ঢাকা ১২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo `জুলাই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সমাজের অঙ্গীকার’ Logo ডামুড্যায় গরীব ও অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ Logo বিশ্বনাথে আলোকিত সুর সাংস্কৃতিক ফোরাম অভিষেক ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা Logo বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহে মামলা Logo সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন Logo ঝিনাইদহে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময় সভা Logo ভালো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল ভূমিকা রাখছে Logo বন্ধু একাদশ হাকিমপুরকে হারিয়ে মুন্সিপাড়া ওয়ারিয়ার্স দিনাজপুর চ্যাম্পিয়ান Logo জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর Logo ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা

জমে উঠছে রাজধানীর পশুরহাট ব্যাপারীরা ক্রেতার অপেক্ষায়

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১৩২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জমে উঠেছে রাজধানীর পশুরহাট। মফস্বল থেকে ব্যাপারীরা পশু নিয়ে হাটে আসছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর ২২টি হাটে পশু এসেছে। কিন্তু ক্রেতা কম। ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন ব্যাপারীরা।গরু ব্যাপারী মাহতাব লিমন পাবনার আতাইকুলা থেকে ট্রাকে চেপে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন রাজধানীর শাহজাহানপুর হাটে। বললেন, ‘ভোররাতে গরু নিয়া হাটে এসেছি। দুপুর পর্যন্ত তেমন ক্রেতা আসেননি। দু্-একজন এলেও গরু দেখে চলে গেছেন।’
মাহতাব লিমনের কথাতে স্পষ্ট, কোরবানি ঈদের আর ক’দিন দিন থাকলেও রাজধানীর পশুর হাটে এখনও ক্রেতার আনাগোনা নেই। খামারি, ব্যাপারী আর ইজারাদাররা হাটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও শুরু হয়নি তেমন কেনাবেচা। তবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে অস্থায়ী পশুর হাটে শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক বেচাকেনা। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় গাবতলী আর সারুলিয়ার দুটি স্থায়ীসহ মোট ২২টি পশুর হাট বসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার অন্তত তিনটি বড় পশুর হাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে ট্রাকবোঝাই পশু নিয়ে আসছেন ব্যাপারীরা। খামারি আর হাটের ইজারাদাররা আশা করছেন, কাল বুধবার সরকারি অফিসের শেষ কর্মদিবস। ওই দিন রাত থেকেই জমে উঠতে পারে হাট। আর খামারিদের প্রত্যাশা, শেষ মুহূর্তে ভারতীয় গরু হাটে না ঢুকলে এবার ভালো দাম পাবেন তারা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে পশু নিয়ে হাটে থাকা-খাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হলেও এ নিয়ে অভিযোগ নেই তাদের।
উত্তর শাহজাহানপুরের অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। স্থানীয় কিছু লোকজনও হাটে আসছেন। এর মধ্যে দুয়েকটা গরু বিক্রিও হয়েছে।
