ঢাকা ১০:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিনকাল

অর্ধশত মামলা ও শরীরে বুলেট নিয়েও দলীয় কর্মসূচীতে সক্রিয় নয়ন

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৯৫৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
  • মূল্যায়ন নেই বিএনপির ত্যাগী নেতাদের

  • ট্রমা আর বুলেটের যন্ত্রণায় রাতের ঘুম হারাম

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছর এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধী দলগুলোর মাঠ নেতা-কর্মীদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরনে বাধ্য হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর গুলি, নির্যাতন এবং দলীয় হামলায় বিপর্যস্তদের নিয়ে দৈনিক গণমুক্তি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এরই প্রথম পর্ব আজ প্রকাশিত হলো।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যাদের আজ খবর নেই। খবর নেই তাদের ত্যাগ ও অবদানের। যারা আন্দোলনে গিয়ে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হয়েছেন । প্রাণ হারিয়েছে ৪২২। আহত হাজার হাজার। নির্যাতন হামলা মামলার আর গ্রেফতার অগনিত।
শরীরে অসংখ্য বুলেট নিয়ে বিএনপির আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসুচীতে সক্রিয় ছিলো, একনো আছে, তারাই এখন অবহেলিত। শত শত মামলা মাথায় নিয়ে একাধিক বুলেট শরীরে বহন করছেন। রাতে ঘুমোতে পারেন না বুলেটের ব্যথায়। শরীরে বুলেট অপসারণের কোনো সুযোগ নেই বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
বিএনপির তেমনই একজন ত্যাগী কর্মী আবদুর রহমান শিকদার নয়ন। হামলা মামলা, শুধু তাই নয়, ৫৭ টি রাজনৈতিক মামলা নিয়েও প্রতিমাসের বেশির ভাগ দিনে হাজিরা দিতে আদালত প্রাঙ্গনে গড়াগড়ি করতে হচ্ছে। অথচ তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না। এ অভিযোগ গত এক বছর। গত ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ সতের বছরে ৫৭ রাজনৈতিক মামলা ছাড়াও ডিবির হারুন বাহিনী একাধিবার নিয়ে তাকে ডিবি কার্যালয়ে শারিরীক ভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। বিনা দোষে মাসের পর মাস কারাগারে আটক ছিলেন। গতকাল শরীরে বুলেট নিয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, তার মাথায় এবং হাতের বাহুনে বুলেট রয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে, শরীরের বুলেট অপসারন সম্ভব নয়। সারা জীবর এই বুলেট বহন কওে চলতে হবে। তিনি আরো বলেন, তিনি ২০১১ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতি শুরু করেন। তার বাসা মিরপুর এক নম্বর সেকশনের শাহআলী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার শহরতলীতে।
জুলাই আন্দোলনে ২৮ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে গুলিতে আহত হন নয়ন। তার মাথায়, হাতে পিঠে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বুলেট বিদ্ধ হয়। ফায়ার সার্ভিসের পূর্বপাশে ফুটপাতে ঢলে পড়েন নয়ন। নেতাকর্মীরা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধারের পর পার্শ্ববর্তি আজমল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পুলিশ ও আওয়ামীলিেলগর নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা করলে তাকে লুকিয়ে রাখা হয়। পড়ে মাথার ডান পাশের একটি বুলেট অপসারন করলেও বাকী বুলেট শরীরে রয়ে যায়। ওই অবস্থায় পালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আশ্রয় নেয়। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। একটু সুস্থ হয়ে আবারো আন্দোলনে যোগ দেন নয়ন।
অপরদিকে শরীরে বুলেট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের শরীরে এখনো যেসব বুলেট বা পিলেট রয়ে গেছে, সেগুলো সরানো সম্ভব নয়। সম্প্রতি রাজধানীর পান্থপথে আহতদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আহতদের শরীরে যেসব পিলেট বা বুলেট রয়ে গেছে, সেগুলো অপসারণ করা সম্ভব নয়। অনেকের শরীরে ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত পিলেট রয়েছে। এগুলো বের করতে গেলে শরীরের টিস্যুতে যতোটা ক্ষতি হবে, তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হবে অপারেশন করার সময়। ফলে অধিকাংশ চিকিৎসকই মনে করেন, সেগুলো শরীরে রেখে দেওয়াই নিরাপদ। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সর্বোচ্চটুকু দিয়েই আহতদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা সবদিক থেকে বিবেচনা করে চিকিৎসা দিয়েছি। এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো তাদের দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
চিকিৎসদের চেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যার শরীরে এগুলো পিলেট রয়ে গেছে তার শারীরিক মানসিক কষ্ট আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু এটা সমাধান অযোগ্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটার এই মুহূর্তে কোনো সমাধান নাই।
এবিষয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেন, জুলাইয়ে আহতদের অনেকেরই এখন আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে অনেকেই হাসপাতাল ছাড়তে চায় না। আমরা একটা অ্যাসেসমেন্ট করেছি কেন তারা থাকতে চাচ্ছে। তাদের ভেতর একটা ট্রমা কাজ করছে তারা যদি হাসপাতাল থেকে চলে যায় তাহলে তাদের আর কেউ দেখবে না। খোঁজ নেওয়ার মত কেউ থাকবে না। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আহত বাসায় চলে গেলেও যেন সুবিধাটা পায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি সরকারি-বেসরকারি চাকরির মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করানোর জন্য। কিন্তু একটা কমন সমস্যা হচ্ছে বেসরকারি চাকরি কেউ করতে চায় না। আহত বা শহীদ পরিবারের প্রত্যাশা থাকে তারা সরকারি চাকরি করবে তাও উচ্চ পর্যায়ের। আমরা অনেক বেসরকারি চাকরি ম্যানেজ করেছি, অনেককে দিয়েছি। আমরা ফরম ছেড়েছি, যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তাদের প্রথম প্রশ্ন থাকে এটা সরকারি না বেসরকারি। বেসরকারি হলে তারা আর কোনো যোগাযোগ করেন না।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জুলাই আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ভার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর দেওয়া ভুল ছিল। এটা শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ ছিল না
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে যাদের চিকিৎসা দরকার ছিল। স্বাভাবিকভাবেই সে সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর পুরো বিষয়টি এসে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি নিয়ে হিমশিম খেয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এখানে তিনটা মিনিস্ট্রি সমান্তরাল কাজ করার দরকার ছিল। স্বাস্থ্য ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। কারণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটা এমআইএস ছিল দেশজুড়ে। এসব মন্ত্রণালয় মিলে কাজ করলে সমন্বয় ভালো হত।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নয়ন বলেন, মিরপুর সরকারী বাঙলা কলেজ ছাত্র দলে ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ছাত্র দলে জড়িত ছিলেন। সালে তিনি বাঙলা কলেজ থেকে বের হয়ে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের জড়িত ছিলেন। কমিটি না থাকায় তিনি শাহআলী থানা যুবদলের কর্মী হিসেবে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, বিগত দিনে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী মামলা, হামলা, জেল খেটেছেন, গন অভ্যূত্থানে গুলিতে মারপিটে আহত হয়েছেন। অঙ্গহানি ও পঙ্গুত্ববরন করেছেন। আমার মতো শরীরে বুলেট নিয়ে অসহ্য যন্ত্রনার মধ্যে বিএনপির সকল কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করছেন। তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না। নয়নের দাবি, সুসময়ে বিএনপির এ ধরনের নির্যাতিত নেতাকমীদের দল থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা উচিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিনকাল

