ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

একজন সালমান শাহ ও গনমাধ্যম

হালিম মোহাম্মদ
  • আপডেট সময় : ৫৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভর দুপুরে ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের রোগীর রেজিষ্টার দেখছিলাম। হঠাৎ করেই তিন চারজন হুড়মুড় করে একজন যুবককে পাঁজাকোলা করে জরুরী বিভাগে ট্রলি ট্রলি বলে চিৎকার করছিলো। এসময় তাদের চিৎকারে একাধিক বয় ট্রলি নিয়ে গেলে যুবককে ট্রলিতে তোলা হয়। গেটের ভেতরে নিতেই চেনা গেলো এটা নায়ক সালমান শাহ। ট্রলিতে সংগাহীন অবস্থায় সালমানের নিথর দেহ পড়ে আছে। চিকিৎসক এসে গলায় ও হাতে ধরে পালস পেলো না। টেথিসস্কোপ ও বিপি মেশিন দিয়ে চেষ্টা করেও বিফলে গেলো। পড়ে তার বুকে হাত রেখে চেপে চেষ্টা করেও কাজ হলো না। ততক্ষনে আস্তে আস্তে সালমান শাহের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। এসময় সালমান শাহ খালি গায়ে ছিলেন। ভেজা শরীরে যেন কাঁচা হলুদের রং ধরেছে। পড়নে ছিল কালো রংয়ের ফুল প্যান্ট। ফুল প্যাণ্টের নীচের অংশ গুটানো ছিল। মাথার লম্বা চুল পেছনের দিকে ঝুটি বাঁধা ছিল। গলায় ছিল একটি চিকন স্বর্ণের চেইন। খবর পেয়ে শুভাকাংখি এবং ভক্তরা জরুরী বিভাগে ভীড় করতে শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে আমি শিল্পী সমিতির তৎকালিন সভাপতি খলনায়ক আহমেদ শরীফকে মুঠোফোনে খবর জানাই। পাশাপাশি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহরাব উদ্দিন খানকেও অবহিত করি। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি সালমান শাহের মরদেহ দ্রুত জরুরী বিভাগ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে স্থানান্তর করা হয়। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ও রমনা জোনের ডিসিকে বলা হয়। এরপরই পুলিশ ও গোয়েন্দারা হাসপাতাল মর্গ এলাকা নিরাপত্তাবলয়ে নেয়া হয়। তারপরও ঢুকতে না পেরে হাসপাতালের গেটে ভাংচুর ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
বিকেল সাড়ে চারটায় ময়না তদন্ত শেষে আইন শৃংখলা বাহিনীর সতর্ক পাহারায় তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় এফডিসিতে। সেখানে ডাবিং ভবনের পাশে ঝরনার পাড়ে খোলা জায়গায় তার লাশের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ শেষে মোনাজাতের সময় এফডিসিতে কর্মরত কর্মচারী ও প্রোডাশন বয় ক্যান্টিন বয় মিলে প্রায় শতাধিক যুবক লাঠি সোঠা নিয়ে এফডিসির ভেতরে থাকা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়। তাদেও অভিযোগ, সাংবাদিকদের লেখালেখিরকারণে তাদের প্রানের নায়ক সালমান শাহ মারা গেছেন। এ সময় তারা সাংবাদিকদের ধাওয়া এবং বেধড়ক পিটুনি দেয়। নিয়ে যায় টাকা ঘড়ি আংটি চেইন। এঘটনায় আহত হন মানব জমিনের কাজী বোরহান উদ্দিন, আজকের কাগজের হালিম মোহাম্মদ, ইকবাল হাসান নান্টু, ইয়াসিন কবীর জয়, আক্তার হোসেন, গোলাম মোস্তফাসহ অনেকে। এসময় প্রানে বাঁচতে পাশের শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। এসময় সমিতির প্রেস সেক্রটারী মেহদী আজাদ মাসুম সাংবাদিকদের তার কার্যালয়ে রিখে নিরাপত্তা দেন। অনেক পর তেজগাঁও থানা পুলিশ এফডিসিতে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপরই সালমান শাহের মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে সিলেটে রওয়ানা হয়ে যান। প্রাণের সালমান শাহের অকাল মৃত্যু সহজ ভাবে নিতে পারেনি কোটি ভক্ত। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় অর্ধশত তরুন তরুনী আত্মহত্যা করেছিল। পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর দেশের সকল জাতীয় পত্রিকায় আত্মহত্যার খবর ছাপা হয়েছিল।
এবিষয়ে গতকাল খল নায়ক আহমেদ শরীফ বলেন, সালমান শাহর লাশ দেখে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। আমার শরীর অবস হয়ে যাচ্ছিল। আমি দ্রুত মাটিতে বসে পড়েছিলাম। তিনি বলেন, ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে এক অবিনশ্বর নাম সালমান শাহ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা দিয়ে জয় করেছিলেন কোটি দর্শকের হৃদয়। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার অকাল মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো চলচ্চিত্র অঙ্গন। সময় গড়িয়েছে প্রায় ৩ দশক, তবু সেই বেদনা আজও তাজা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগে ভেসে যান। সালমান শাহর মৃত্যুর দিনটির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার মতে, দেশে যত নায়ক এসেছে, তাদের মধ্যে সালমান শাহ সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আমি তখন শুটিং করছিলাম। হঠাৎ খবর এল। আমার পরিচিত একজন সাংবাদিক বলেন, সালমান শাহ মারা গেছে। বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, যেন আকাশ ভেঙে পড়ল মাথার ওপর।
তিনি আরও বলেন, যতটুকু মনে পড়ে, সালমান শাহ স্ট্রেচারে শুয়ে ছিল। গায়ে কোনো জামা ছিল না, শুধু গলায় ছিল একটি চেইন। আমি কাছে যেতে চাইছিলাম, কিন্তু পারছিলাম না। মনটা এত ভারী হয়ে গিয়েছিল যে অজান্তেই মাটিতে বসে পড়েছিলাম। সেই মুহূর্তের স্মৃতি এখনো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় বলে জানান আহমেদ শরীফ। ওর চলে যাওয়া শুধু একটা মৃত্যুর খবর ছিল না, ছিল পুরো চলচ্চিত্রের এক যুগের অবসান।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর ইস্কাটন প্লাজার নিজ ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে বিষয়টি আত্মহত্যা হিসেবে ধরা হলেও, দীর্ঘ তদন্ত ও পারিবারিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি বর্তমানে হত্যা মামলা হিসেবে পুনর্গঠিত হয়েছে। আজও ভক্তদের চোখে সালমান শাহ শুধু এক অভিনেতা নন, তিনি এক কিংবদন্তি, যার মৃত্যুর রহস্য যেমন অমীমাংসিত, তেমনি তার জনপ্রিয়তাও সময়ের সঙ্গে আরও গভীর হয়ে উঠেছে। সালমান শাহ মৃত্যুর আগে সর্বশেষ মগবাজার চৌরাস্তার পাশে মিডাকো চায়নিজ রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এর কয়েকদিন পরই সালমান শাহের মৃত্যু ঘটে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

