ঢাকা ০১:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নরসিংদীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা Logo ‘দুর্গা পূজায় সৌজন্যে ইলিশ ভারতে পাঠানোর অনুমোদন’ Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগার থেকে ভারতীয় নাগরিক রামদেবকে স্বাদেশে প্রত্যাবাসন Logo নিউট্রিশন ইন সিটি ইকোসিস্টেমস প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষর Logo বিহারীবস্তিতে দুস্কৃতিকারীর হামলায় শালিসি ব্যক্তিত্ব পূর্ব আহত Logo শিবগঞ্জের দ্বিতীয় দফায় ভাঙ্গনের কবলে পদ্মা পাড়ের মানুষ, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ Logo কক্সবাজারে ইউনিয়ন হাসপাতালের সাথে ভোরের পাখি সংগঠনের স্বাস্থ্য সেবা চুক্তি Logo জকসু ও সম্পূরক বৃত্তিসহ জবি শাখা বাগছাসের ৫ দাবি Logo ইঞ্জিনিয়ার হারুন উর রশিদ গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীদের নবীন বরন Logo জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল সিলেট জেলা শাখার প্রচার মিছিল সম্পন্ন

গোবিন্দগঞ্জে পালিয়ে থেকেও পদে বহাল আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানরা

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৪০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পালিয়ে থেকেও পদে বহাল আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা। এতে করে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ।
ছাত্র-জনতার গণভ্যুত্থানে পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেয় তৎকালীন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর আত্মগোপনে চলে যান নেতা-কর্মীরাও।
১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২জন ইউপি চেয়ারম্যানই আওয়ামী লীগের। কিন্তু তারা ৫ আগস্টের পর পালিয়ে থেকেও স্বপদে বহাল রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।
ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও জামায়াতের হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।
বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও জামায়াতের দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজত খেটেছেন চার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। তারা হলেন- উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সাপমারা ইউনিয়নের দায়িত্বে (ইউপি সদস্য) থাকা ইউনিয়ন আ’লীগের সহসভাপতি আবু তালেব ও কামদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সভাপতি মোশাহেদ হোসেন চৌধুরী বাবলু।
অপর আসামীরা হলেন- উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ’লীগের প্রচারও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক রহমান মুরাদ, দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.র.ম শরিফুল ইসলাম জর্জ,
তালুককানুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা, শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সেকেন্দার আলী, কামারদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা
স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক তৌকির হাসান রচি, শালমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, নাকাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগের সদস্য সাজু খন্দকার ও ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের সদস্য আনিছুর রহমান শিবলু।
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েও বহাল তবিয়তে পদে আছেন এই উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৭টির মধ্যে ১২ জন ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক থাকলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তারা নিয়মিত অফিসে উপস্থিত না হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে সেবা প্রত্যাশি সাধারণ মানুষদের।
আ’লীগ সরকার পতনের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। পরে জেল থেকে বেরিয়ে পলাতকরাসহ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন তারা। বর্তমানে অনেকটাই গোপনে অফিস
করছেন। এতে সাধারণ নাগরিকরা সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেছন না।
প্রশাসন এখনো তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মামলা দায়েরের পর মাঝে মধ্যে গোপনে অফিসে এসে নথিপত্রে স্বাক্ষর করে ফের অন্তরালে চলে যান।
মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‌উপজেলার মাসিক সভায় আমরা সরাসরি অংশ নিই না, তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ইউপি সচিব উপস্থিত হন।
নাকাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজু খন্দকার বলেন, কাগজপত্র সই করতে হলে ইউপি সচিব তার সঙ্গে দেখা করে তা করিয়ে নেন। এতে জনসাধারণের কোনো কাজ ব্যাহত হয়নি বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, কোন চেয়ারম্যান অফিস করেন না। ফলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। আর গোপনে থেকেও তাদের লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের নিয়ে তার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি আরও বলেন, শুনেছি কয়েকজন চেয়ারম্যান নাকি সম্মানী ভাতা নেন না। তিনি বলেন, এতে আপনাদের (সাংবাদিকদের) সমস্যা কোথায়। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে উচ্চ মহলে জানানোর পরামর্শ দেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গোবিন্দগঞ্জে পালিয়ে থেকেও পদে বহাল আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানরা

আপডেট সময় :

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পালিয়ে থেকেও পদে বহাল আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা। এতে করে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ।
ছাত্র-জনতার গণভ্যুত্থানে পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেয় তৎকালীন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর আত্মগোপনে চলে যান নেতা-কর্মীরাও।
১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২জন ইউপি চেয়ারম্যানই আওয়ামী লীগের। কিন্তু তারা ৫ আগস্টের পর পালিয়ে থেকেও স্বপদে বহাল রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা।
ইউপি চেয়ারম্যানদের নামে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও জামায়াতের হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।
বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও জামায়াতের দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজত খেটেছেন চার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। তারা হলেন- উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগের সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সাপমারা ইউনিয়নের দায়িত্বে (ইউপি সদস্য) থাকা ইউনিয়ন আ’লীগের সহসভাপতি আবু তালেব ও কামদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সভাপতি মোশাহেদ হোসেন চৌধুরী বাবলু।
অপর আসামীরা হলেন- উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ’লীগের প্রচারও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক রহমান মুরাদ, দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.র.ম শরিফুল ইসলাম জর্জ,
তালুককানুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা, শিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সেকেন্দার আলী, কামারদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা
স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক তৌকির হাসান রচি, শালমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, নাকাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা আ’লীগের সদস্য সাজু খন্দকার ও ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের সদস্য আনিছুর রহমান শিবলু।
নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েও বহাল তবিয়তে পদে আছেন এই উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৭টির মধ্যে ১২ জন ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক থাকলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তারা নিয়মিত অফিসে উপস্থিত না হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে সেবা প্রত্যাশি সাধারণ মানুষদের।
আ’লীগ সরকার পতনের পর বেশ কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। পরে জেল থেকে বেরিয়ে পলাতকরাসহ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন তারা। বর্তমানে অনেকটাই গোপনে অফিস
করছেন। এতে সাধারণ নাগরিকরা সঠিকভাবে সেবা পাচ্ছেছন না।
প্রশাসন এখনো তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মামলা দায়েরের পর মাঝে মধ্যে গোপনে অফিসে এসে নথিপত্রে স্বাক্ষর করে ফের অন্তরালে চলে যান।
মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‌উপজেলার মাসিক সভায় আমরা সরাসরি অংশ নিই না, তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ইউপি সচিব উপস্থিত হন।
নাকাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজু খন্দকার বলেন, কাগজপত্র সই করতে হলে ইউপি সচিব তার সঙ্গে দেখা করে তা করিয়ে নেন। এতে জনসাধারণের কোনো কাজ ব্যাহত হয়নি বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, কোন চেয়ারম্যান অফিস করেন না। ফলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। আর গোপনে থেকেও তাদের লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের নিয়ে তার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি আরও বলেন, শুনেছি কয়েকজন চেয়ারম্যান নাকি সম্মানী ভাতা নেন না। তিনি বলেন, এতে আপনাদের (সাংবাদিকদের) সমস্যা কোথায়। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে উচ্চ মহলে জানানোর পরামর্শ দেন তিনি।