ঢাকা ০৮:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

কেশবপুরে ২৭ বিলের ৫৬ হাজার বিঘার বোরো আবাদ অনিশ্চিত

খায়রুল আনাম,  কেশবপুর    (যশোর)
  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৩১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ২৭ বিলের ৫৬ হাজার বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া দীর্ঘ ৫ মাস ধরে ওই ৬ ইউনিয়নের ৫৮ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থা নিরসনে ২৭ বিল এলাকার হাজারো কৃষক সেচপাম্পে ঝুঁকে পড়ছেন। সেচ কমিটি বিল খুকশিয়ার ৮ ব্যান্ড সুইসগেটে ৩০টি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এতো পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হচ্ছেনা।

কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ২৭টি বিলের কেশবপুরে ২৭ বিলের ৬৮ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট দিয়ে হরি নদীতে নিষ্কাশন হয়। হরি নদী ও তার সংযোগ ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট দীর্ঘদিন পলিতে ভরাটের কারণে কেশবপুর উপজেলার ২ ইউনিয়নের পাঁজিয়ার ১০ গ্রাম, সুফলাকাটির ১২ গ্রাম ও মনিরামপুরের ৪ ইউনিয়নের শ্যামকুড়ের ৩ গ্রাম, খানপুরের ৮ গ্রাম, দুর্বাডাঙ্গার ১৮ গ্রাম ও মনোহরপুরের ৫ গ্রামসহ ৫৮ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘ ৫ মাস ধরে পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।

এলাকার জনগণ ৩ যুগ ধরে সেচ পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশন করে ২৭ বিলে বোরো আবাদ করে আসছেন। গত জুলাই ও আগস্টের ভারী বর্ষণের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে ২৭ বিল স্থায়ীভাবে পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। এ অবস্থা নিরসনে ৮ অক্টোবর ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটি ৫ দফা দাবিতে পানি সম্পদ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়।

এছাড়া, ২৩ অক্টোবর পাঁজিয়া মাছ বাজার চত্বরে দুই উপজেলার হাজারো বানভাসী বিশাল সমাবেশ করে। ন সমাবেশে পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার মকবুল হোসেন মুকুলকে আহবায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পানি সেচ প্রকল্প কমিটি গঠন করা হয়। বাগডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আসিত মন্ডল বলেন, হরি নদীর তলদেশ থেকে বিল নিচু হওয়ায় তার গ্রামটি সারা বছরই পানিবন্দী থাকে।

কানাইডাঙ্গা গ্রামের মাওলানা তাওহীদুল ইসলাম বলেন, বানভাসী জমির মালিকরা ত বিঘা প্রতি ৫শ টাকা করে ও অবশিষ্ট টাকা ঘের মালিকরা বাকি দিয়ে সেচকাজ চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সোমবার সেচ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন কমিটির আহবায়ক মাস্টার মকবুল হোসেন মুকুল, এমএ হালিম, মেম্বার সিরাজুল ইসলাম, মাও. সিরাজুল ইসলাম, ওজিয়ার বিশ্বাস প্রমুখ।

এ ব্যাপারে সেচ কমিটির আহবায়ক মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, হরি নদীসহ পলীতে বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট ভরাট হয়ে যায়। স্বেচ্ছাশ্রমে জনগণ সুইসগেটের পলি অপসারণ করে সচল করলেও নদীর তলদেশ উঁচু থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ অবস্থায় সেচ পাম্পে ঝুঁকে পড়ে জনগণ। ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনে ৩ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের পাশে ৮ ব্যান্ড সুইসগেটে ৩০টি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। মিটার স্থাপনে পাকা ঘর ও পাকা ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্নের পথে। অচিরেই বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপন করে পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম শুরু করা হবে। তিনি দাবি করেন, প্রশাসন যদি সেচ কাজে সহযোগিতা করে তাহলে পানি নিষ্কাশন আরো সহজ হবে।

কেশবপুর পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, কেশবপুরের জলাবদ্ধতা নিরসনে হরিহর, বুড়িভদ্রা, আপারভদ্রা ও হরি নদীর ভরাটকৃত পলি স্কেভেটর দিয়ে অপসারণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজ সম্পন্ন হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কেশবপুরে ২৭ বিলের ৫৬ হাজার বিঘার বোরো আবাদ অনিশ্চিত

