদের ওইটুকু স্বাধীনতা, স্বকীয়তা প্রদর্শন করতে না পারেন তাহলে আগামী নির্বাচনে তাদের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারবো না। যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক পেতে রাজপথে রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে এনসিপি একই সাথে স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও যাবে।
তিনি গত রোববার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভায় বক্তব্য প্রদান শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, আগামীতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশরে প্রত্যেকটি ঘরে পৌঁছানোর জন্য, সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব সংসদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এই সাংগঠনিক প্রক্রিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকবে এবং পর্যায়ক্রমে ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা ছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে পর্যায়ে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে।
সারজিস আরম বলেন, আগামী সংসদে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব থাকা অবশ্য প্রয়োজন। কারণ এই তরুণরাই প্রথমে ভারতীয় আধিপত্যবাদসহ বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট কাঠামোর বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে রাজপথে লড়ই করেছিল। তখন এই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর অস্তিত্ব অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। তখন তরুণরা এগিয়ে এসে হাল ধারে এবং তরুণদের নেতৃত্বে একটি গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে আমারা আমাদের আপসহীন অবস্থান ব্যক্ত করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যখন জুলাই সনদের প্রশ্নে নিশ্চয়তার যে প্রয়োজন ছিল, সেই নিশ্চয়তার প্রসেসটি কীভাবে হবে, কবে হবে সেটি নিশ্চিত না হয়ে, শুধুমাত্র নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাাক্ষর করলো। তখন এনসিপি তাদের জায়গা থেকে মেরুদণ্ড সোজা করে সেই নিশ্চয়তা দাবি করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। আমরা মনে করি যেদিন জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, যেদিন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি করা হবে এবং গণভোটে জুলাই সনদের পক্ষে যদি রায় আসে, তখন ‘কোনো নোট অব ডিসেন্ট’কে বিবেচেনা করা হবে না – এই নিশ্চয়তা যেদিন আসবে সেদিনই এনসিপি নির্দ্ধিধায় বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। তার আগে শুধু একটি কাগুজি লেখায় স্বাক্ষর করে এনসিপি বাংলাদেশর মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে না।
জোট গঠন প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, এনসিপি শুধুমাত্র কয়েকটি আসনকে সামনে রেখে সংসদে যাওয়ার জন্য জোট গড়ার জন্য কোনো চেষ্টা করছে না। কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতি কমিটেড থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কমিটেড থাকে, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কমিটেড থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে ওই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স হতে পারে। জনগণের আকক্সক্ষাকে এক পাশে রেখে শুধুমাত্র সীট পাওয়ার জন্য কোনো ইলেক্টরেল অ্যালায়েন্স এনসিপি করবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সারজিস আলম বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক কমিটির জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে আমাদের কোনো আহ্বায়ক কমিটিত অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী সময়ের আওয়ামী লীগ বা তার অঙ্গ সংগঠনের কেউ আসতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় নেতা সাঈদ উজ্জ্বল, খায়রুল কবীর, দিদার শাহ প্রমুখ।