মনোহরগঞ্জে পরিবেশ দূষণে প্রস্তুত হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা
- আপডেট সময় : ৪১ বার পড়া হয়েছে
এলাকার পরিবেশ দূষণে প্রস্তুত হচ্ছে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের শ্রীপুর এলাকায় মিঝি ব্রিক নামে একটি অবৈধ ইটভাটা। বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে ভাটায়। এবার মাঠের পানি না শুকাতেই সেচপাম্প দিয়ে পানি সেচে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে দখলীয় মালিক পক্ষ। ইটভাটাটি বন্ধের জন্য স্থানীয় সচেতন মহল প্রশাসনের নিকট দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সম্প্রতি অবৈধ ভাটাটি বন্ধের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে গণস্বাক্ষর নিয়ে নাসির উদ্দীন নামে একজন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায় গত বছর একাধিকবার জরিমানাসহ ভাটাটি বন্ধ করে লাল সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট। বন্ধের ১২ ঘণ্টা না যেতেই প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে আবারো চালু করে ভাটাটি। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হলেও মিডিয়ার কোনো খবর এমনকি প্রশাসনকেও পাত্তা দেয়নি একসময়ের আওয়ামী দোসর যুবলীগ ক্যাডার সাহাব উদ্দিন ও জিয়াউর রহমান। নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ইটভাটা পাহারা দেয়ায় ভয়ে চুপ থাকতে হয় এলাকাবাসীকে। সম্প্রতি ভাটা প্রস্তুতে কাজ শুরু করে দিয়েছে জিয়াউর রহমান। ভাটা নিরাপদে চালু করতে এলাকার বর্তমান প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করার গুঞ্জন উঠেছে।
জানা যায়, একটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মণ পর্যন্ত কাঠ ও কয়লা পোড়ানো হয়। ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের। বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকায় বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও অদৃশ্য শক্তি দিয়ে অধিক লাভজনক মারাত্মক এই ব্যবসা সবদিক ম্যানেজ করে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন জিয়াউর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, চুল্লির কারণে রাস্তা দিয়ে চলা যায় না। চোখ জ্বালা করতে থাকে। দম বন্ধ হয়ে আসে। চুল্লির বিষাক্ত ধোঁয়ার কারনে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘর, স্কুল মাদরাসা, আশপাশের গ্রামগুলোতে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চোখের বিভিন্ন সমস্যাসহ শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যা যেন লেগেই থাকে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় গত বছর ২১ মার্চ অভিযান চালিয়ে চুল্লি ভেঙে দিয়েছিলো, চুল্লি ভেঙে দেয়ার পরদিনই আবারো চালু করেছিলো ইটভাটাটি। এরপর লাল সাইনবোর্ড টাঙিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করে প্রশাসন। বন্ধ ঘোষণার পর অদৃশ্য শক্তির জোরে সাইনবোর্ড টাঙিয়েই ভাটা চালু রাখে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামে ২০১০ সালে কমলপুর গ্রামের আবদুর রহমান নামে এক প্রবাসী পরিবেশ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বৈধভাবে ইটভাটাটি চালু করে। ২০১২ সালে কাগজপত্রের মেয়াদ শেষ হলেও গত ১২ বছরেও আর নবায়ন করা হয়নি। গত একযুগ ধরে অবৈধভাবেই চলছিলো ইটভাটাটি। এনিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাননা।
এ ব্যাপারে ভাটার পরিচালক সাহাব উদ্দিন বলেন সবাই যেভাবে ভাটা পরিচালনা করেন আমরাও সেভাবে ভাটা চালাই।
এলাকার সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন পরিবেশ বিপর্যয়কারী কাগজপত্র বিহীন অবৈধ ইটভাটাটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, না হয় এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে নামবো।

















