ক্ষমতায় থাকতে হাসিনা আরও ৫০ হাজার লাশ ফেলতে প্রস্তুত ছিল

- আপডেট সময় : ০৪:৫১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৪ ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সন্বয় সারজিস আলম বলেছেন, গোটা বিশ্ব দেখুক, শেখ হাসিনা কত বড় একজন খুনি ছিলো। কীভাবে এ দেশের মানুষকে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য খুন করেছে।
গত দেড় মাসে বাংলাদেশে যতগুলো হত্যা হয়েছে, সেগুলোর হুকুম কোথায় থেকে এসেছে আমরা জানি। স্পষ্ট কথা হচ্ছে, আমরা খুনি হাসিনার বিচার চাই। তার আমলে অসংখ্য বিচার করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে, হিংসার বশবর্তী হয়ে, তার মতো প্রহসনের বিচার এই বাংলাদেশে আমরা করতে চাই না।
আমরা আন্তর্জাতিক মানের বিচার নিশ্চিত করব, পুরো পৃথিবীর মানুষ যেন প্রশ্ন করতে না পারে।
শেখ হাসিনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) শাহবাগে ঢাকার শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে একথা বলা হয়।
এ সময় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
মৃত্যুর মিছিল যাতে আর দেখতে না হয়, সে জন্য আমি পদত্যাগ করেছি, শেখ হাসিনার এই মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে সারজিস বলেন, এখন ১৯৭১ সাল নয়, ১৯৯০ সাল নয়। ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে কে কী বলছে, কে কী করছে, কার উদ্দেশ্য কী বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি মানুষও সেটি জানে। সে যে ক্ষমতায় থাকার জন্য আরও ১০-২০, ৫০ হাজার মানুষের লাশ ফেলার জন্য প্রস্তুত ছিল সেটি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ জানে।
এতটাই ক্ষমতা পিপাসু হয়ে গিয়েছিল যে, আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্সকে হুমকি দিয়েছিল, যেন যে কোনো উপায়ে তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা হয়। তিন বাহিনী যদি তার কথার বিরুদ্ধে না দাঁড়াতো, বাংলাদেশে অনেক বড় বিভীষিকা হতে পারতো।
তিনি বলেন, সেদিন ঢাকা শহরের প্রতিটি প্রান্ত থেকে যদি লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে না আসতো, এই সংখ্যাটা যদি হাজারে হতো, খুনি হাসিনা বিভিন্ন ফোর্সকে বাধ্য করতো গুলি চালাতে।
সারজিস আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন আর শিশু নেই। বাংলাদেশের গ্রামের মানুষ এখন যা বোঝাবেন তাই বুঝবে, এই দিন আর নেই।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিবিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমকে সারজিস বলেন, কেউ যদি প্রতিবিপ্লবের কথা ভুলেও মুখে নেয়, তার মানে বাংলাদেশের পুরো ছাত্র-জনতার বিপক্ষে ঘোষণা দিচ্ছে।
এই ঘোষণা যারা দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়। তাদের উদ্দেশ্য এ দেশের ছাত্র-জনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, বরং দেশের মানুষকে শোষণ করার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
দেশের বাইরে কিছু অপশক্তির হাতে আংশিক বা সম্পূর্ণ বিক্রি করে দেওয়া যে তাদের স্বার্থ, সেটি আমরা বুঝে যাই। কেউ যদি পুনরায় এই সাহসটুকু করে, প্রতিবিপ্লবের চেষ্টাটুকু করে; ৫ আগস্ট দেখেছেন, এর পরে যা হবে, আপনাদের অস্তিত্বও থাকবে না।
সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে যে অভ্যুত্থান হয়েছে, সেটি নিয়ে বেশ কটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা হচ্ছে।
তিনি বলেন, অতীতের অনেক ঘটনা, যেগুলো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ঘটেছে, সেগুলোকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে ভারতীয় গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, গতবার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে এক ধরনের হিস্যা দিয়ে বাংলাদেশে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। যেটি সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়। গণবিমুখ হয়ে তারা মোদিমুখী হয়েছে।
ক্ষমতায় আসার জন্য তারা মোদির ওপর নির্ভর করছে। জয় মোদিকে অনুরোধ করছেন, ৯০ দিনের মধ্যে যেন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন জনগণ থেকে তারা কতটা বিচ্ছিন্ন। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার এখন দেশে-বিদেশে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।