গোলাপগঞ্জে ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত, মিথ্যা মামলার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ৫৩ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ আগস্ট (শনিবার) বিকেলে ফখর উদ্দিনের ভাগিনা শাফি আহমদ (১৪) স্থানীয় মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ের অনামিকা আঙুলে আঘাত পান। শাফি আহত হলে তার সহপাঠীরা আতঙ্কিত হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল আহমদ জানান, পরে তিনি এগিয়ে গিয়ে শাফিকে ভাদেশ্বর মোকামবাজার মা ফার্মেসীর ডাক্তার কাবুল আহমদের কাছে নিয়ে যান। ডাক্তার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরামর্শ দিলে শাফিকে প্রথমে বাড়িতে আনা হয়, পরে পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
শাফির চাচা রুহেল আহমদ বলেন, তিনি নিজেই শাফিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাফিকে সিলেট পাঠান। এরপর ফখর উদ্দিন তাকে নিয়ে সিলেটে চিকিৎসা করাতে যান। কিন্তু পরে তারা জানতে পারেন, ফখর উদ্দিন এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ১৯ আগস্ট ফখর উদ্দিন বাদী হয়ে বদরুল ইসলাম, আজাদ উদ্দিন, তৌফিক আহমদ ও দুলু মিয়াকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। মামলায় আহত শাফি আহমদ, শাহাব উদ্দিন, নিজান উদ্দিন ও সিএনজি চালক জহির আহমদকে সাক্ষী করা হয়।
শাফির বড় ভাই রাফি আহমদ জানান, তিনি তখন নানা বাড়িতে ছিলেন। “বাড়ি থেকে আমাকে ফোনে জানানো হয় শাফি ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত হয়েছে। খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে যাই।”
অন্যদিকে, আহত শাফি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার কফিল উদ্দিনের উপস্থিতিতে স্বীকার করেছেন যে তিনি ফুটবল খেলতে গিয়েই আহত হয়েছেন, কারো আঘাতে নয়। আমার মামা ফখর উদ্দিন আমাকে শিখিয়ে দিয়েছেন আমি যে পুলিশের কাছে বলি বদরুল ইসলাম, আজাদ উদ্দিন, তৌফিক আহমদ ও দুলু মিয়ার আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা করেন এই মিথ্যা কথা বলার জন্য ।
শাফির চাচা দেলোয়ার আহমদ অভিযোগ করেন, “দীর্ঘদিন ধরে ফখর উদ্দিনের সঙ্গে বদরুল ইসলাম, আজাদ উদ্দিন, তৌফিক আহমদ ও দুলু মিয়ার বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করেই তাদের ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্তদের একজন আজাদ উদ্দিন বলেন, “আমাদের হয়রানি ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই এই মামলা দেওয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ সাজানো।”
এ বিষয়ে ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার কফিল উদ্দিন জানান, “শাফি আমাদের সামনেই বলেছে, সে খেলতে গিয়ে আহত হয়েছে। মামলার সঙ্গে বাস্তব ঘটনার কোনো মিল নেই।”
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খলকুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি আজে জানতে পারছি বাদি বিবাদী উভয়ই আমাকে ফোন জানিয়েছেন, যেহেতু মামলা তদন্ত চলমান রয়েছে তাই আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য বিষয়টি তুলে ধরবেন।
এভাবে মিথ্যা মামলা দিলে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে।”
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, “এটি আদালতের মামলা। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, একটি সাধারণ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।