অর্ধশত মামলা ও শরীরে বুলেট নিয়েও দলীয় কর্মসূচীতে সক্রিয় নয়ন

আপডেট সময় :
  • মূল্যায়ন নেই বিএনপির ত্যাগী নেতাদের

  • ট্রমা আর বুলেটের যন্ত্রণায় রাতের ঘুম হারাম

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছর এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধী দলগুলোর মাঠ নেতা-কর্মীদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরনে বাধ্য হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর গুলি, নির্যাতন এবং দলীয় হামলায় বিপর্যস্তদের নিয়ে দৈনিক গণমুক্তি ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এরই প্রথম পর্ব আজ প্রকাশিত হলো।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যাদের আজ খবর নেই। খবর নেই তাদের ত্যাগ ও অবদানের। যারা আন্দোলনে গিয়ে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হয়েছেন । প্রাণ হারিয়েছে ৪২২। আহত হাজার হাজার। নির্যাতন হামলা মামলার আর গ্রেফতার অগনিত।
শরীরে অসংখ্য বুলেট নিয়ে বিএনপির আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসুচীতে সক্রিয় ছিলো, একনো আছে, তারাই এখন অবহেলিত। শত শত মামলা মাথায় নিয়ে একাধিক বুলেট শরীরে বহন করছেন। রাতে ঘুমোতে পারেন না বুলেটের ব্যথায়। শরীরে বুলেট অপসারণের কোনো সুযোগ নেই বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
বিএনপির তেমনই একজন ত্যাগী কর্মী আবদুর রহমান শিকদার নয়ন। হামলা মামলা, শুধু তাই নয়, ৫৭ টি রাজনৈতিক মামলা নিয়েও প্রতিমাসের বেশির ভাগ দিনে হাজিরা দিতে আদালত প্রাঙ্গনে গড়াগড়ি করতে হচ্ছে। অথচ তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না। এ অভিযোগ গত এক বছর। গত ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ সতের বছরে ৫৭ রাজনৈতিক মামলা ছাড়াও ডিবির হারুন বাহিনী একাধিবার নিয়ে তাকে ডিবি কার্যালয়ে শারিরীক ভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। বিনা দোষে মাসের পর মাস কারাগারে আটক ছিলেন। গতকাল শরীরে বুলেট নিয়ে এই প্রতিবেদককে জানান, তার মাথায় এবং হাতের বাহুনে বুলেট রয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে, শরীরের বুলেট অপসারন সম্ভব নয়। সারা জীবর এই বুলেট বহন কওে চলতে হবে। তিনি আরো বলেন, তিনি ২০১১ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতি শুরু করেন। তার বাসা মিরপুর এক নম্বর সেকশনের শাহআলী এলাকায়। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার শহরতলীতে।
জুলাই আন্দোলনে ২৮ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে গুলিতে আহত হন নয়ন। তার মাথায়, হাতে পিঠে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বুলেট বিদ্ধ হয়। ফায়ার সার্ভিসের পূর্বপাশে ফুটপাতে ঢলে পড়েন নয়ন। নেতাকর্মীরা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধারের পর পার্শ্ববর্তি আজমল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পুলিশ ও আওয়ামীলিেলগর নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা করলে তাকে লুকিয়ে রাখা হয়। পড়ে মাথার ডান পাশের একটি বুলেট অপসারন করলেও বাকী বুলেট শরীরে রয়ে যায়। ওই অবস্থায় পালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আশ্রয় নেয়। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। একটু সুস্থ হয়ে আবারো আন্দোলনে যোগ দেন নয়ন।
অপরদিকে শরীরে বুলেট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের শরীরে এখনো যেসব বুলেট বা পিলেট রয়ে গেছে, সেগুলো সরানো সম্ভব নয়। সম্প্রতি রাজধানীর পান্থপথে আহতদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসা-সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আহতদের শরীরে যেসব পিলেট বা বুলেট রয়ে গেছে, সেগুলো অপসারণ করা সম্ভব নয়। অনেকের শরীরে ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত পিলেট রয়েছে। এগুলো বের করতে গেলে শরীরের টিস্যুতে যতোটা ক্ষতি হবে, তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হবে অপারেশন করার সময়। ফলে অধিকাংশ চিকিৎসকই মনে করেন, সেগুলো শরীরে রেখে দেওয়াই নিরাপদ। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সর্বোচ্চটুকু দিয়েই আহতদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা সবদিক থেকে বিবেচনা করে চিকিৎসা দিয়েছি। এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো তাদের দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
