# বাণিজ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া দামেও পণ্য বিক্রি করছেন না ব্যবসায়িরা
আরিফুর রহমান শুভ : সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া দামেওআলু, পেঁয়াজ, ডিমবিক্রি হচ্ছে না। খুচরা পর্যায়ে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকায়। গতকাল ডিম কিছু কিছু দোকানে বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামে, প্রতি ডজন ১৪৪ টাকায়। আবার বেশ কিছু দোকানে বিক্রি করছে ১৫০ টাকায়। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি না করা নিয়ে বিক্রেতাদের রয়েছে নানান অজুহাত, নানা মতামত। গতকাল শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার এই চিত্র পাওয়া গেছে। বাজার সিন্ডিকেটের লুটপাটে মানুষ অসহায়। কার কাছে নালিশ জানাবেন তা কারো জানা নেই। ‘বাজার সিন্ডিকেটের কাজে কিছু করা যাবে না’ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির এমন মন্তব্য করার পর থেকে বেপরোয়া অবস্থায় সিন্ডিকেট সদস্যরা। ফলে নিতপণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না। গতকাল বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ২৬০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৮০-৩০০ টাকা, চায়না রসুন ২০০, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, আলু ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, দেশি আদা ৪০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ান আদা ২০-৪০ টাকা ও দেশি রসুন ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে আলু-পেঁয়াজ বিক্রিতে মানা হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দাম।
নির্ধারিত দামে বিক্রি না করা নিয়ে আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, আমি তো কম দামে কিনতে পারিনি, বিক্রি করবো কীভাবে। আমার কেনা পড়েছে ৪২ টাকা, তারপর ভাড়া, নষ্ট আলু বাদ দিয়ে ৫০ টাকাতেই বিক্রি করতে হয়। পাইকাররা দাম না কমালে আমরা কম দামে কীভাবে বিক্রি করবো?
কৃষিপণ্যের দাম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তিন কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানান। সে অনুযায়ী প্রতিকেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। আলু কেজিতে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকা। ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি পিস ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে ডিম আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া বোতল ও প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকা লিটার, খোলা তেল ১৪৯ টাকা, পাম ওয়েল ১২৪ টাকা, চিনি খোলা ১২০ ও প্যাকেট ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজনে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে ১২ টাকা ৫০ পয়সা। তবে কিছু কিছু দোকানে সরকার নির্ধারিত দামেই ডিম বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর সয়াবিন বিক্রি আগের দামেই, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৫১ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রেতারা প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি করছিলেন। কেন বেশি দামে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে বলেন, অনেক ডিম ভাঙা থাকে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আছে নানা অজুহাত।
নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা তা তদারকি করতে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। মূল্য তালিকা না থাকায় ও বেশি দামে বিক্রি করায় পেঁয়াজের দুই পাইকারি ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা এবং একজন ডিম ব্যবসায়ীকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক। ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের মহাপরিচালকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সারা দেশে ডিম, সয়াবিন তেল, আলু, পেঁয়াজের যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, তা তদারকি করার জন্যই মূলত ছিলো এই অভিযান।
এ জাতীয় আরো খবর..