ঢাকা ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কুয়াশায় নৌ, সড়ক ও আকাশপথে দুর্ভোগ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:২৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫ ৪০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘন কুয়াশায় নৌ, সড়ক ও আকাশপথে দুর্ভোগ বেড়েছে। তিন মাধ্যমে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। নৌপথে বাল্কহেডসহ ছোট নৌযানগুলো লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। সড়কপথে দিনেও ফগ লাইট জ্বালিয়ে দূরপাল্লার পরিবহণ চলাচল করছে। আকাশপথে বিমান চলাচল বিঘ্নিত ও বিলম্বিত হচ্ছে। নৌ, সড়ক ও আকাশপথে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ঘন কুয়াশা কারণে পাটুরিয়া মাঝনদীতে ৫ ফেরি আটকা পড়ে। এতে করে রাতভর চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রিরা। একাধিক যাত্রী জানান, ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মাঝনদীতে আটকা পড়েছে ছোট-বড় পাঁচটি ফেরি। এ ছাড়া ঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাত সাড়ে ৩টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। কুয়াশার মাত্রা না কমায় পরদিন সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওই তিন রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত গাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে চেয়ারকোচ পরিবহন, ট্রাক, প্রাইভেট কার, পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন। তীব্র শীতে কষ্ট পাচ্ছেন যাত্রী, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, সন্ধ্যা থেকেই, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঘনকুয়াশার কারণে ফেরি চলাচলে ব্যাহত হচ্ছিল। রাত ২টা থেকে নদীর চ্যানেলগুলোতে কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুয়াশা তীব্র আকার ধারণ করে নদীর চ্যানেলের বিকন বাতি ও মার্কিং পয়েন্টের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এ সময় ৯৬টি যানবাহন নিয়ে মাঝনদীতে আটকা পড়ে ছোট-বড় ৫টি ফেরি। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৩টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। সকালে কুয়াশার মাত্রা কেটে গেলে ফেরি চলাচল ফের স্বাভাবিক হবে।

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, লঞ্চগুলোয় আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকার পরও সেগুলো ব্যবহার না করায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক লঞ্চ মাস্টার বলেন, আমাদের রুটের প্রায় সব লঞ্চে আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। কিন্তু এখনো অনেক মাস্টার ও ড্রাইভার আধুনিক যন্ত্র রাডার, জিপিএস চালাতে পারেন না। এ কারণে ঘন কুয়াশায় তারা ধীরগতিতে লঞ্চ চালাতে বাধ্য হন।
এবিষয়ে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিবহণ পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, রাতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করায় লঞ্চ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে অবহিত করে নৌপুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঘন কুয়াশায় লঞ্চ চলাচলে চালকদের সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশের নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা ৩০০ মিটার বা কোথাও কোথাও এর চেয়েও কম হতে পারে। তাই এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে সড়কপথে দিনেও ফগ লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। যানবাহন ধীরগতিতে চালানোয় গন্তব্যে পৌঁছাতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম মাসরেক বাবলু বলেন, ঘন কুয়াশার মধ্যে ফগ লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এ কারণে ধীরগতিতে বাস চালাতে চালকদের বলা হয়েছে।
বরিশাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ ধরে বিমান বাংলাদেশ ও ইউএস-বাংলার বিমান উড্ডয়ন বিলম্বিত হচ্ছে। রোববার বিমানের সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের ফ্লাইট দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে উড্ডয়ন করে। একইভাবে ইউএস-বাংলার বিমান চলাচলেও বিলম্ব হচ্ছে। টাওয়ার থেকে ভিজিবিলিটি ক্লিয়ারেন্স না দেওয়া পর্যন্ত বিমান উড্ডায়ন করতে পারছে না। ইউএস-বাংলার বরিশালের ইনচার্জ সৈয়দ মোস্তাইন হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশায় কোনো কোনো সময় আমাদের ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিলম্ব হয়।

অপরদিকে আবহাওয়া অফিস বলেছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোতে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৩০০ মিটারের চেয়ে কম থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। রাত ১টা থেকে পরবর্তী ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৩০০ বা কোথাও কোথাও এর চেয়ে কম হতে পারে। এ অবস্থায় এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে ওই সতর্কবার্তায়। তবে কোনো সংকেত দেখাতে হবে বলেও জানানো হয়। আগামী তিনদিন মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যহত থাকতে পারে। এই ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

