ঢাকা ০৩:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ডামুড্যায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ কর্তৃক ১৩৮৬ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার Logo কুড়িগ্রামে বাড়ির পাশের ভুট্রাক্ষেত থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার Logo তিতাসে ৯ ইউনিয়নে বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করে আংশিক কমিটি প্রকাশ নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ উৎস  Logo বাদীর কবর দখল বাড়িতে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ Logo রামু উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিমান্তে গরু চোরা চালানরোধে আরো কঠোর হওয়ার আহবান Logo রাণাপিং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন সুলতান মাহমুদ  Logo মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে নরসিংদীতে যুবককে হত্যা Logo রামগতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিহত Logo ধামরাইয়ে ৪ অপহরণকারী জনতার হাতে আটক পুলিশে সোপর্দ

কেশবপুর অধিকাংশ কৃষক  গ্লাভস-মাস্ক না পরেই কীটনাশক প্রয়োগ

খায়রুল আনাম, কেশবপুর( যশোর) প্রতিনিধি 
  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫ ৬৫ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
কেশবপুর  উপজেলার কৃষক আব্দুল কুদ্দুস তার ধান ক্ষেতে  ছত্রাক আক্রমণ করেছে। তিনি পিঠে বালাইনাশকের জার নিয়ে জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। টি-শার্ট, হাতে গ্লাভস নেই, মুখে মাস্কও নেই। আব্দুল কুদ্দুস  বলেন, কীটনাশক স্প্রে করার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আছে বলে শুনিনি। খালি হাতে ও মুখ না ঢেকেই স্প্রে করি। মাঝেমধ্যে মাথা ঘোরে, ব্যথা হয়। তখন বেশি পানি দিয়ে গোসল করি। দোকান থেকে মাথাব্যথার ওষুষ খাই। এভাবেই কাজ করছি বছরের পর বছর।
গতকাল বুধবার  সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলের উর্বরতা বৃদ্ধি ও পোকামাকড় দমনে ধানক্ষেতে  কীটনাশক স্প্রে করছেন উপজেলার মজিদপুর   ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের  গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস । ফসল সুরক্ষায় এতসব আয়োজন থাকলেও নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নেই কোনো ভ্র-ক্ষেণ। কীটনাশক প্রয়োগের সময় মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, চোখে চশমা ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা উপেক্ষিত। ফলে আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগে। এতে নিজের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এই কৃষক।
তিনি বলছেন, নিয়ম থাকলেও তারা স্বাস্থ্য সচেতন না। যার কারণে কোনোরকম ‘সেফটি গ্যাজেটস’ বা সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই জমিতে কীটনাশক স্প্রে করেন। শুধু আব্দুল কুদ্দুস  নয়, কেশবপুর  উপজেলাজুড়ে কৃষকদের এমন উদাসীনতার দেখা মিলছে। কৃষকদের অভিযোগ, কীটনাশক ব্যবহারে কৃষি দপ্তরের সহযোগিতা পান না তারা। এছাড়াও অনেকেই জানেনই না কীটনাশক প্রয়োগের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কি কি ব্যবহার করতে হয়। কিছু  কিছু অংশের দায়িত্বে থাকা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা  কৃষি বিষয়ক কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করে কৃষক আব্দুল কুদ্দুস , কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা যদি আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতো তাহলে আমরা রোগবালাই থেকে রেহাই পেতাম।
কীটনাশক ব্যবহারে কৃষি অফিসের কোনো রকমের পরামর্শ ও সহযোগিতা পাই না। আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম জমির ফসলে কীটনাশক দেয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়। কেশবপুর  উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে চাষযোগ্য জমির পরিমান ১৮ হাজার ৪৯৯ হেক্টর। আরও জানা যায়, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) নীতিমালার পরামর্শ হলো, রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শরীরের অন্যান্য অংশে কীটনাশকের অনুপ্রবেশ রোধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকতে হবে। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন  বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে উপজেলার চাষিদের বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কীটনাশক ছিটানোর আগে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসচেতনতা নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।
আইপিএম অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু অনেকেই বিষয়টি মানছেন না। ভবিষ্যতে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। কেশবপুর  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর বলেন, রাসায়নিক ও কীটনাশক স্প্রে করার আগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। না হলে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে এ সব বিষ প্রবেশ করে দীর্ঘমেয়াদি মাথাব্যথা, বমি বমি ভাবসহ নানারকম জটিল রোগ হতে পারে। এমনকি ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতেও আক্রান্ত হতে পারে মানুষ। তাই এখনি বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কেশবপুর অধিকাংশ কৃষক  গ্লাভস-মাস্ক না পরেই কীটনাশক প্রয়োগ

