কেশবপুরে পাটের ফলন ভালো দুচোখে স্বপ্ন বুনছে কৃষক

- আপডেট সময় : ০২:১৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে যশোরের কেশবপুর উপজেলায় ৬ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। স্থানীয় কৃষি অফিস ও কৃষকদের দাবী এবছর পাটের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। চলতি বছর কেশবপুরে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষম-াত্রা ধরা হলেও সেখানে অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে। পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৬০৩ মেট্রিকটন। এর বাজার মূল্য ১৪৫ কোটি ২২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। জানা যায়, চলতি বছর কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ছয় হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে পাটের আবার করা হয়েছে। সরকারি ভাবে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পাঁচ হাজার হেক্টর। গত বছর পাটের দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা এবার অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করেছে। এরমধ্যে বিএজে আর আই তুষা জাতের ছয় হাজার ৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় গুটি জাতের ২০ হেক্টর। গত বছর এ উপজেলায় পাঁচ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষম-াত্রা ধরা হলেও সেখানে আবাদ করা হয় চার হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা জানান, গেল অর্থ বছরে তাদের এক হেক্টর জমিতে সার, বীজ ও কীটনাশকসহ পাট উৎপাদন খরচ হয়, প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। সেখানে প্রতি হেক্টরে পাট উৎপাদন হয় দুই দশমিক ৮০ থেকে তিন টন। যার বাজার মূল্য পাওয়া যায় দুই লাখ ৩০ হাজার থেকে দুইলাখ ৪০ হাজার টাকা। তারা আশা করছেন এ বছরও পাটের দাম ভাল পাওয়া যাবে। উপজেলার গৌরিঘোনা গ্রামের পাটচাষী মহাতাব, মঙ্গলকোট গ্রামের আরশাদ আলি, বিদ্যানন্দকাটি গ্রামের মেহের আলি জানান, গত বছর পাটের দাম ভাল পাওয়ায় এবছরও তারা অতিরিক্ত জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। আবাদও ভাল হয়েছে।
এর মধ্যে মজিদপুর, ত্রিমোহিণী, সাতবাড়িয়া, মঙ্গলকোট, হাসানপুর, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। ১নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে পাটের আবাদ হয় ২২১ হেক্টর, ২নং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে ৯৩০ হেক্টর, ৩নং মজিদপুর ইউনিয়নে ১৪৮৯ হেক্টর, ৪নং বিদ্যানন্দকাটী ইউনিয়নে ৬৩০ হেক্টর, ৫নং মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ৫১৫ হেক্টর, ৬নং কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ৪২৫ হেক্টর, ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়নে ২৪০ হেক্টর, ৮নং সুফলাকাটি ইউনিয়নে ৭৫ হেক্টর, ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে -১৫০ হেক্টর,
১০ সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে-৫০৯, ১১ নং হাসানপুর ইউনিয়নে ৫৮৫ হেক্টর, কেশবপুর পৌর -৩০০ হেক্টর, উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, ‘গত বছর বাজারে পাটের দাম বেশি দেখে এবার প্রথম বার ৪ বিঘা ১০ কাটা জমিতে বীজ বুনেছিলাম। ভালো ফলন হওয়ায় খেতে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ পাট হতে পারে বলে আশা করছি। পাট আবাদ করতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। প্রতি মণ পাট ৩ হাজার টাকা করে বিক্রি করতে পারলে ভালোই লাভবান হবেন বলে জানান।
কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্যা আল মাসুম বলেন, ‘সোনালি আশ ১২০ দিনের ফসল। প্রতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে আবাদ করে, আষাড়-প্রাবণ মাসে কাটা পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘চলতি বছর কেশবপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত এক হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলন ভাল পেতে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফলনও বেশ ভাল দেখা যাচ্ছে। প্রকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এখানে পাটের ফলন ভাল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।