ঢাকা ০২:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জাকসুতে ৪০ ঘণ্টার নাটকীয়তা Logo কাশিয়ানীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার Logo মহেশখালীতে হত্যা চেষ্টা ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার ৭ আসামি গ্রেপ্তার Logo ইসলামপুরে মিথ্যাচার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo সালথা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি নাহিদ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল Logo কালীগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময় সভা Logo রুপগঞ্জে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ দুই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড Logo বাগেরহাটে বিআরটিসি গাড়ির অবৈধ কাউন্টার ও মহাসড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন, করিমন বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo জামালপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশ ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বড়াইগ্রাম শাখা অফিস শুভ উদ্বোধন

ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শণ হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ

এম. এ. জলিল রানা, জয়পুরহাট
  • আপডেট সময় : ৪৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত, উত্তরাঞ্চলের সীমান্তের কোলঘেষা ছোট্ট জেলা শহর জয়পুরহাট।এই জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নান্দনিক শৈলীর অন্যতম এক নিদর্শ ‘হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ’।জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র থেকে মাত্র ১৫ কি:মি দূরে উপজেলার হিন্দা গ্রামে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত চোখ জুড়ানো নান্দনিক এই মসজিদটি। মসজিদের চোখ ধাঁধাঁনো অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য স্থানীয়দের কাছে তো বটেই, পর্যটকদের কাছেও এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি শুক্রবার জেলা ও জেলার বাইরে থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের জন্য ছুটে আসেন এই মসজিদে।
জানা যায়, বাংলা ১৩৬৫ সালে বাগমারী পীর হিসেবে পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর হজরত আব্দুল গফুর চিশতির (রহ:) নির্দেশে মাওলানা আব্দুল খালেক চিশতির তত্ত্বাবধানে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। আর এই মসজিদের নকশা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হযর আব্দুল কাদের ।
মসজিদটির বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর অবকাঠামোগত নির্মাণ কৌশল শৈলী। মসজিদের বাইরের দেয়ালে রয়েছে পোড়ামাটি, কাঁচ ও চীনামাটির টুকরার সমন্বয়ে বিভিন্ন খোদাই করা নকশা । দিনে যখন সূর্যের আলো মসজিদের দেয়ালে পড়ে, দিনের আলোয় তখন ফুটে ওঠে এর কারুকাজ শৈলীর প্রকৃত সৌন্দর্য। সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠা মসজিদের নজরকাড়া অপরুপ সৌন্দর্য মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই মসজিদের কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯.৫০ ও প্রস্থ ২২.৫০ ফুট।
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের (খুঁটি) কথা চিন্তা করে মসজিদে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। এর মধ্যে একটি বড় ও চারপাশে রয়েছে চারটি ছোট গম্বুজ । এগুলো তৈরি করা হয়েছে রড ছাড়াই। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে ৪০ ফুট লম্বা মিনার। আর মিনারটির নিচে ছোট্ট একটি কক্ষ রয়েছে যেখান থেকে প্রচার করা হয় আজান।ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নির্মাণ শৈলীর দিকে তাকালেই সুশ্পষ্ট হয়ে উঠে যে,মসজিদটি নির্মিাণে অনুসরণ করা হয়েছে মুঘল স্থাপত্যরীতি।
মসজিদের পূর্বপাশে রয়েছে হজরত শাহ্ সুলতান বলখি (রহ:) এর চারজন শিষ্যের মাজার, যারা ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন এ অঞ্চলে। চারটি মাজারের মধ্যে দু’টির পরিচয় জানা গেলেও বাকি দু’টির পরিচয় এখনো অজানায় রয়ে গেছে। জানা মাজার দু’টির একটি হজরত শাহ কালামজি (রহ:) এবং অন্যটি হজরত শাহ এলেমজি (রহ:)এর। মাজার দু’টির বিশেষত্ব হলো সাধারণ কবর থেকে এ কবরগুলো অনেক লম্বা। প্রতি শুক্রবার তো বটেই, সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতেও দূরদুরান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে, তাদের পদচারনায় মূখরিত হয়ে উঠে মসজিদ প্রাঙ্গণ সহ এলাকাটি।
দূরের ও কাছের আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীরা বলেন,ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নির্মাণ শৈলী ও ধর্মীয় নিদর্শণ দেখার জন্য আমরা এখানে এসেছি,সব কিছু মিলে এই দর্শনীয় স্থানটি অনেক সুন্দর কিন্তু দর্শনার্থীদের জন্য এখানে বসার কোন পরিবেশ নেই আর খাবারের ও কোন রেষ্টুরেন্ট নেই,দর্শনার্থীদের জন্য এই দু’টি জিনিস অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চার্জে থাকা সহকারী কমিশনার ভূমি (ক্ষেতলাল এ সি ল্যান্ড) জিন্নাতুল আরা বলেন,মসজিদটি আমি বাহির থেকে দেকেছি,ভেতরে যাওয়া হয়নি।আর এসব বিষয় নিয়ে কখনো কাউকে কিছু বলতেও শুনিনি,এই প্রথম শুনলাম।তবে দর্শনার্থীদের জন্য বসার পরিবেশ ও খাবারের রেষ্টুরেন্ট বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার বা এলাকার লোকজন যদি স্যারের কাছে আবেদন করেন তবে বিষয়টি তিনি দেখবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শণ হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ

আপডেট সময় :

রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত, উত্তরাঞ্চলের সীমান্তের কোলঘেষা ছোট্ট জেলা শহর জয়পুরহাট।এই জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নান্দনিক শৈলীর অন্যতম এক নিদর্শ ‘হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ’।জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র থেকে মাত্র ১৫ কি:মি দূরে উপজেলার হিন্দা গ্রামে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত চোখ জুড়ানো নান্দনিক এই মসজিদটি। মসজিদের চোখ ধাঁধাঁনো অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য স্থানীয়দের কাছে তো বটেই, পর্যটকদের কাছেও এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি শুক্রবার জেলা ও জেলার বাইরে থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের জন্য ছুটে আসেন এই মসজিদে।
জানা যায়, বাংলা ১৩৬৫ সালে বাগমারী পীর হিসেবে পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর হজরত আব্দুল গফুর চিশতির (রহ:) নির্দেশে মাওলানা আব্দুল খালেক চিশতির তত্ত্বাবধানে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। আর এই মসজিদের নকশা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হযর আব্দুল কাদের ।
মসজিদটির বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর অবকাঠামোগত নির্মাণ কৌশল শৈলী। মসজিদের বাইরের দেয়ালে রয়েছে পোড়ামাটি, কাঁচ ও চীনামাটির টুকরার সমন্বয়ে বিভিন্ন খোদাই করা নকশা । দিনে যখন সূর্যের আলো মসজিদের দেয়ালে পড়ে, দিনের আলোয় তখন ফুটে ওঠে এর কারুকাজ শৈলীর প্রকৃত সৌন্দর্য। সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠা মসজিদের নজরকাড়া অপরুপ সৌন্দর্য মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই মসজিদের কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯.৫০ ও প্রস্থ ২২.৫০ ফুট।
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের (খুঁটি) কথা চিন্তা করে মসজিদে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। এর মধ্যে একটি বড় ও চারপাশে রয়েছে চারটি ছোট গম্বুজ । এগুলো তৈরি করা হয়েছে রড ছাড়াই। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে ৪০ ফুট লম্বা মিনার। আর মিনারটির নিচে ছোট্ট একটি কক্ষ রয়েছে যেখান থেকে প্রচার করা হয় আজান।ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নির্মাণ শৈলীর দিকে তাকালেই সুশ্পষ্ট হয়ে উঠে যে,মসজিদটি নির্মিাণে অনুসরণ করা হয়েছে মুঘল স্থাপত্যরীতি।
মসজিদের পূর্বপাশে রয়েছে হজরত শাহ্ সুলতান বলখি (রহ:) এর চারজন শিষ্যের মাজার, যারা ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন এ অঞ্চলে। চারটি মাজারের মধ্যে দু’টির পরিচয় জানা গেলেও বাকি দু’টির পরিচয় এখনো অজানায় রয়ে গেছে। জানা মাজার দু’টির একটি হজরত শাহ কালামজি (রহ:) এবং অন্যটি হজরত শাহ এলেমজি (রহ:)এর। মাজার দু’টির বিশেষত্ব হলো সাধারণ কবর থেকে এ কবরগুলো অনেক লম্বা। প্রতি শুক্রবার তো বটেই, সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতেও দূরদুরান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে, তাদের পদচারনায় মূখরিত হয়ে উঠে মসজিদ প্রাঙ্গণ সহ এলাকাটি।
দূরের ও কাছের আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীরা বলেন,ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নির্মাণ শৈলী ও ধর্মীয় নিদর্শণ দেখার জন্য আমরা এখানে এসেছি,সব কিছু মিলে এই দর্শনীয় স্থানটি অনেক সুন্দর কিন্তু দর্শনার্থীদের জন্য এখানে বসার কোন পরিবেশ নেই আর খাবারের ও কোন রেষ্টুরেন্ট নেই,দর্শনার্থীদের জন্য এই দু’টি জিনিস অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমরা মনে করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চার্জে থাকা সহকারী কমিশনার ভূমি (ক্ষেতলাল এ সি ল্যান্ড) জিন্নাতুল আরা বলেন,মসজিদটি আমি বাহির থেকে দেকেছি,ভেতরে যাওয়া হয়নি।আর এসব বিষয় নিয়ে কখনো কাউকে কিছু বলতেও শুনিনি,এই প্রথম শুনলাম।তবে দর্শনার্থীদের জন্য বসার পরিবেশ ও খাবারের রেষ্টুরেন্ট বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার বা এলাকার লোকজন যদি স্যারের কাছে আবেদন করেন তবে বিষয়টি তিনি দেখবেন।