মেরুল বাড্ডার শাহনেওয়াজ সুমন বলেন, ‘একটি খামারে আগেই গরু কিনে রেখেছি। তবু হাটে এসেছি গরু দেখতে। মেরুল বাড্ডা হাটেও গিয়েছি। আজ এসেছি শাহজাহানপুরে, এর পর কমলাপুর হাটে যাব।’ আল মাহমুদুল হাসান বাসাবো থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে হাটে এসে একটি গরু ও একটি ছাগল কিনেছেন। মাহমুদুল বলেন, ‘শাহজাহানপুরের হাট বাড়ির কাছে। পরিবেশ ভালো, ভালো গরু ওঠে। এখন পর্যন্ত বাজার ভালোই আছে। দাম খুব বেশি মনে হচ্ছে না।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে গরু নিয়ে আসা রাশেদুল হাসান বলেন, ‘১৪টি গরু আনছিলাম; দুটি বিক্রি হয়ছে। এইবার ভারত থেকে গরু আসবে না বলে শুনছি। এইডা নিয়া ব্যাপারীরা একটু টেনশনে আছে। অনেকে গরু কিনে নাই, যে গতবার ১০টা কিনছে, হে এইবার পাঁচটাও কিনে নাই।’
হাটের ইজারাদার আনিসুর রহমান টিপু বলেন, ‘হাটে পশু আসতে শুরু করেছে। কিছু ক্রেতাও আছে। তবে মূল বিক্রি শুরু হবে ঈদের দুই দিন আগে।’
পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের ইজারাদার মোহাম্মদ আলী মিলন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে গত দুই দিন হাটে গরু এসেছে কম। তবে গত রোববার থেকে আসা শুরু হয়েছে। এই হাটে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাদারীপুর, ফরিদপুর এলাকার গরু নদীপথেও আসছে। আজও ব্যাপারীরা গরু নিয়ে আসছেন। আমাদের হাটে মঙ্গলবার থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।’
ঢাকার প্রধান হাট গাবতলীতেও আসতে শুরু করেছে পশু। তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, কোরবানির পশুতে হাট ভরে গেছে। গরুর পাশাপাশি উট, মহিষ, ভেড়াও এসেছে। গাবতলী হাটে এদিন কিছু গরু বিক্রি হয়েছে।
মিরপুরের পীরেরবাগ থেকে আসা আবদুল্লাহ আল মামুন গাবতলী হাট থেকে একটি গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেশি গরু কিনতে এসেছি। বাজেটের মধ্যে একটা গরু পছন্দ হয়েছে। এ কারণে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছি।’
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে বিশাল আকৃতির কয়েকটি গরু গাবতলী হাটে তুলেছেন উজ্জ্বল হোসেন। ধূসর কালো রঙের একটি গরুর দাম হাঁকছেন ৩০ লাখ টাকা। তবে এখনও ক্রেতা পাননি তিনি। উজ্জ্বল জানান, পাকিস্তানি শাহিওয়াল জাতের এই গরুর ওজন ৮ থেকে ১০ মণ।
ওই হাটের ঝিনাইদহ থেকে আসা ইমরান হোসেন বলেন, ‘এলাকায় এবার গরু কম। গো-খাদ্যের দাম বেশি বলে কৃষক গরু পালনের দিকে মনোযোগ দেয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জমে উঠছে রাজধানীর পশুরহাট ব্যাপারীরা ক্রেতার অপেক্ষায়

আপডেট সময় :

জমে উঠেছে রাজধানীর পশুরহাট। মফস্বল থেকে ব্যাপারীরা পশু নিয়ে হাটে আসছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর ২২টি হাটে পশু এসেছে। কিন্তু ক্রেতা কম। ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করছেন ব্যাপারীরা।গরু ব্যাপারী মাহতাব লিমন পাবনার আতাইকুলা থেকে ট্রাকে চেপে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন রাজধানীর শাহজাহানপুর হাটে। বললেন, ‘ভোররাতে গরু নিয়া হাটে এসেছি। দুপুর পর্যন্ত তেমন ক্রেতা আসেননি। দু্-একজন এলেও গরু দেখে চলে গেছেন।’