দেশের অন্যতম নৌপথ ঢাকা-বরিশাল রুট প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষ ব্যবহার করে। নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঘন কুয়াশার কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে হচ্ছে। লঞ্চ মাস্টাররা জানান, যাত্রাপথে বাল্কহেড ও ছোট নৌযানগুলো দেখতে না পাওয়ায় নানা দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিলাসবহুল লঞ্চ অ্যাডভেঞ্চার-৯-এর প্রথম শ্রেণির মাস্টার আলমাস দেওয়ান বলেন, ঘন কুয়াশায় ধীরে ধীরে লঞ্চ চালাতে হয়। এর কারণে প্রতি ট্রিপে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে। তিনি আরও বলেন, নৌপথে চলাচলের বড় বাধা ছোট নৌযান। রাতে ঘন কুয়াশায় বালুবাহী বাল্কহেড, ছোট ছোট কার্গো জাহাজ, ট্রলার ও মাছ ধরার নৌকা দেখতে পাওয়া যায় না। প্রশিক্ষণ না থাকায় চালকরাও রাতে সঠিকভাবে বাল্কহেড চালাতে পারেন না। এ কারণে লঞ্চ চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় মাঝ নদীতে লঞ্চ আটকা এবং ধীরগতিতে চলাচল করায় গন্তব্যে পৌঁছাতে লঞ্চের এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে। এ কারণে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রোববার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার সুগন্ধা নদীর চরে যাত্রী নিয়ে আটকা পড়ে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অথৈ-১। ঘন কুয়াশার কারণে যাত্রীবাহী লঞ্চটি চরে উঠে যায়। এরপর লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অর্ধেক ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। সড়কপথে তারা বরগুনায় যান। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, কুয়াশা থাকলেও সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কেটে যেতে পারে। হিমেল বাতাসে শীত একটু বেশি অনুভূত হয়েছে। সে তুলনায় শীত কিছুটা কম থাকতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কুয়াশায় নৌ, সড়ক ও আকাশপথে দুর্ভোগ

আপডেট সময় : ১২:২৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

ঘন কুয়াশায় নৌ, সড়ক ও আকাশপথে দুর্ভোগ বেড়েছে। তিন মাধ্যমে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। নৌপথে বাল্কহেডসহ ছোট নৌযানগুলো লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। সড়কপথে দিনেও ফগ লাইট জ্বালিয়ে দূরপাল্লার পরিবহণ চলাচল করছে। আকাশপথে বিমান চলাচল বিঘ্নিত ও বিলম্বিত হচ্ছে। নৌ, সড়ক ও আকাশপথে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ঘন কুয়াশা কারণে পাটুরিয়া মাঝনদীতে ৫ ফেরি আটকা পড়ে। এতে করে রাতভর চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রিরা। একাধিক যাত্রী জানান, ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মাঝনদীতে আটকা পড়েছে ছোট-বড় পাঁচটি ফেরি। এ ছাড়া ঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাত সাড়ে ৩টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। কুয়াশার মাত্রা না কমায় পরদিন সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওই তিন রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত গাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে চেয়ারকোচ পরিবহন, ট্রাক, প্রাইভেট কার, পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন। তীব্র শীতে কষ্ট পাচ্ছেন যাত্রী, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, সন্ধ্যা থেকেই, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঘনকুয়াশার কারণে ফেরি চলাচলে ব্যাহত হচ্ছিল। রাত ২টা থেকে নদীর চ্যানেলগুলোতে কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুয়াশা তীব্র আকার ধারণ করে নদীর চ্যানেলের বিকন বাতি ও মার্কিং পয়েন্টের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এ সময় ৯৬টি যানবাহন নিয়ে মাঝনদীতে আটকা পড়ে ছোট-বড় ৫টি ফেরি। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৩টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। সকালে কুয়াশার মাত্রা কেটে গেলে ফেরি চলাচল ফের স্বাভাবিক হবে।

