ডাকসুতে চূড়ান্ত প্রার্থী ৪৭১ বাদ পড়লো ৩৮ জন

- আপডেট সময় : ২৬৫ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ৪৭১ জন। ৫০৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৮ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ১০ জন পুনরায় আপিল করেননি। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে সেনা মোতায়েনসহ তিন স্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন।
ভিপি পদে ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন, এজিএস পদে ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন পদে ১৭ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন লড়ছেন। এর আগে গত ১২ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন এবং ২০ আগস্টের মধ্যে জমা দেন।
এ বছর কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৮ পদে শিক্ষার্থীরা লড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক, মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং ১৩টি নির্বাহী সদস্য পদ।
নির্বাচনে সেনাসহ ৩ স্তরের নিরাপত্তা ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে সেনা মোতায়েনসহ তিন স্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ তথ্য জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী। এর আগে এই সভায় ডাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন চিফ রিটার্নিং অফিসার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. গোলাম রব্বানী সভায় ডাকসু নির্বাচনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আমাদের সঙ্গে থাকবে। তারা সহযোগিতার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছে। ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে। তিনি জানান, ভোটের দিন তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রথম স্তরে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন প্রক্টরিয়াল বডি ও বিএনসিসি সদস্যরা। দ্বিতীয় স্তরে মোতায়েন থাকবেন পুলিশ সদস্যরা। আর তৃতীয় স্তরে সেনাবাহিনী থাকবে নির্দিষ্ট প্রবেশপথে। তারা সারাদিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং ভোট শেষে ব্যালটের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করবে। বহিরাগতদের প্রসঙ্গে প্রফেসর রব্বানী বলেন, ভোটের সাত দিন আগে থেকে কোনো বহিরাগত হলে থাকতে পারবে না। হাউস টিউটর ও প্রভোস্টদের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। আমরা নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ হল পরিদর্শন করব। তিনি আরও বলেন, ভোটের দিন পুরো ক্যাম্পাস সিলগালা থাকবে। শুধু বৈধ ভোটাররা প্রবেশ করতে পারবে। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন মেট্রো স্টেশনও বন্ধ থাকবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী অনাবাসিক। তারা সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবহার করেন। ভোটের দিনে তাদের সুবিধার্থে বাসের ট্রিপ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে ঢাবি শিক্ষার্থীবাহী যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন সকাল থেকে তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যালট বাক্স সুরক্ষার কাজও করবে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এবং ৯ সেপ্টেম্বর সারাদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে হলে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবে না। সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. কাজী মারুফুল ইসলাম প্রার্থী ও ভোটারদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের শহীদদের অবমাননা করে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না প্রার্থীরা।