ছাত্রদলের সংখ্যালঘু মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

- আপডেট সময় : ৪১ বার পড়া হয়েছে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রদল নেত্রী রুপোন্তি রত্না ও ছাত্রদল নেতা রাসেল হোসেনের মন্তব্য ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানববন্ধনে দেওয়া তাদের বক্তব্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘সংখ্যালঘু’ আখ্যা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে এ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান দুই শিক্ষার্থী। প্ল্যাকার্ডে- “আমি একজন জবির রাজনৈতিকভাবে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থী। সংখ্যা গরিষ্ঠদের কাছে অনুরোধ আমাকে একটু স্পেস দিন প্লিজ।” আরেকটিতে লেখা ছিল-“তুমি কে, আমি কে, সংখ্যালঘু সংখ্যালঘু। তুমি চাও, আমি চাই স্পেস-স্পেস।” লেখা ছিল।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় তারা ঐক্যবদ্ধ। কোনো উসকানিমূলক মন্তব্য বা প্রহসনমূলক বক্তব্য তারা মেনে নেবেন না।
প্লাকার্ড হাতে দাঁড়ানো ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার হাবিব বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় রাজনৈতিক সহাবস্থানের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। অথচ সম্প্রতি ছাত্রদলের এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ‘সংখ্যালঘু’ আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদলের নেত্রী রত্না দাবি করেছেন, তারা অন্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে’স্পেস’ দিয়েছেন। এসব ভুজুংভাজুং কথাবার্তা আর মানুষ বিশ্বাস করে না। শিক্ষার্থীরা জানে কিভাবে ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়। ছাত্রদলকে আহ্বান জানাই, সহাবস্থান বজায় রাখুন, নইলে শিক্ষার্থীদের কাছে আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।”
একইভাবে প্রতিবাদ জানান দর্শন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আহনাফ আতিফ। তিনি বলেন, “প্রথমত, আমি একজন বাংলাদেশী বাঙালি মুসলমান। এই ভূখণ্ডে আমি কোনোভাবেই সংখ্যালঘু নই। চলমান আন্দোলনে শুধু কয়েকটি সংগঠন নয়, বরং পুরো জবির শিক্ষার্থীদের সমর্থন রয়েছে।”
তিনি ছাত্রদলের বক্তব্যকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে আরও বলেন, “এখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ চর্চার সমান অধিকার রয়েছে। ছাত্রদল আমাদের ‘স্পেস’ দেওয়ার কেউ নয়। আগে ছাত্রলীগ এ ধরনের কথা বলত, এখন ছাত্রদলের কথার ধরণও একই রকম হয়ে যাচ্ছে।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে আহৃবায়ক সদস্য রুপোন্তি রত্না বলেন, “এটা আমার ভাষাগত ভুল হয়েছে। আমি স্পেস বলতে জায়গা বুঝাইনি। আমি বোঝাতে চেয়েছি, ছাত্রদল অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবে ক্যাম্পাসে আছে। সবাই এটা ভুলভাবে নেবেন এটা বুঝতে পারি নি। আমি স্বীকার করছি, আমার ভুল হয়েছে।”
আরেক আহবায়ক সদস্য রাসেল হোসেন বলেন, “আমি সংখ্যালঘু বলতে চাই নি, এট স্লিপ অফ টাং। আমি বলতে চেয়েছিলাম কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীরা। আর তাছাড়া প্রথমবার বক্তব্য দিয়েছি, তাই এমনটা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে এক মানববন্ধনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের বিচার নিশ্চিতের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের দাবি জানায় ছাত্রদল। একইসাথে সম্পূরক বৃত্তির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার দাবি জানায় সংগঠনটি।