# দুবাই থেকে পালাতে পারবেন না
# যে কোন সময় গ্রেপ্তার
আরিফুর রহমান শুভ : পুলিশ ইন্সপেক্টর হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ে পলাতক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
শুক্রবার ইন্টারপোলের সাইটে বাংলাদেশিদের তালিকার ৬৩ নম্বরে রবিউল ইসলাম নামে ছবিসহ প্রকাশ করা হয়। তার জন্মস্থান দেয়া হয় বাংলাদেশের বাগেরহাট। তর বয়স দেখানো হয়েছে ৩৫। ইন্টারপোল পুলিশ দুবাই পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ পুলিশ টিমের হাতে তুলে দেবে। এ ব্যাপারে পুলিশের একটি টিমের দুবাই যাবার কথা রয়েছে। দুবাইয়ে তার স্বর্ণের দোকানটি এখন বন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়। এর আগে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইন্টারপোল আবেদন গ্রহণ করেছে। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে তার জুয়েলারি শপও বন্ধ রয়েছে। গত ১৫ই মার্চ পলাতক আরাভের আমন্ত্রণে দুবাইয়ে তার স্বর্ণালঙ্কারের দোকান উদ্বোধন করতে যান ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ২০১৮ সালের ৭ই জুলাই পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খানকে হত্যার পরপরই রবিউল ভারতে পালিয়ে যান। ২০২০ সালে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করে সেখান থেকে দুবাইয়ে চলে যান। আগামী বছর পর্যন্ত সেখানে রবিউলের রেসিডেন্স পারমিট আছে।
পুলিশ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আরাভ জুয়েলার্সের কথিত মালিক আরাভ খানের অর্থের উৎস সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। মানি লন্ডারিং না কি অন্য কোনো অবৈধ উপায়ে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান এবং তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। ইতিমধ্যে তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। ভারতীয় পাসপোর্টে আরাভ দুবাইতে অবস্থান করায় তাকে দেশে ফেরানো জটিল বলে মনে করা হচ্ছে। সিআইডি’র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আরাভের অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে প্রাথমিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিক কিছু তথ্য ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব না পেলেও দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে কাজ করছে সিআইডি। প্রাথমিক তথ্যের অংশ হিসেবে আরাভের নামে কি পরিমাণ সম্পত্তি আছে, তিনি এসব অর্থ কোথা থেকে পেয়েছেন তার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সূত্র বলছে, আরাভ যদি বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা নিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কে তাকে অর্থের যোগান দিয়েছে, কীভাবে নিয়েছে এসব বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হবে। যদিও এধরনের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়। নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, কোনো ব্যবসায়ীক লেনদেন আছে কিনা, কি কারণে দেয়া হয়েছে বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থ পাচার করেছে কিনা সেই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দুবাইয়ে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করার পর ব্যাপক আলোচনায় আসেন আরাভ খান।
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। আরাভ জুয়েলার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তার বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন এরকম কয়েকটি নামেও পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ই জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল। তিনি ভারতে গিয়ে আরাভ খান নামে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই চলে যান।
এ জাতীয় আরো খবর..