ঢাকা ১১:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে মুক্তাগাছায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান Logo স্ত্রীর ধোঁকায় যুবকের আত্মহনন Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo রাজবাড়ীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন Logo মাছরাঙা টেলিভিশনের বান্দরবানে ১৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপন Logo ভাণ্ডারিয়ায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট বিতরণ Logo নগরকান্দা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ ও পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি Logo দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক ২ জেলা প্রশাসকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান Logo শিবগঞ্জে নদীগর্ভে প্রায় ৮০টি বাড়ি, ঝুকিতে শতাধিক পরিবার

আবরার হত্যার ৫ বছর

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ২১৩ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হননি আবরার ফাহাদ।

পরে ঠিকানা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। তবে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

 

আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর (রোববার) রাতে এ হলেই ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। গতকালও ছিল ৬ অক্টোবর, দিনটিও ছিল রোববার। এরইমধ্যে কেটে গেছে পাঁচ বছর।

আবরার ফাহাদ স্মরণে আজ (সোমবার) শাহবাগে সংহতি সমাবেশ করা হবে। এ ছাড়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে পলাশী মোড়ে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। ২০২০ সালে আবরারকে স্মরণ করে স্তম্ভটি নির্মাণ করা হলেও ছাত্রলীগ তা ভেঙে দেয়।

আবরার ফাহাদের ফেসবুক প্রোফাইলের ইন্ট্রোতে লেখা রয়েছে, ‘অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে। ’ বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এ উক্তি দিয়েই তাকে স্মরণ করছেন।

২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ও ৫ অক্টোবর পানি চুক্তি, গ্যাস প্রদান ও বন্দর ব্যবহার সুবিধা- ইত্যাদি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি পোস্ট দেন আবরার। এর জের ধরেই তাকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন বলে জানা যায়।

২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের পোস্টে আবরার লেখেন, ‘কে বলে হিন্দুস্তান আমাদের কোনো প্রতিদান দেয় না। এই যে ৫০০ টন ইলিশ পাওয়া মাত্র ফারাক্কা খুলে দিয়েছে। এখন আমরা মনের সুখে পানি খাব আর বেশি বেশি ইলিশ পালব। ইনশাল্লাহ আগামী বছর এক্কেবারে ১০০১ টন ইলিশ পাঠাব। ’

৫ অক্টোবর তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘৪৭-এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মোংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সেই মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে। ’

‘কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েক বছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না, সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড় লাখ কিউবিক মিটার পানি দেব। ’

‘কয়েক বছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তর ভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে, অথচ আমরা তাদের গ্যাস দেব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে, সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব। ’

পরে এসব পোস্টের জের ধরে ‘শিবির’ (ইসলামী ছাত্রশিবির) সন্দেহে তার ওপর মারধর শুরু হয়।

যেদিন আবরারকে হত্যা করা হয়, সেদিন বিকেলে তিনি নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া থেকে হলে ফেরেন। পরে রাত ৮টার দিকে তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ নেতারা। এ সময় তার মোবাইল ও ল্যাপটপ চেক করে সেখানেই তাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হয়।

কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন চতুর্থ বর্ষের নেতারা। তারা আবরারকে আরেক দফা পেটান। একপর্যায়ে আবরারের দেহ নিথর হয়ে আসে। পরে হলের দোতলা ও নিচতলার মাঝামাঝি তার নিথর দেহ রেখে ছাত্রলীগ নেতারা রাতের খাবার খেতে যান। এরপর তারা নিশ্চিত হন, আবরার আর বেঁচে নেই।

আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের পর ২৬ জন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বুয়েট থেকে বহিষ্কার করে প্রশাসন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

এ হত্যা মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। তাদের মধ্যে মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার মনে করছেন ভারতের ‘আগ্রাসী’ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জবাব দিয়ে আবরার ফাহাদ ‘আপসহীন বাংলাদেশের আইকন’-এ পরিণত হয়েছেন।

আবু বাকের বাংলানিউজকে বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র পরিকল্পিতই নয়, এরপর অনেক ঘটনা আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আবরার বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সামনে রেখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠের কারণে তাকে হত্যা করা হয়।

