ঢাকা ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

অসময়ে বৃষ্টিতে নওগাঁয় ফসলের ক্ষতি

নওগাঁ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৩১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অসময়ে বৃষ্টিতে নওগাঁয় আগাম জাতের শাক-সবজি ও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসল নষ্ট হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এখনো ক্ষতির পরিমান নিরুপন করতে পারেনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়া আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে।
জেলার বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের তথ্যমতে- জেলায় গত ৩দিনে গড় ৫০ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে গত শনিবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর ও মান্দা উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে পানি জমেছে। যেসব জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপন করা হয়েছে, সেসব জমিতে পানি জমায় বীজ পঁচে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা করছেন কৃষক। এছাড়াও আগাম জাতের শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বেগুন, মুলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি এবং রসুন ও পিয়াজক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেছে। এছাড়াও পাকা ও আধাপাকা রোপা আমন ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
কৃষকরা বলছেন- হঠাৎ বৃষ্টিতে শীতকালীন আগাম জাতের শাকসবজির জমিতে পানি জমে থাকায় পঁচন ধরে নষ্ট হচ্ছে। রোপিত রসুন-পেঁয়াজ ও আলু ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকদিন পর রোপা আমন ধান কেটে ঘরে উঠানোর কথা। তার আগেই জমিতে পানি জমে ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় বিঘাতে ফলন অন্তত ৫-৬ মন কম হবে।
সদর উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন- এক বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছি। আর কয়েকদিন পর কাটার কথা। এরমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি জমে ধান শুয়ে পড়েছে। পানিতে ধান ভাসছে। যেখানে বিঘাপ্রতি ২৫-২৬ মন ফলন হওয়ায়র কথ। এখন সেখানে ১৮-২০ মন ফলন হতে পারে।
লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন- গত ১৫দিন আগে ২ কাঠা জমিতে লাল শাক রোপন করেছি। এরমধ্যে ৩দিনের বৃষ্টিতে শাকগুলো মাটিতে হেলে পড়েছে। পঁচন ধরেছে। গাছ যদি ভাল হয় ৩০০-৫০০ টাকার মতো বিক্রি হবে। বৃষ্টি না হলে আড়াই হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো।
মান্দা উপজেলা সাটইল গ্রামের কৃষক রাইসুল ইসলাম বলেন- এক সপ্তাহ আগে জমিতে পেঁয়াজ ও রসুন রোপন করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জমিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। কিছু পেঁয়াজ ভেসে উঠেছে। এ গ্রামের মাঠে অধিকাংশ কৃষকের রসুন, পেঁয়াজ, আলু, সরিষা ও ধানের অবস্থা খুবই খারাপ।
ফসলের ক্ষতির পরিমান এখনো নিরুপন করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মন্ডল বলেন, সবেমাত্র আগাম জাতের আলু, পেঁয়াজ ও রসুন রোপন করা শুরু হয়েছে। এতে তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এছাড়া বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ক্ষতিকর পোকা মারা যাওয়ায় বৃষ্টি আর্শীবাদ বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অসময়ে বৃষ্টিতে নওগাঁয় ফসলের ক্ষতি

আপডেট সময় :

অসময়ে বৃষ্টিতে নওগাঁয় আগাম জাতের শাক-সবজি ও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসল নষ্ট হওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এখনো ক্ষতির পরিমান নিরুপন করতে পারেনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় আমন ধান চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে। আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়া আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার হেক্টর জমিতে।
জেলার বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের তথ্যমতে- জেলায় গত ৩দিনে গড় ৫০ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে গত শনিবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নওগাঁ সদর, মহাদেবপুর ও মান্দা উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলি জমিতে পানি জমেছে। যেসব জমিতে আগাম আলুর বীজ রোপন করা হয়েছে, সেসব জমিতে পানি জমায় বীজ পঁচে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা করছেন কৃষক। এছাড়াও আগাম জাতের শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বেগুন, মুলাসহ বিভিন্ন শাকসবজি এবং রসুন ও পিয়াজক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেছে। এছাড়াও পাকা ও আধাপাকা রোপা আমন ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
কৃষকরা বলছেন- হঠাৎ বৃষ্টিতে শীতকালীন আগাম জাতের শাকসবজির জমিতে পানি জমে থাকায় পঁচন ধরে নষ্ট হচ্ছে। রোপিত রসুন-পেঁয়াজ ও আলু ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকদিন পর রোপা আমন ধান কেটে ঘরে উঠানোর কথা। তার আগেই জমিতে পানি জমে ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় বিঘাতে ফলন অন্তত ৫-৬ মন কম হবে।
সদর উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন- এক বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেছি। আর কয়েকদিন পর কাটার কথা। এরমধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি জমে ধান শুয়ে পড়েছে। পানিতে ধান ভাসছে। যেখানে বিঘাপ্রতি ২৫-২৬ মন ফলন হওয়ায়র কথ। এখন সেখানে ১৮-২০ মন ফলন হতে পারে।
লক্ষণপুর গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন- গত ১৫দিন আগে ২ কাঠা জমিতে লাল শাক রোপন করেছি। এরমধ্যে ৩দিনের বৃষ্টিতে শাকগুলো মাটিতে হেলে পড়েছে। পঁচন ধরেছে। গাছ যদি ভাল হয় ৩০০-৫০০ টাকার মতো বিক্রি হবে। বৃষ্টি না হলে আড়াই হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো।
মান্দা উপজেলা সাটইল গ্রামের কৃষক রাইসুল ইসলাম বলেন- এক সপ্তাহ আগে জমিতে পেঁয়াজ ও রসুন রোপন করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জমিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। কিছু পেঁয়াজ ভেসে উঠেছে। এ গ্রামের মাঠে অধিকাংশ কৃষকের রসুন, পেঁয়াজ, আলু, সরিষা ও ধানের অবস্থা খুবই খারাপ।
ফসলের ক্ষতির পরিমান এখনো নিরুপন করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোমায়রা মন্ডল বলেন, সবেমাত্র আগাম জাতের আলু, পেঁয়াজ ও রসুন রোপন করা শুরু হয়েছে। এতে তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এছাড়া বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ক্ষতিকর পোকা মারা যাওয়ায় বৃষ্টি আর্শীবাদ বলে জানান তিনি।