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

 

কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ২৭ বিলের ৫৬ হাজার বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া দীর্ঘ ৫ মাস ধরে ওই ৬ ইউনিয়নের ৫৮ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থা নিরসনে ২৭ বিল এলাকার হাজারো কৃষক সেচপাম্পে ঝুঁকে পড়ছেন। সেচ কমিটি বিল খুকশিয়ার ৮ ব্যান্ড সুইসগেটে ৩০টি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এতো পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হচ্ছেনা।

কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার ২৭টি বিলের কেশবপুরে ২৭ বিলের ৬৮ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট দিয়ে হরি নদীতে নিষ্কাশন হয়। হরি নদী ও তার সংযোগ ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট দীর্ঘদিন পলিতে ভরাটের কারণে কেশবপুর উপজেলার ২ ইউনিয়নের পাঁজিয়ার ১০ গ্রাম, সুফলাকাটির ১২ গ্রাম ও মনিরামপুরের ৪ ইউনিয়নের শ্যামকুড়ের ৩ গ্রাম, খানপুরের ৮ গ্রাম, দুর্বাডাঙ্গার ১৮ গ্রাম ও মনোহরপুরের ৫ গ্রামসহ ৫৮ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘ ৫ মাস ধরে পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।

এলাকার জনগণ ৩ যুগ ধরে সেচ পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশন করে ২৭ বিলে বোরো আবাদ করে আসছেন। গত জুলাই ও আগস্টের ভারী বর্ষণের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে ২৭ বিল স্থায়ীভাবে পানিবন্দী হয়ে রয়েছে। এ অবস্থা নিরসনে ৮ অক্টোবর ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটি ৫ দফা দাবিতে পানি সম্পদ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়।

এছাড়া, ২৩ অক্টোবর পাঁজিয়া মাছ বাজার চত্বরে দুই উপজেলার হাজারো বানভাসী বিশাল সমাবেশ করে। ন সমাবেশে পাঁজিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার মকবুল হোসেন মুকুলকে আহবায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পানি সেচ প্রকল্প কমিটি গঠন করা হয়। বাগডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আসিত মন্ডল বলেন, হরি নদীর তলদেশ থেকে বিল নিচু হওয়ায় তার গ্রামটি সারা বছরই পানিবন্দী থাকে।

কানাইডাঙ্গা গ্রামের মাওলানা তাওহীদুল ইসলাম বলেন, বানভাসী জমির মালিকরা ত বিঘা প্রতি ৫শ টাকা করে ও অবশিষ্ট টাকা ঘের মালিকরা বাকি দিয়ে সেচকাজ চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সোমবার সেচ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন কমিটির আহবায়ক মাস্টার মকবুল হোসেন মুকুল, এমএ হালিম, মেম্বার সিরাজুল ইসলাম, মাও. সিরাজুল ইসলাম, ওজিয়ার বিশ্বাস প্রমুখ।

এ ব্যাপারে সেচ কমিটির আহবায়ক মকবুল হোসেন মুকুল বলেন, হরি নদীসহ পলীতে বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের ৮ ব্যান্ড সুইসগেট ভরাট হয়ে যায়। স্বেচ্ছাশ্রমে জনগণ সুইসগেটের পলি অপসারণ করে সচল করলেও নদীর তলদেশ উঁচু থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ অবস্থায় সেচ পাম্পে ঝুঁকে পড়ে জনগণ। ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনে ৩ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

বিল খুকশিয়ার ডায়ের খালের পাশে ৮ ব্যান্ড সুইসগেটে ৩০টি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। মিটার স্থাপনে পাকা ঘর ও পাকা ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্নের পথে। অচিরেই বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প স্থাপন করে পানি নিষ্কাশন কার্যক্রম শুরু করা হবে। তিনি দাবি করেন, প্রশাসন যদি সেচ কাজে সহযোগিতা করে তাহলে পানি নিষ্কাশন আরো সহজ হবে।

কেশবপুর পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, কেশবপুরের জলাবদ্ধতা নিরসনে হরিহর, বুড়িভদ্রা, আপারভদ্রা ও হরি নদীর ভরাটকৃত পলি স্কেভেটর দিয়ে অপসারণ কাজ চলমান রয়েছে। কাজ সম্পন্ন হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।