তিনি বলেন, তিনি আপসহীন বাংলাদেশের আইকন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের মতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আগামীর বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো যেন সন্ত্রাসের কারখানা না হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আবরার হত্যার ৫ বছর

আপডেট সময় :

 

স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হওয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হননি আবরার ফাহাদ।

পরে ঠিকানা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। তবে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

 

আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর (রোববার) রাতে এ হলেই ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। গতকালও ছিল ৬ অক্টোবর, দিনটিও ছিল রোববার। এরইমধ্যে কেটে গেছে পাঁচ বছর।

আবরার ফাহাদ স্মরণে আজ (সোমবার) শাহবাগে সংহতি সমাবেশ করা হবে। এ ছাড়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে পলাশী মোড়ে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। ২০২০ সালে আবরারকে স্মরণ করে স্তম্ভটি নির্মাণ করা হলেও ছাত্রলীগ তা ভেঙে দেয়।

আবরার ফাহাদের ফেসবুক প্রোফাইলের ইন্ট্রোতে লেখা রয়েছে, ‘অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে। ’ বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এ উক্তি দিয়েই তাকে স্মরণ করছেন।

২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ও ৫ অক্টোবর পানি চুক্তি, গ্যাস প্রদান ও বন্দর ব্যবহার সুবিধা- ইত্যাদি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি পোস্ট দেন আবরার। এর জের ধরেই তাকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন বলে জানা যায়।

২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের পোস্টে আবরার লেখেন, ‘কে বলে হিন্দুস্তান আমাদের কোনো প্রতিদান দেয় না। এই যে ৫০০ টন ইলিশ পাওয়া মাত্র ফারাক্কা খুলে দিয়েছে। এখন আমরা মনের সুখে পানি খাব আর বেশি বেশি ইলিশ পালব। ইনশাল্লাহ আগামী বছর এক্কেবারে ১০০১ টন ইলিশ পাঠাব। ’

৫ অক্টোবর তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘৪৭-এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মোংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সেই মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে। ’

‘কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েক বছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না, সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড় লাখ কিউবিক মিটার পানি দেব। ’

‘কয়েক বছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তর ভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে, অথচ আমরা তাদের গ্যাস দেব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে, সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব। ’

পরে এসব পোস্টের জের ধরে ‘শিবির’ (ইসলামী ছাত্রশিবির) সন্দেহে তার ওপর মারধর শুরু হয়।

যেদিন আবরারকে হত্যা করা হয়, সেদিন বিকেলে তিনি নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া থেকে হলে ফেরেন। পরে রাত ৮টার দিকে তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে পাঠান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ নেতারা। এ সময় তার মোবাইল ও ল্যাপটপ চেক করে সেখানেই তাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হয়।

কিছুক্ষণ পর সেখানে আসেন চতুর্থ বর্ষের নেতারা। তারা আবরারকে আরেক দফা পেটান। একপর্যায়ে আবরারের দেহ নিথর হয়ে আসে। পরে হলের দোতলা ও নিচতলার মাঝামাঝি তার নিথর দেহ রেখে ছাত্রলীগ নেতারা রাতের খাবার খেতে যান। এরপর তারা নিশ্চিত হন, আবরার আর বেঁচে নেই।

আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের পর ২৬ জন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বুয়েট থেকে বহিষ্কার করে প্রশাসন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

এ হত্যা মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ। তাদের মধ্যে মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা ও ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার মনে করছেন ভারতের ‘আগ্রাসী’ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে জবাব দিয়ে আবরার ফাহাদ ‘আপসহীন বাংলাদেশের আইকন’-এ পরিণত হয়েছেন।

আবু বাকের বাংলানিউজকে বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র পরিকল্পিতই নয়, এরপর অনেক ঘটনা আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। আবরার বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ সামনে রেখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠের কারণে তাকে হত্যা করা হয়।

তিনি বলেন, তিনি আপসহীন বাংলাদেশের আইকন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের মতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আগামীর বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো যেন সন্ত্রাসের কারখানা না হয়।