গাইবান্ধায় চালু হলো সময় সাশ্রয়ী ভূমি সেবা
- আপডেট সময় : ০২:৪৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ৪৫০ বার পড়া হয়েছে
গাইবান্ধায় চালু হলো সময় সাশ্রয়ী ভূমি সেবা। গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জে অনলাইন ভূমি সেবায় এখন থেকে এই সুভিধা ভোগী হবেন ভূমি মালিকরা।
প্রযুক্তিগত ভূমি সেবায় ভূমি মালিকদের সময় ও ব্যয় কমে আসবে এবং মানুষ এখন নির্বিগ্নে ভূমি অফিসে যেতে পারছে। সেই সাথে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতাগুলো দ্রুততার সাথে নিরসন হওয়ায় ভূমি মালিকদের মধ্যে দুশ্চিন্তার অবসান ঘটছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার( ভূমি) মো. রেজাউল ইসলাম ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুর রহমান ভূমি মালিকদের ভূমি সেবা নিশ্চিতের যুগোপযোগী ভূমিকা রাখছেন।
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারিদের প্রতি ভূমি মালিকদের পরিপূর্ণ আস্থা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি করেন। ভূমিসেবা সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন একাধিক ভূমি মালিক।
বাংলাদেশের গবেষনা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পিপলস ইনভায়রন (সিপিই) সুদীর্ঘ ২০ বছর অতিমাত্রায় দূর্যোগ প্রবন এলাকার জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করছে।
সংস্থার পরিচালক আবদুর রহমান রানা
দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের চেয়েও উত্তরের জনপদ গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জের জনগোষ্ঠী সরকারি সেবা সমূহ গ্রহনে প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ততায় দক্ষতা বাড়ছে এবং নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে সক্ষম হচ্ছেন।
ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষের উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা এক সময় হতাশা তৈরী করতো। তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে মানুষ সহজেই সেবা গ্রহন করতে পারছেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও সরকারের পরিকল্পনার বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরন করতে সক্ষম হচ্ছে।
উপজেলায় অনলাইন প্রযুক্তিগত সেবা ভূমি মালিকদের সমস্যা-সমাধানে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখছে, একাধিক ইউনিয়ন এবং উপজেলা ভূমি অফিস সরেজমিনে পর্যবেক্ষনকালে একাধিক উপকারভোগীদের সাথে কথা বলা হয়।
গাইবান্ধা সদরের দারিয়াপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উত্তর ঘাগোয়া মৌজার মোছা: রহিমা বেগম (৬০) বলেন, মোর ( আমার) জমির খারিজ সহজে করি দিচে (সহজে করতে পেরেছি)। কারো কাছে যাম নাই (কারো সাহায্য নিতে হয়নি) একলাই তহসিলদারক কাগজ দিছনু তাইন করি দিচে।
মোর জমির খারিজত ট্যাকা নেয় নাই। সগলে কয় কম্পুটেরত কাম করান লাইগবে, মুইন তো বোঝম না। তখন তহসিদারক কাগোজ দিছনু, কাম হয়া গেইচে।
কামারজানীর গোঘাট গ্রামের মো: ছদরুল কবির আঙ্গুর বলেন, আমার পিতার নামে উত্তর গিদারী মৌজায় বিআরএস রেকর্ডভুক্ত হোল্ডিংয়ের ভূমি উন্নয়ন কর মাত্র আধা ঘন্টা সময়ের মধ্যে নিজ বাড়িতে থেকেই অনলাইনে পরিশোধ করতে পেরেছি।
আধুনিক প্রযুক্তিগত সেবার মধ্যমে ভূমি মালিকদের সময় সাশ্রয়ী ও ব্যয় কমে আসায় এখন হয়রানি বা দালালের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে না। আধুনিকতার সুযোগ-সুবিধা সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা পুষ্পরানী বলেন, অনলাইনে জমি-জমার কাজগুলো সহজে হওয়ায় হয়রানি আর হতে হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, অনলাইনে আবেদন করে কাজের অবস্থার অগ্রগতি আমাদের ফোনে মেসেজে জানতে পারছি।
ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজে এতো পরিবর্তন এসেছে তা সত্যি আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সময় ও ব্যয় দুটোই কমে এসেছে।
রাজিবপুর গ্রামের মো. জহুরুল হক বলেন, আগেকার সময়ে দিনের পর দিন ভূমির কাজ নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হতো। কিন্তু এখন অনলাইনে সব কাজ করার সুবাদে হয়রানি কমার পাশাপাশি সময় মতো ভূমির কাজগুলো করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন আর তহসিল অফিসে হাতে কোন লেনদেন হয় না। একারণে অনিয়ম ও দূর্নীতি বন্ধ হয়েছে। নিজের বাড়িতে বসেই মানুষ তার কাক্সিক্ষত সেবা গ্রহন করতে পারছে।
সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. রোকনুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভূমি সংক্রান্ত আবেদনগুলো দাখিলকৃত কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাইয়ের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়ে থাকে।
জনগনের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছি। এখানে কোন ধরনের হয়রানির সুযোগ নেই, যারাই সেবা নিতে আসছেন এবং অনলাইনে সেবা প্রত্যাশীদের সহজেই কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করছি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ভূমিকা অফিসের সার্ভেয়ার মো. হোসেন আলী বলেন, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) প্রচেষ্টায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো ভূমি মালিকদের সেবাদানে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। একারণে অনলাইনে ভূমি সংক্রান্ত সেবা হয়রানি ছাড়াই নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এতে করে আইসিটির ব্যবহার সম্পর্কে ভূমি মালিকরা সচেতন হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদরের দারিয়াপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মহব্বত আলী বলেন, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশনায় ভূমি মালিকদের কাগজ সঠিক থাকলেই তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভূমিকা মালিকরা তাদের নামজারি, করনিক সংশোধন, ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে দ্রুত সম্পন্ন করতে পারছেন। ফলে কাউকে হয়রাণির মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। এখন আর ভূমি মালিকদের সেবা দীর্ঘ সময় অপেক্ষমায় থাকছে না। কাগজ ঠিক থাকলেই দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে।