ঢাকা ০৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অর্থনীতি

আমদানির পরও কমেনি ডিমের দাম, পিসে বেড়েছে ৪ টাকা

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪ ৭৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

সিন্ডিকের কবলে পড়ে পণ্যমূল্যের বাজার যখন আমজনতার নাগালের বাইরে, তখন প্রথম বারের মতো ডিম ও আলু আমদানির নতুন সংস্কৃতির উদ্বোধন করে আওয়ামী সরকার। আমদানির ঠিকানা ভারত।

তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্ত হয়ে হাসি মুখে জানালেন, সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গার শক্তি সরকারের নেই। তাই পণ্যমূল্য হাতের নাগালে রাখ ডিম ও আলু আমদানির অনুমোতি দেওয়া হয়।

কেউ কেউ বলছেন, বর্তমানে দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেটের থাবায় পণ্যমূল্য আকাশচুম্বি। একশ’ টাকার নিচে কোন কোন সব্জি মিলছে না। সাধারণ মানুষের এই দূরবস্থা নিরসনে প্রশাসনের তরফে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, উচ্চমূল্যে কিনে আনার কারণেই খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ছে।

গবিরের পুষ্টির উৎস্য ডিমের তো রীতিমত নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অথচ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখ বৈদেশি মুদ্রা ব্যয়ে ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমোতি দেওয়া হয়েঠিলো। কিন্তু তাতে দাম কমার পরিবর্তে ডিম প্রতি বেড়েছে ৩-৪ টাকা পর্যন্ত।

আমদানি হলেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ বাজারে দাম কমেনি। বরং প্রতি পিস ডিমের দাম চার টাকা বেড়ে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা ডিমগুলো সাদা রঙের এবং এসব ডিম সাধারণত কিনে থাকেন বেকারি মালিকরা। সাধারণ ভোক্তারা বাদামি রঙের ডিম বেশি পছন্দ করেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকার ওপরে।

আমদানি করা পণ্য সাধারণত পাইকারি বাজারে দাম কমায়, তবে এবার ডিমের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) যশোরের বেনাপোল ও নাভারণ বাজারে পাইকাররা ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে। ভারত থেকে ডিম আমদানি হলেও পাইকারি বাজারে এর কোনও প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

সাদা ডিম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিন ১ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর ৬১ হাজার ৯৫০ পিস, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস, ৬ অক্টোবর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ও ৭ অক্টোবর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।

এ নিয়ে চার চালানে মোট ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪৭০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তা ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা সাদা রঙের ডিমের চাহিদা কম। সাদা ডিম আমদানি হলেও ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমছে না।

বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার বিনয় কৃষ্ণ মন্ডল জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিন লাখ লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সাদা ডিমের দাম কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা বেশি। কিন্তু দেশে বাদামি ডিমের চাহিদা বেশি। বাদামি ডিমের ওজন ৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম হয়ে থাকে, আর সাদা ডিমের ওজন ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম।

বেনাপোল ডিম ব্যবসায়ীদের সভাপতি নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে এবং চাহিদাও ভালো। তবে বাড়তি দরে ডিম কিনতে হচ্ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়ছে।

শার্শার নাভারণ এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডিমের দামে কোনও কারসাজি হচ্ছে কিনা তাও যাচাই করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অর্থনীতি

আমদানির পরও কমেনি ডিমের দাম, পিসে বেড়েছে ৪ টাকা

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

 

সিন্ডিকের কবলে পড়ে পণ্যমূল্যের বাজার যখন আমজনতার নাগালের বাইরে, তখন প্রথম বারের মতো ডিম ও আলু আমদানির নতুন সংস্কৃতির উদ্বোধন করে আওয়ামী সরকার। আমদানির ঠিকানা ভারত।

তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্ত হয়ে হাসি মুখে জানালেন, সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গার শক্তি সরকারের নেই। তাই পণ্যমূল্য হাতের নাগালে রাখ ডিম ও আলু আমদানির অনুমোতি দেওয়া হয়।

কেউ কেউ বলছেন, বর্তমানে দেশি-বিদেশি সিন্ডিকেটের থাবায় পণ্যমূল্য আকাশচুম্বি। একশ’ টাকার নিচে কোন কোন সব্জি মিলছে না। সাধারণ মানুষের এই দূরবস্থা নিরসনে প্রশাসনের তরফে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, উচ্চমূল্যে কিনে আনার কারণেই খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ছে।

গবিরের পুষ্টির উৎস্য ডিমের তো রীতিমত নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অথচ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখ বৈদেশি মুদ্রা ব্যয়ে ভারত থেকে ডিম আমদানির অনুমোতি দেওয়া হয়েঠিলো। কিন্তু তাতে দাম কমার পরিবর্তে ডিম প্রতি বেড়েছে ৩-৪ টাকা পর্যন্ত।

আমদানি হলেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ বাজারে দাম কমেনি। বরং প্রতি পিস ডিমের দাম চার টাকা বেড়ে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা ডিমগুলো সাদা রঙের এবং এসব ডিম সাধারণত কিনে থাকেন বেকারি মালিকরা। সাধারণ ভোক্তারা বাদামি রঙের ডিম বেশি পছন্দ করেন। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকার ওপরে।

আমদানি করা পণ্য সাধারণত পাইকারি বাজারে দাম কমায়, তবে এবার ডিমের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) যশোরের বেনাপোল ও নাভারণ বাজারে পাইকাররা ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে। ভারত থেকে ডিম আমদানি হলেও পাইকারি বাজারে এর কোনও প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

সাদা ডিম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিন ১ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর ৬১ হাজার ৯৫০ পিস, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস, ৬ অক্টোবর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ও ৭ অক্টোবর ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে।

এ নিয়ে চার চালানে মোট ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪৭০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তা ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা সাদা রঙের ডিমের চাহিদা কম। সাদা ডিম আমদানি হলেও ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমছে না।

বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার বিনয় কৃষ্ণ মন্ডল জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিন লাখ লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সাদা ডিমের দাম কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা বেশি। কিন্তু দেশে বাদামি ডিমের চাহিদা বেশি। বাদামি ডিমের ওজন ৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম হয়ে থাকে, আর সাদা ডিমের ওজন ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম।

বেনাপোল ডিম ব্যবসায়ীদের সভাপতি নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে এবং চাহিদাও ভালো। তবে বাড়তি দরে ডিম কিনতে হচ্ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়ছে।

শার্শার নাভারণ এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াসিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রসিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কিনা সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডিমের দামে কোনও কারসাজি হচ্ছে কিনা তাও যাচাই করা হবে।