চিকিৎসদের চেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যার শরীরে এগুলো পিলেট রয়ে গেছে তার শারীরিক মানসিক কষ্ট আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু এটা সমাধান অযোগ্য। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটার এই মুহূর্তে কোনো সমাধান নাই।
এবিষয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেন, জুলাইয়ে আহতদের অনেকেরই এখন আর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে অনেকেই হাসপাতাল ছাড়তে চায় না। আমরা একটা অ্যাসেসমেন্ট করেছি কেন তারা থাকতে চাচ্ছে। তাদের ভেতর একটা ট্রমা কাজ করছে তারা যদি হাসপাতাল থেকে চলে যায় তাহলে তাদের আর কেউ দেখবে না। খোঁজ নেওয়ার মত কেউ থাকবে না। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আহত বাসায় চলে গেলেও যেন সুবিধাটা পায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি সরকারি-বেসরকারি চাকরির মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করানোর জন্য। কিন্তু একটা কমন সমস্যা হচ্ছে বেসরকারি চাকরি কেউ করতে চায় না। আহত বা শহীদ পরিবারের প্রত্যাশা থাকে তারা সরকারি চাকরি করবে তাও উচ্চ পর্যায়ের। আমরা অনেক বেসরকারি চাকরি ম্যানেজ করেছি, অনেককে দিয়েছি। আমরা ফরম ছেড়েছি, যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তাদের প্রথম প্রশ্ন থাকে এটা সরকারি না বেসরকারি। বেসরকারি হলে তারা আর কোনো যোগাযোগ করেন না।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জুলাই আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ভার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর দেওয়া ভুল ছিল। এটা শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ ছিল না
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে যাদের চিকিৎসা দরকার ছিল। স্বাভাবিকভাবেই সে সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর পুরো বিষয়টি এসে পড়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি নিয়ে হিমশিম খেয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এখানে তিনটা মিনিস্ট্রি সমান্তরাল কাজ করার দরকার ছিল। স্বাস্থ্য ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। কারণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটা এমআইএস ছিল দেশজুড়ে। এসব মন্ত্রণালয় মিলে কাজ করলে সমন্বয় ভালো হত।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে নয়ন বলেন, মিরপুর সরকারী বাঙলা কলেজ ছাত্র দলে ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ছাত্র দলে জড়িত ছিলেন। সালে তিনি বাঙলা কলেজ থেকে বের হয়ে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের জড়িত ছিলেন। কমিটি না থাকায় তিনি শাহআলী থানা যুবদলের কর্মী হিসেবে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, বিগত দিনে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী মামলা, হামলা, জেল খেটেছেন, গন অভ্যূত্থানে গুলিতে মারপিটে আহত হয়েছেন। অঙ্গহানি ও পঙ্গুত্ববরন করেছেন। আমার মতো শরীরে বুলেট নিয়ে অসহ্য যন্ত্রনার মধ্যে বিএনপির সকল কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করছেন। তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে না। নয়নের দাবি, সুসময়ে বিএনপির এ ধরনের নির্যাতিত নেতাকমীদের দল থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা উচিত।