ঢাকা ০৫:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::

কটিয়াদীতে মাইকিং করেও এক কেজি ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অফিস

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০২:২৪:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলতি আমন মৌসুমে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে মাইকিং, লিফলেট ও অনলাইন বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য অফিস। সরকার প্রতিমন ধানের মূল্য ১ হাজার ৩ শত ২০ টাকা নিধারণ করেছে। অথচ খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫শত ২০ টাকা দরে । সরকারি খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান ও চালের দাম বেশি। এ কারণে কৃষকরা ডিলারদের কাছে বিক্রি না করায় সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। এবার আমন মৌসুমে উপজেলা খাদ্য গুদাম ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিস জানায়, চলতি আমন মৌসুমের ধান সরকারি গুদামে সংগ্রহের জন্য ১৭ নভেম্ববর ২০২৪ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ৯টি ইউনিয়নের কৃষকদের থেকে ৯১৩ মেট্রিকটন ধান ও ৫৫৯ মেট্রিকটন মোটা চাল ক্রয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে কৃষক ও মিলারদের সাড়া মেলেনি মোটেও। উদ্বোধনের পর গুদামে মিলারদের থেকে ৩শ মেট্রিকটন চাল ক্রয় করলেও গত ২ মাস ২৫ দিনে গুদামে ধান সংগ্রহ হয়নি এক কেজিও। খাদ্যগুদামে উপজেলার কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি প্রতি মণ ধান এক হাজার ৩২০ টাকা ও মোটা চাল ১ হাজার ৮ শত ৮০ টাকা দরে ক্রয় করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বর্তমানে ধান এক হাজার পাঁচশ বিশ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।

মসূয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. খাইরুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেন জানান, স্থানীয় বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, গুদামে সে দাম দেয়া হচ্ছে না। গুদামের চেয়ে স্থানীয় বাজারে মনপ্রতি ধানের দাম কমপক্ষে দুই-তিন শ’ টাকা বেশি। সরকার এক কেজি মোটা চালের দাম ৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। অথচ তা উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ৫০-৫২ টাকা। এর সাথে ক্রয় কেন্দ্রে আনা-নেয়া ও শ্রমিক খরচে লোকসান হয় প্রতি কেজিতে ৬-৭ টাকা করে। সরকার ধানের দর ৩৩ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দিয়েছে। খোলা হাটবাজারে ৩৭-৩৮ টাকা কেজি দামে ধান বিক্রি করতে পারে। খোলা বাজারে বেশি টাকায় ধান বিক্রি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছে না কৃষকরা।

কটিয়াদী উপজেলা এলএসডি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি। এ জন্য কৃষকরা সরকারি গোডাউনে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। মাইকিং, লিফলেট ও অনলাইন বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এক কেজি ধান সংগ্রহ হয়নি সরকারি গুদামে। এভাবে চাল সংগ্রহেও ভাটা পড়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারদর বেশি থাকায় গুদামে চাল দিতেও অনিহা প্রকাশ করছেন মিলাররা। চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্র ৫৫৯ মেট্রিকটন নিধারন করে সরকার। এখন পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩শত মেট্রিকটন। উপজেলায় তালিকাভুক্ত মিলারদের সাথে প্রায় প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন খাদ্য অফিস।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কটিয়াদীতে মাইকিং করেও এক কেজি ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য অফিস

আপডেট সময় : ০২:২৪:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলতি আমন মৌসুমে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে মাইকিং, লিফলেট ও অনলাইন বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এক কেজি ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য অফিস। সরকার প্রতিমন ধানের মূল্য ১ হাজার ৩ শত ২০ টাকা নিধারণ করেছে। অথচ খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫শত ২০ টাকা দরে । সরকারি খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধান ও চালের দাম বেশি। এ কারণে কৃষকরা ডিলারদের কাছে বিক্রি না করায় সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। এবার আমন মৌসুমে উপজেলা খাদ্য গুদাম ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিস জানায়, চলতি আমন মৌসুমের ধান সরকারি গুদামে সংগ্রহের জন্য ১৭ নভেম্ববর ২০২৪ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ চলবে। উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ৯টি ইউনিয়নের কৃষকদের থেকে ৯১৩ মেট্রিকটন ধান ও ৫৫৯ মেট্রিকটন মোটা চাল ক্রয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে কৃষক ও মিলারদের সাড়া মেলেনি মোটেও। উদ্বোধনের পর গুদামে মিলারদের থেকে ৩শ মেট্রিকটন চাল ক্রয় করলেও গত ২ মাস ২৫ দিনে গুদামে ধান সংগ্রহ হয়নি এক কেজিও। খাদ্যগুদামে উপজেলার কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি প্রতি মণ ধান এক হাজার ৩২০ টাকা ও মোটা চাল ১ হাজার ৮ শত ৮০ টাকা দরে ক্রয় করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বর্তমানে ধান এক হাজার পাঁচশ বিশ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।

মসূয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. খাইরুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেন জানান, স্থানীয় বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, গুদামে সে দাম দেয়া হচ্ছে না। গুদামের চেয়ে স্থানীয় বাজারে মনপ্রতি ধানের দাম কমপক্ষে দুই-তিন শ’ টাকা বেশি। সরকার এক কেজি মোটা চালের দাম ৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। অথচ তা উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ৫০-৫২ টাকা। এর সাথে ক্রয় কেন্দ্রে আনা-নেয়া ও শ্রমিক খরচে লোকসান হয় প্রতি কেজিতে ৬-৭ টাকা করে। সরকার ধানের দর ৩৩ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দিয়েছে। খোলা হাটবাজারে ৩৭-৩৮ টাকা কেজি দামে ধান বিক্রি করতে পারে। খোলা বাজারে বেশি টাকায় ধান বিক্রি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছে না কৃষকরা।

কটিয়াদী উপজেলা এলএসডি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি। এ জন্য কৃষকরা সরকারি গোডাউনে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। মাইকিং, লিফলেট ও অনলাইন বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এক কেজি ধান সংগ্রহ হয়নি সরকারি গুদামে। এভাবে চাল সংগ্রহেও ভাটা পড়েছে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারদর বেশি থাকায় গুদামে চাল দিতেও অনিহা প্রকাশ করছেন মিলাররা। চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্র ৫৫৯ মেট্রিকটন নিধারন করে সরকার। এখন পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩শত মেট্রিকটন। উপজেলায় তালিকাভুক্ত মিলারদের সাথে প্রায় প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন খাদ্য অফিস।