আপডেট সময় : ১২:৫৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
কেশবপুর  উপজেলার কৃষক আব্দুল কুদ্দুস তার ধান ক্ষেতে  ছত্রাক আক্রমণ করেছে। তিনি পিঠে বালাইনাশকের জার নিয়ে জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। টি-শার্ট, হাতে গ্লাভস নেই, মুখে মাস্কও নেই। আব্দুল কুদ্দুস  বলেন, কীটনাশক স্প্রে করার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আছে বলে শুনিনি। খালি হাতে ও মুখ না ঢেকেই স্প্রে করি। মাঝেমধ্যে মাথা ঘোরে, ব্যথা হয়। তখন বেশি পানি দিয়ে গোসল করি। দোকান থেকে মাথাব্যথার ওষুষ খাই। এভাবেই কাজ করছি বছরের পর বছর।
গতকাল বুধবার  সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলের উর্বরতা বৃদ্ধি ও পোকামাকড় দমনে ধানক্ষেতে  কীটনাশক স্প্রে করছেন উপজেলার মজিদপুর   ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের  গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস । ফসল সুরক্ষায় এতসব আয়োজন থাকলেও নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নেই কোনো ভ্র-ক্ষেণ। কীটনাশক প্রয়োগের সময় মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, চোখে চশমা ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা উপেক্ষিত। ফলে আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগে। এতে নিজের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এই কৃষক।
তিনি বলছেন, নিয়ম থাকলেও তারা স্বাস্থ্য সচেতন না। যার কারণে কোনোরকম ‘সেফটি গ্যাজেটস’ বা সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই জমিতে কীটনাশক স্প্রে করেন। শুধু আব্দুল কুদ্দুস  নয়, কেশবপুর  উপজেলাজুড়ে কৃষকদের এমন উদাসীনতার দেখা মিলছে। কৃষকদের অভিযোগ, কীটনাশক ব্যবহারে কৃষি দপ্তরের সহযোগিতা পান না তারা। এছাড়াও অনেকেই জানেনই না কীটনাশক প্রয়োগের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কি কি ব্যবহার করতে হয়। কিছু  কিছু অংশের দায়িত্বে থাকা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা  কৃষি বিষয়ক কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করে কৃষক আব্দুল কুদ্দুস , কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা যদি আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতো তাহলে আমরা রোগবালাই থেকে রেহাই পেতাম।
কীটনাশক ব্যবহারে কৃষি অফিসের কোনো রকমের পরামর্শ ও সহযোগিতা পাই না। আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম জমির ফসলে কীটনাশক দেয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়। কেশবপুর  উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে চাষযোগ্য জমির পরিমান ১৮ হাজার ৪৯৯ হেক্টর। আরও জানা যায়, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) নীতিমালার পরামর্শ হলো, রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শরীরের অন্যান্য অংশে কীটনাশকের অনুপ্রবেশ রোধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকতে হবে। কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন  বলেন, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে উপজেলার চাষিদের বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কীটনাশক ছিটানোর আগে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসচেতনতা নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছি।
আইপিএম অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু অনেকেই বিষয়টি মানছেন না। ভবিষ্যতে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। কেশবপুর  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর বলেন, রাসায়নিক ও কীটনাশক স্প্রে করার আগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। না হলে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে এ সব বিষ প্রবেশ করে দীর্ঘমেয়াদি মাথাব্যথা, বমি বমি ভাবসহ নানারকম জটিল রোগ হতে পারে। এমনকি ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধিতেও আক্রান্ত হতে পারে মানুষ। তাই এখনি বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।