আগামী ৬ মাস পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজন হবে না
- আপডেট সময় : ১১:১১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
সাশ্রয় হবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা
আমিনুল হক ভূইয়া
পেঁয়াজের সংকট কাটিয় ওঠছে বাংলাদশ। এরই মধ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে হালি পেঁয়াজ উঠত শুরু করেছে। রমজানর আগেই বাজারে মিলবে দেশি পঁয়াজ। এ কারণে আগামী ৬ মাস পেঁয়াজ আমদানির প্রয়াজন হবে না। পাশাপাশি সাশ্রয় হব বিপুল পরিমাণ বদশিক মুদ্রা।
বাংলাদশে প্রতি বছর ২৭-২৮ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। যার পুরোটাই স্থানীয়ভাব উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে উৎপাদিত মোট পেঁয়াজের ২০ থক ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর প্রায় ১০-১২ লাখ মট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। সুষ্ঠু রক্ষণা-বেক্ষণ করা সম্ভব হল বড়জোর বছর ৪-৫ লাখ মট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক শংকর চদ্র ঘাষ।
গণমুক্তির সঙ্গ আলাপকালে শংকর চদ্র ঘোষ বলন, মিয়ানমার, মিশর, তুরস্ক, চীন থেকে অল্প পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে থাক। ভারত থেকে সড়ক পথে পেঁয়াজ আমদানি সাশ্রয়ী হওয়ার কারণ বাংলাদশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন। তিনি বলন, পবিত্র রমজান মাস দোরগোড়ায়। রমজান উপলক্ষ্যে পণ্যের সংকট যেন সৃষ্টি না হয়, সেই লক্ষ্যে শুল্ক কমানো থেকে শুরু কর সব রকমর সুবিধা দিয়েছে সরকার। আমরা সেই সুবিধা অনুযায়ী এরই মধ্যে রমজান চাহিদা মাফিক পণ্য আমদানি করেছি এবং অধিকাংশ ব্যবসায়ীর পণ্য আমদানি সম্পন। এখন বাজারজাতের অপক্ষায়।
রমজান পেঁয়াজ, আদা, রসূন, খজুর, ছোলাসহ যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি তা যথষ্ট পরিমান মজুত রয়েছে। কোন পণ্যের ঘাটতি নেই বরং চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য মজুত থাকার কথা জানালেন এই ব্যবসায়ী। তিনি জানান, কোন কোন ক্ষেত্রে মধ্যসত্তভোগীরা গুজব সষ্টি কর। কোন রকমর গুজবে কান না দিতে ভোক্তাদের প্রতি অনুরাধ জানান এই ব্যবসায়ী।
বলেন, কোন পণ্যর দাম বেড়ে যাচ্ছে বা সংকট রয়েছে এমন কথা শোনার পর অস্থির হলে চলব না। বিষয়টি কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করা উচিৎ। বাংলাদশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৭-২৮ লাখ টন উল্লেখ করে শংকর চদ্র ঘোষ বলেন, এর পুরোটাই বাংলাদশে উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে প্রায় ২০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়।
পেঁয়াজ সংরক্ষণর বিষয়ে সরকার পদক্ষপ গ্রহণ এবং কৃষকের সঙ্গে কথা বলে সারা বছরের জন্য দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলে, এক কেজি পেঁয়াজও আমদানির প্রয়োজন হবে না। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত মূল্য পেলে প্রতি বছর পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ অতিরিক্ত উৎপাদন হবে। কারণ বাংলাদেশে প্রতি বছর যে পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা থাকে, তার সিংহভাগই স্থানীয়ভাবে পূরণ করা সম্ভব।
বাংলাদশে পেঁয়াজ আমদানির অধিকাংশই আসে ভারত থেকে। ভারত থেকে শুধু পেঁয়াজ নয়, বিভিন্ন ধরণর পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। এর মধ্য পেঁয়াজ, গম, সূতা, পাথর আমদানি হয় বেশী। এ অবস্থায় বাংলাদশ-ভারতের মধ্যে আলাচনার প্রেক্ষিত বাংলাদেশের জন্য কোটা ব্যবস্থা থাকা দরকার বলে মনে করেন বাংলাদেশের কেদ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১১-২০১২ হত ২০২২-২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ১০-১১ বছর পেঁয়াজ উৎপাদিত জমির পরিমাণ ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে প্রায় ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টন পঁয়াজ উৎপাদিত হয়।
তারপরও পেঁয়াজ নিয় এতোটা অস্থিরতা কেন? এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, কৃষকরা উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম কম পায়, সেক্ষেত্রে আর্থিকভাব ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। তাতে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারান। একারণে পরবর্তী বছরে উৎপাদন কম হয়। কৃষকের কথা মাথায় রেখে সঠিক পদক্ষপ গ্রহণ করা হলে পেঁয়াজ আমদানি থেক দেশ মুক্ত হব।