একজন সালমান শাহ ও গনমাধ্যম

আপডেট সময় :

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভর দুপুরে ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের রোগীর রেজিষ্টার দেখছিলাম। হঠাৎ করেই তিন চারজন হুড়মুড় করে একজন যুবককে পাঁজাকোলা করে জরুরী বিভাগে ট্রলি ট্রলি বলে চিৎকার করছিলো। এসময় তাদের চিৎকারে একাধিক বয় ট্রলি নিয়ে গেলে যুবককে ট্রলিতে তোলা হয়। গেটের ভেতরে নিতেই চেনা গেলো এটা নায়ক সালমান শাহ। ট্রলিতে সংগাহীন অবস্থায় সালমানের নিথর দেহ পড়ে আছে। চিকিৎসক এসে গলায় ও হাতে ধরে পালস পেলো না। টেথিসস্কোপ ও বিপি মেশিন দিয়ে চেষ্টা করেও বিফলে গেলো। পড়ে তার বুকে হাত রেখে চেপে চেষ্টা করেও কাজ হলো না। ততক্ষনে আস্তে আস্তে সালমান শাহের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। এসময় সালমান শাহ খালি গায়ে ছিলেন। ভেজা শরীরে যেন কাঁচা হলুদের রং ধরেছে। পড়নে ছিল কালো রংয়ের ফুল প্যান্ট। ফুল প্যাণ্টের নীচের অংশ গুটানো ছিল। মাথার লম্বা চুল পেছনের দিকে ঝুটি বাঁধা ছিল। গলায় ছিল একটি চিকন স্বর্ণের চেইন। খবর পেয়ে শুভাকাংখি এবং ভক্তরা জরুরী বিভাগে ভীড় করতে শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে আমি শিল্পী সমিতির তৎকালিন সভাপতি খলনায়ক আহমেদ শরীফকে মুঠোফোনে খবর জানাই। পাশাপাশি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহরাব উদ্দিন খানকেও অবহিত করি। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি সালমান শাহের মরদেহ দ্রুত জরুরী বিভাগ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে স্থানান্তর করা হয়। পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ও রমনা জোনের ডিসিকে বলা হয়। এরপরই পুলিশ ও গোয়েন্দারা হাসপাতাল মর্গ এলাকা নিরাপত্তাবলয়ে নেয়া হয়। তারপরও ঢুকতে না পেরে হাসপাতালের গেটে ভাংচুর ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
বিকেল সাড়ে চারটায় ময়না তদন্ত শেষে আইন শৃংখলা বাহিনীর সতর্ক পাহারায় তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় এফডিসিতে। সেখানে ডাবিং ভবনের পাশে ঝরনার পাড়ে খোলা জায়গায় তার লাশের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ শেষে মোনাজাতের সময় এফডিসিতে কর্মরত কর্মচারী ও প্রোডাশন বয় ক্যান্টিন বয় মিলে প্রায় শতাধিক যুবক লাঠি সোঠা নিয়ে এফডিসির ভেতরে থাকা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়। তাদেও অভিযোগ, সাংবাদিকদের লেখালেখিরকারণে তাদের প্রানের নায়ক সালমান শাহ মারা গেছেন। এ সময় তারা সাংবাদিকদের ধাওয়া এবং বেধড়ক পিটুনি দেয়। নিয়ে যায় টাকা ঘড়ি আংটি চেইন। এঘটনায় আহত হন মানব জমিনের কাজী বোরহান উদ্দিন, আজকের কাগজের হালিম মোহাম্মদ, ইকবাল হাসান নান্টু, ইয়াসিন কবীর জয়, আক্তার হোসেন, গোলাম মোস্তফাসহ অনেকে। এসময় প্রানে বাঁচতে পাশের শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। এসময় সমিতির প্রেস সেক্রটারী মেহদী আজাদ মাসুম সাংবাদিকদের তার কার্যালয়ে রিখে নিরাপত্তা দেন। অনেক পর তেজগাঁও থানা পুলিশ এফডিসিতে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপরই সালমান শাহের মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে সিলেটে রওয়ানা হয়ে যান। প্রাণের সালমান শাহের অকাল মৃত্যু সহজ ভাবে নিতে পারেনি কোটি ভক্ত। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় অর্ধশত তরুন তরুনী আত্মহত্যা করেছিল। পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর দেশের সকল জাতীয় পত্রিকায় আত্মহত্যার খবর ছাপা হয়েছিল।
এবিষয়ে গতকাল খল নায়ক আহমেদ শরীফ বলেন, সালমান শাহর লাশ দেখে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। আমার শরীর অবস হয়ে যাচ্ছিল। আমি দ্রুত মাটিতে বসে পড়েছিলাম। তিনি বলেন, ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে এক অবিনশ্বর নাম সালমান শাহ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমা দিয়ে জয় করেছিলেন কোটি দর্শকের হৃদয়। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার অকাল মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো চলচ্চিত্র অঙ্গন। সময় গড়িয়েছে প্রায় ৩ দশক, তবু সেই বেদনা আজও তাজা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় খল অভিনেতা আহমেদ শরীফ স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগে ভেসে যান। সালমান শাহর মৃত্যুর দিনটির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার মতে, দেশে যত নায়ক এসেছে, তাদের মধ্যে সালমান শাহ সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আমি তখন শুটিং করছিলাম। হঠাৎ খবর এল। আমার পরিচিত একজন সাংবাদিক বলেন, সালমান শাহ মারা গেছে। বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, যেন আকাশ ভেঙে পড়ল মাথার ওপর।
তিনি আরও বলেন, যতটুকু মনে পড়ে, সালমান শাহ স্ট্রেচারে শুয়ে ছিল। গায়ে কোনো জামা ছিল না, শুধু গলায় ছিল একটি চেইন। আমি কাছে যেতে চাইছিলাম, কিন্তু পারছিলাম না। মনটা এত ভারী হয়ে গিয়েছিল যে অজান্তেই মাটিতে বসে পড়েছিলাম। সেই মুহূর্তের স্মৃতি এখনো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় বলে জানান আহমেদ শরীফ। ওর চলে যাওয়া শুধু একটা মৃত্যুর খবর ছিল না, ছিল পুরো চলচ্চিত্রের এক যুগের অবসান।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর ইস্কাটন প্লাজার নিজ ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে বিষয়টি আত্মহত্যা হিসেবে ধরা হলেও, দীর্ঘ তদন্ত ও পারিবারিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি বর্তমানে হত্যা মামলা হিসেবে পুনর্গঠিত হয়েছে। আজও ভক্তদের চোখে সালমান শাহ শুধু এক অভিনেতা নন, তিনি এক কিংবদন্তি, যার মৃত্যুর রহস্য যেমন অমীমাংসিত, তেমনি তার জনপ্রিয়তাও সময়ের সঙ্গে আরও গভীর হয়ে উঠেছে। সালমান শাহ মৃত্যুর আগে সর্বশেষ মগবাজার চৌরাস্তার পাশে মিডাকো চায়নিজ রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এর কয়েকদিন পরই সালমান শাহের মৃত্যু ঘটে।