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, লঞ্চগুলোয় আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকার পরও সেগুলো ব্যবহার না করায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক লঞ্চ মাস্টার বলেন, আমাদের রুটের প্রায় সব লঞ্চে আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। কিন্তু এখনো অনেক মাস্টার ও ড্রাইভার আধুনিক যন্ত্র রাডার, জিপিএস চালাতে পারেন না। এ কারণে ঘন কুয়াশায় তারা ধীরগতিতে লঞ্চ চালাতে বাধ্য হন।
এবিষয়ে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিবহণ পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, রাতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করায় লঞ্চ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে অবহিত করে নৌপুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঘন কুয়াশায় লঞ্চ চলাচলে চালকদের সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দেশের নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা ৩০০ মিটার বা কোথাও কোথাও এর চেয়েও কম হতে পারে। তাই এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে সড়কপথে দিনেও ফগ লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। যানবাহন ধীরগতিতে চালানোয় গন্তব্যে পৌঁছাতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম মাসরেক বাবলু বলেন, ঘন কুয়াশার মধ্যে ফগ লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এ কারণে ধীরগতিতে বাস চালাতে চালকদের বলা হয়েছে।
বরিশাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ ধরে বিমান বাংলাদেশ ও ইউএস-বাংলার বিমান উড্ডয়ন বিলম্বিত হচ্ছে। রোববার বিমানের সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের ফ্লাইট দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে উড্ডয়ন করে। একইভাবে ইউএস-বাংলার বিমান চলাচলেও বিলম্ব হচ্ছে। টাওয়ার থেকে ভিজিবিলিটি ক্লিয়ারেন্স না দেওয়া পর্যন্ত বিমান উড্ডায়ন করতে পারছে না। ইউএস-বাংলার বরিশালের ইনচার্জ সৈয়দ মোস্তাইন হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশায় কোনো কোনো সময় আমাদের ৩০ মিনিট পর্যন্ত বিলম্ব হয়।

অপরদিকে আবহাওয়া অফিস বলেছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোতে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৩০০ মিটারের চেয়ে কম থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। রাত ১টা থেকে পরবর্তী ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা ৩০০ বা কোথাও কোথাও এর চেয়ে কম হতে পারে। এ অবস্থায় এসব এলাকার নৌযানগুলোকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে ওই সতর্কবার্তায়। তবে কোনো সংকেত দেখাতে হবে বলেও জানানো হয়। আগামী তিনদিন মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যহত থাকতে পারে। এই ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

দেশের অন্যতম নৌপথ ঢাকা-বরিশাল রুট প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষ ব্যবহার করে। নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঘন কুয়াশার কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে হচ্ছে। লঞ্চ মাস্টাররা জানান, যাত্রাপথে বাল্কহেড ও ছোট নৌযানগুলো দেখতে না পাওয়ায় নানা দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিলাসবহুল লঞ্চ অ্যাডভেঞ্চার-৯-এর প্রথম শ্রেণির মাস্টার আলমাস দেওয়ান বলেন, ঘন কুয়াশায় ধীরে ধীরে লঞ্চ চালাতে হয়। এর কারণে প্রতি ট্রিপে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে। তিনি আরও বলেন, নৌপথে চলাচলের বড় বাধা ছোট নৌযান। রাতে ঘন কুয়াশায় বালুবাহী বাল্কহেড, ছোট ছোট কার্গো জাহাজ, ট্রলার ও মাছ ধরার নৌকা দেখতে পাওয়া যায় না। প্রশিক্ষণ না থাকায় চালকরাও রাতে সঠিকভাবে বাল্কহেড চালাতে পারেন না। এ কারণে লঞ্চ চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় মাঝ নদীতে লঞ্চ আটকা এবং ধীরগতিতে চলাচল করায় গন্তব্যে পৌঁছাতে লঞ্চের এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে। এ কারণে সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রোববার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার সুগন্ধা নদীর চরে যাত্রী নিয়ে আটকা পড়ে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অথৈ-১। ঘন কুয়াশার কারণে যাত্রীবাহী লঞ্চটি চরে উঠে যায়। এরপর লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অর্ধেক ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। সড়কপথে তারা বরগুনায় যান। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, কুয়াশা থাকলেও সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কেটে যেতে পারে। হিমেল বাতাসে শীত একটু বেশি অনুভূত হয়েছে। সে তুলনায় শীত কিছুটা কম থাকতে পারে।