মাহতাব লিমনের কথাতে স্পষ্ট, কোরবানি ঈদের আর ক’দিন দিন থাকলেও রাজধানীর পশুর হাটে এখনও ক্রেতার আনাগোনা নেই। খামারি, ব্যাপারী আর ইজারাদাররা হাটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও শুরু হয়নি তেমন কেনাবেচা। তবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে অস্থায়ী পশুর হাটে শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক বেচাকেনা। এবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় গাবতলী আর সারুলিয়ার দুটি স্থায়ীসহ মোট ২২টি পশুর হাট বসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার অন্তত তিনটি বড় পশুর হাট সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে ট্রাকবোঝাই পশু নিয়ে আসছেন ব্যাপারীরা। খামারি আর হাটের ইজারাদাররা আশা করছেন, কাল বুধবার সরকারি অফিসের শেষ কর্মদিবস। ওই দিন রাত থেকেই জমে উঠতে পারে হাট। আর খামারিদের প্রত্যাশা, শেষ মুহূর্তে ভারতীয় গরু হাটে না ঢুকলে এবার ভালো দাম পাবেন তারা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে পশু নিয়ে হাটে থাকা-খাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হলেও এ নিয়ে অভিযোগ নেই তাদের।
উত্তর শাহজাহানপুরের অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। স্থানীয় কিছু লোকজনও হাটে আসছেন। এর মধ্যে দুয়েকটা গরু বিক্রিও হয়েছে।
মেরুল বাড্ডার শাহনেওয়াজ সুমন বলেন, ‘একটি খামারে আগেই গরু কিনে রেখেছি। তবু হাটে এসেছি গরু দেখতে। মেরুল বাড্ডা হাটেও গিয়েছি। আজ এসেছি শাহজাহানপুরে, এর পর কমলাপুর হাটে যাব।’ আল মাহমুদুল হাসান বাসাবো থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে হাটে এসে একটি গরু ও একটি ছাগল কিনেছেন। মাহমুদুল বলেন, ‘শাহজাহানপুরের হাট বাড়ির কাছে। পরিবেশ ভালো, ভালো গরু ওঠে। এখন পর্যন্ত বাজার ভালোই আছে। দাম খুব বেশি মনে হচ্ছে না।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে গরু নিয়ে আসা রাশেদুল হাসান বলেন, ‘১৪টি গরু আনছিলাম; দুটি বিক্রি হয়ছে। এইবার ভারত থেকে গরু আসবে না বলে শুনছি। এইডা নিয়া ব্যাপারীরা একটু টেনশনে আছে। অনেকে গরু কিনে নাই, যে গতবার ১০টা কিনছে, হে এইবার পাঁচটাও কিনে নাই।’
হাটের ইজারাদার আনিসুর রহমান টিপু বলেন, ‘হাটে পশু আসতে শুরু করেছে। কিছু ক্রেতাও আছে। তবে মূল বিক্রি শুরু হবে ঈদের দুই দিন আগে।’
পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের ইজারাদার মোহাম্মদ আলী মিলন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে গত দুই দিন হাটে গরু এসেছে কম। তবে গত রোববার থেকে আসা শুরু হয়েছে। এই হাটে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাদারীপুর, ফরিদপুর এলাকার গরু নদীপথেও আসছে। আজও ব্যাপারীরা গরু নিয়ে আসছেন। আমাদের হাটে মঙ্গলবার থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।’
ঢাকার প্রধান হাট গাবতলীতেও আসতে শুরু করেছে পশু। তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, কোরবানির পশুতে হাট ভরে গেছে। গরুর পাশাপাশি উট, মহিষ, ভেড়াও এসেছে। গাবতলী হাটে এদিন কিছু গরু বিক্রি হয়েছে।
মিরপুরের পীরেরবাগ থেকে আসা আবদুল্লাহ আল মামুন গাবতলী হাট থেকে একটি গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেশি গরু কিনতে এসেছি। বাজেটের মধ্যে একটা গরু পছন্দ হয়েছে। এ কারণে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছি।’
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে বিশাল আকৃতির কয়েকটি গরু গাবতলী হাটে তুলেছেন উজ্জ্বল হোসেন। ধূসর কালো রঙের একটি গরুর দাম হাঁকছেন ৩০ লাখ টাকা। তবে এখনও ক্রেতা পাননি তিনি। উজ্জ্বল জানান, পাকিস্তানি শাহিওয়াল জাতের এই গরুর ওজন ৮ থেকে ১০ মণ।
ওই হাটের ঝিনাইদহ থেকে আসা ইমরান হোসেন বলেন, ‘এলাকায় এবার গরু কম। গো-খাদ্যের দাম বেশি বলে কৃষক গরু পালনের দিকে মনোযোগ দেয়নি।