×
সদ্য প্রাপ্ত:
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-১৯
  • ৬৬ বার পঠিত
স্টাফ রিপোর্টার : বিআইডব্লিউটিএ'র আলোচিত অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তে দুদকের পক্ষ থেকে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক (অনু ও তদন্ত-২) মোঃ হাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে এবং সহকারী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র মজুমদারকে সদস্য করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ০৩/০৯/২০২৩ইং তারিখে ইস্যুকৃত স্মারক নং ০০.০১.২৬০০.৬০৩.০১.২৩৪.২৩.৩২৩১৭ থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।  

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের নদীর পাড় বা সীমানা নির্ধারণে উচ্ছেদ অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ'র তৎকালীন যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন সফলতা দেখিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যার তীরে বিআইডব্লিউটিএ যে অভিযান চালায় তাতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির সেই সময়ের যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন।

অভিযানের শুরু থেকেই সাহসী ভূমিকা পালন করেন এই কর্মকর্তা। তার নেতৃত্বে ঢাকা নদীবন্দরের চার নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা সাড়ে সাত হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। নদীর তীরে ও তীরভূমির জায়গা দখল করে এসব অবৈধ স্থাপনা যেমন স্থানীয় সাধারণ মানুষ গড়ে তুলেছিলেন, তেমনি দখলদারের ভূমিকায় ছিলেন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিশ্বস্থ সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দৃশ্যমান কঠোর অবস্থানে থাকা আরিফ উদ্দিন পর্দার আড়ালে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তির কাছ থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নেন। এমনকি নারায়ণগঞ্জে উচ্ছেদ অভিযানের সময় যে সমস্ত মালামাল ও কয়লা সহ তিনি জব্দ করেন; উক্ত মালামাল বেশি দামে বিক্রি করলেও সরকারি কোষাগারে প্রাপ্ত অর্থ জমা দেয়ার সময় তা কম দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন বলে সেই সময় অভিযোগ উঠে।

বিআইডব্লিউটিএ'র আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও সদরঘাট বন্দরে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে নামে বেনামে এ কে এম আরিফ উদ্দিনের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। দুদক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ'র আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ বন্দর হতে ০১/০১/২০১৯ হতে ৩১/১২/২০২২ তারিখ পর্যন্ত সময়ে এবং সদরঘাট বন্দরে ০১/০১/২০২০ হতে ৩১/১২/২০২২ তারিখ পর্যন্ত সময়ে সরকারি রাজস্ব বাবদ আদায়কৃত খাতওয়ারী বিবরণ, সরকারি কোষাগারে জমা দানের প্রামাণ্য রেকর্ডপত্র (ডিপোজিট স্প্রিসহ), বর্নিত সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের বিবরণ চেয়েছে দুদকের অনুসন্ধানী টিম।  এছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ'র অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের সকল ব্যক্তিগত নথি, উত্তোলিত বেতন ভাতার বিবরণ (চাকুরী জীবনের শুরু থেকে জুন, ২০২৩ সময় পর্যন্ত) দায় দায়িত্ব সম্পর্কিত অফিস আদেশ সমূহ, নিজ/স্ত্রী/সন্তান/ভাই গনের নামে ব্যবসা/শেয়ার পরিচালনার আবেদন ও অনুমোদন সংক্রান্ত সমুদয় রেকর্ডপত্র চেয়েছে উক্ত তদন্ত কমিটি। অভিযোগের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের স্বার্থে চাহিত রেকর্ডপত্র/কাগজপত্রের মূল কপি সংরক্ষণপূর্বক সত্যায়িত কপি বিগত ০৮/০১/২৩ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক (অনু ও তদন্ত-২) মোঃ হাফিজুল ইসলামের কাছে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও অদ্যাবধি সরবরাহ না করায় অনুসন্ধান কার্যক্রম বিলম্বিত ও বিঘ্ন হচ্ছে। দুদকের অনুসন্ধানী দল কর্তৃক প্রেরিত চিঠিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না এ কে এম আরিফ উদ্দিন। উল্লেখ্য যে, এ কে এম আরিফ উদ্দিন বিএনপির শীর্ষ নেতা শিমুল বিশ্বাসের আত্মীয়। সেই সুবাদে তিনি বিআইডব্লিউটিএতে সর্বদাই সরকার বিরোধী একটি গ্রুপকে প্ররোচনা দিতেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএতে যখন যে চেয়ারম্যানই আসেন তার সাথে সখ্যতা করতে অত্যন্ত পটু বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তা। জানা গেছে, এ কে এম আরিফ উদ্দিন বেশ কিছুদিন সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছিলেন সন্তানের চিকিৎসার জন্য। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন।

বিআইডব্লিউটিএ'র অতিরিক্ত পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তে দুদকের গৃহীত পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে আরিফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বে অটল থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে নদী দখলমুক্ত করেছিলাম। আবার এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কয়েকদফা বাধা ও হামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। এত কিছুর পরও আমাকে দমাতে না পেরে বিছানো হয়েছে ঘৃন্য ষড়যন্ত্রের জাল। তিনি আরও বলেন, '২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর আকস্মিক এক আদেশে ঢাকা নদীবন্দর থেকে আমাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সদরঘাট থেকে বদলি করা হয় সংস্থাটির মতিঝিল প্রধান কার্যালয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat