স্টাফ রিপোর্টার : আক্তারুজ্জামান লেখাপড়া করেছেন মাদ্রাসায়। পাস করেছেন আলিম। এরপর নাম ধারণ করেন মো. আকরাম হোসেন দিদার। এরপর হয়ে যান চিকিৎসক! যেনতেন চিকিৎসক নয়, ইএনটি (নাক-কান-গলা) বিশেষজ্ঞ হিসেবে রোগীদের দিয়ে আসছিলেন চিকিৎসা। করছিলেন রাজধানী ঢাকাসহ ঝিনাইদহ, নাটোর, কুষ্টিয়ায় জটিল রোগীর অপারেশনও। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে সেই ভুয়া ডাক্তার। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আশিকুর রহমান বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, চিকিৎসক মো. আকরাম হোসেন ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ মারা যান। তার বাড়ি বাগেরহাটের সোতাল গ্রামে। গ্রেপ্তার আক্তারুজ্জামান ডাক্তার আকরাম হোসেন দিদারের এমবিবিএস সার্টিফিকেট এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। পুলিশ জানায়, আক্তারুজ্জামানের বাড়ি রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার উল্লাহপাড়া গ্রামে। তিনি মাদ্রাসা থেকে আলিম পাসের পর ঢাকার মিরপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে ডিপ্লোমা শেষ করেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বনে যান। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রারাণী দেবনাথ জানান, আক্তারুজ্জামান দীর্ঘদিন জেলা শহরের আরাপপুরে বেসরকারি রাবেয়া হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মৃত ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে রোগী দেখে আসছিলেন। আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে রোগী দেখার সময় ওই ভুয়া ডাক্তারকে আটকের জন্য পুলিশ র্যাবসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু, ওই দিন ক্লিনিক মালিকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তিনি পালিয়ে যান।
সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রারাণী আরও জানান, প্রকৃত ডাক্তার মো. আকরাম হোসেন বরিশাল মেডিকেল কলেজের ২৩তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তাঁর নাম ব্যবহারকারী আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডা. মিথিলা রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেন।
এসপি আশিকুর রহমান আরও জানান, দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা থেকে আকতারুজ্জামানকে আটক করা হয়। এরপর আজ বুধবার ভোরের দিকে ঝিনাইদহে আনা হয়।
ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল বাশার জানিয়েছেন, আক্তারুজ্জামানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া ডাক্তার সিন্ডিকেটের কয়েক সদস্যের নাম পাওয়া গেছে। দুপুরের দিকে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী এসআই মো. শরিফুল ইসলাম অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..