ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর: নাহিদ

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর হয়ে গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় এসব কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা।

এসময় বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর হয়ে গেছে। তখন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে আমরা এই রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ গ্রহণ করেছি এবং তার অধীনে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি ফিরে আসার ব্যাপারে উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদী আচরণ সুস্পষ্ট। একটি ফ্যাসিস্ট দল একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কোনোভাবে রাজনীতি করতে পারে না। আওয়ামী লীগ আবারও ফিরে আসলে এই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদদের রক্তের অবমাননা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন বলা হচ্ছে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, মামলা দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখকদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাদের আসলে পেশাগত পরিচয় সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার করা জরুরি যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির অংশীদার ছিল, সুবিধাভোগী ছিল তার একটাই পরিচয় সে ফ্যাসিস্ট এবং গণহত্যাকারী। সে শিক্ষক কি না সেটা আমাদের বিবেচনার বিষয় না।

আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে আমাদের পক্ষেও যেমন ছিল একটা বড় অংশ বিপক্ষেও ছিল। আমাদের যে নিপীড়ন করা হয়েছে তার সঙ্গে তারা সরাসরি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তাদেরকে আপনি শিক্ষক হিসেবে দেখবেন নাকি ফ্যাসিট কাঠামোর অংশ হিসেবে দেখবেন? তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে কেনো বলা হবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বসিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদের এসে সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয়। এরপরের নির্বাচনগুলো তারা নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেয়। আঠারো বছরের লড়াই সংগ্রামে মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল সেই প্রত্যাশার চূড়ান্ত প্রকাশ হলো চব্বিশের এই ৩৬ দিনের আন্দোলন। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংবিধান গত ষোলো বছরে আমাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। নতুন বাংলাদেশে যেন সেইরকম ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা গড়ে উঠতে না পারে তা নিশ্চিত করত হবে।

তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর অন্তবর্তীকালীন সরকার এক নয়। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বসানো হয়েছে যাতে আরেকজন শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে। বাংলাদেশের কিছু মৌলিক বিষয়ের সংস্কার দরকার। আর এজন্য দরকার রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগ সরকার রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। ’

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও জেইউডিও এর সাবেক সভাপতি মুশফিক উস সালেহীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জায়েদ উর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানসহ আরও অনেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর: নাহিদ

আপডেট সময় : ০৯:০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

 

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর হয়ে গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের সরকার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় এসব কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা।

এসময় বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রপতি ও সংবিধান অকার্যকর হয়ে গেছে। তখন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে আমরা এই রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ গ্রহণ করেছি এবং তার অধীনে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি ফিরে আসার ব্যাপারে উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদী আচরণ সুস্পষ্ট। একটি ফ্যাসিস্ট দল একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কোনোভাবে রাজনীতি করতে পারে না। আওয়ামী লীগ আবারও ফিরে আসলে এই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদদের রক্তের অবমাননা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন বলা হচ্ছে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, মামলা দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখকদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাদের আসলে পেশাগত পরিচয় সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার করা জরুরি যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির অংশীদার ছিল, সুবিধাভোগী ছিল তার একটাই পরিচয় সে ফ্যাসিস্ট এবং গণহত্যাকারী। সে শিক্ষক কি না সেটা আমাদের বিবেচনার বিষয় না।

আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে আমাদের পক্ষেও যেমন ছিল একটা বড় অংশ বিপক্ষেও ছিল। আমাদের যে নিপীড়ন করা হয়েছে তার সঙ্গে তারা সরাসরি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তাদেরকে আপনি শিক্ষক হিসেবে দেখবেন নাকি ফ্যাসিট কাঠামোর অংশ হিসেবে দেখবেন? তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে কেনো বলা হবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বসিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদের এসে সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নেয়। এরপরের নির্বাচনগুলো তারা নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেয়। আঠারো বছরের লড়াই সংগ্রামে মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল সেই প্রত্যাশার চূড়ান্ত প্রকাশ হলো চব্বিশের এই ৩৬ দিনের আন্দোলন। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংবিধান গত ষোলো বছরে আমাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। নতুন বাংলাদেশে যেন সেইরকম ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা গড়ে উঠতে না পারে তা নিশ্চিত করত হবে।

তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর অন্তবর্তীকালীন সরকার এক নয়। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বসানো হয়েছে যাতে আরেকজন শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে। বাংলাদেশের কিছু মৌলিক বিষয়ের সংস্কার দরকার। আর এজন্য দরকার রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগ সরকার রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। ’

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও জেইউডিও এর সাবেক সভাপতি মুশফিক উস সালেহীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জায়েদ উর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, জাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানসহ আরও অনেকে।