ঢাকা ০৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

তালের শাঁসের সমারোহ রাজধানীর গলি, মহল্লায়

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলা পঞ্জিকার মধুমাস খ্যাত জ্যৈষ্ঠ মাস অতিক্রম করছে দেশ। গ্রীষ্মের খরতাপে যখন জনজীবন অতিষ্ঠ, ঠিক তখনই রাজধানী ঢাকার বাজার ও মহল্লার গলিতে দেখা মিলছে জ্যৈষ্ঠের রসালো মৌসুমি ফল—আম, লিচু ও তালের শাঁস। এসব ফল আগ্রহ নিয়ে কিনছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল বুধবার রাজধানীর মগবাজার এলাকার বিভিন্ন বাজার ও গলি ঘুরে এসব ফলের দেখা মিলেছে।
ফল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমি ফলগুলো বাজারে আসা শুরু করেছে। এখন দাম কিছুটা বেশি হলেও ক্রমান্বয়ে সরবরাহ বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক ক্রেতা জানান, শহরে সব কিছুই কিনে খেতে হয়। ফলগুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি বাসার ছোটদের কথা ভেবেও কিছু কিনে নেওয়া হয়। মৌসুমের শুরু ও দাম বেশি হওয়ায় এখন অল্প পরিমাণে কিনতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে হিমসাগর আম, যা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। প্রতি ১০০টি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায় এবং একটি করে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এছাড়া মহল্লার গলিগুলোতে দেখা গেছে, মৌসুমি বিক্রেতারা অস্থায়ীভাবে তালের শাঁস বিক্রি করছেন। দুপুরের তপ্ত রোদে এসব বিক্রেতার চারপাশে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ তাৎক্ষণিক খাচ্ছেন, আবার অনেকে বাসার জন্য কিনে নিচ্ছেন। তালের শাঁস বিক্রেতা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এখন দুই ধরনের তালের শাঁস পাওয়া যাচ্ছে। একটি একদম কচি, যেটা নরম হওয়ায় মুরুব্বিরা বেশি পছন্দ করেন। অন্যটি একটু শক্ত, মাঝবয়সীরা সেটা নিতে পছন্দ করেন। দুই ধরনেরই দাম ৩০ টাকা পিস। একটি তালে সাধারণত ৩টি করে শাঁস থাকে।অন্যদিকে ফলের দোকানগুলোতে এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে হিমসাগর আম। বিক্রেতা শামীম আহমেদ বলেন, এখন হিমসাগর আমটাই বেশি আসছে। আমের মৌসুম তো শুরু হলো মাত্র। কয়েকদিনের মধ্যে বাজার ভরে যাবে হিমসাগর ও অন্য জাতের আমে। বাসার জন্য আম কিনছিলেন গৃহিণী আফরোজা। তিনি বলেন, হিমসাগরের দাম নিচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। এটা অনেক বেশি। ছেলে প্রায়ই আম খেতে চায়, তাই অল্প করে নিচ্ছি। এছাড়া বাজারে উঠেছে দেশি লিচুও। দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতার দেখা নেই। দোকানি রিয়াদ হোসেন বলেন, বাজারে লিচু এসেছে কয়েকদিন হলো। এখন প্রতি ১০০টি লিচুর দাম ৪০০ টাকা। কিছু উন্নতমানের লিচুর দাম ৪৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, লিচুর চাহিদা আছে। কিন্তু অনেকেই দাম শুনে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আবার অনেকে কিনেও নিচ্ছেন। আমাদের তো আসলে কিছু করার নেই। আমরা যারা খুচরা বেচি, তারা তো বাজার থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। যেমন দামে কিনতে হয়, তেমন দামেই বিক্রি করতে হয়। জ্যৈষ্ঠের রসালো ফলগুলোর মধ্যে আম, লিচু ও তালের শাঁস- শুধু স্বাদের নয়, বরং গ্রীষ্মের তাপদাহে স্বস্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। ঢাকার বাজার-মহল্লার গলিতে এসব ফল এনে দিয়েছে এক টুকরো প্রাকৃতিক আনন্দ। দাম কিছুটা বেশি হলেও মানুষের আগ্রহে ভাটা নেই। বরং এই মৌসুমি ফলগুলো শহুরে জীবনকে ছুঁয়ে দিচ্ছে এক গ্রামীণ আবহে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তালের শাঁসের সমারোহ রাজধানীর গলি, মহল্লায়

আপডেট সময় : ১২:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বাংলা পঞ্জিকার মধুমাস খ্যাত জ্যৈষ্ঠ মাস অতিক্রম করছে দেশ। গ্রীষ্মের খরতাপে যখন জনজীবন অতিষ্ঠ, ঠিক তখনই রাজধানী ঢাকার বাজার ও মহল্লার গলিতে দেখা মিলছে জ্যৈষ্ঠের রসালো মৌসুমি ফল—আম, লিচু ও তালের শাঁস। এসব ফল আগ্রহ নিয়ে কিনছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল বুধবার রাজধানীর মগবাজার এলাকার বিভিন্ন বাজার ও গলি ঘুরে এসব ফলের দেখা মিলেছে।
ফল বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমি ফলগুলো বাজারে আসা শুরু করেছে। এখন দাম কিছুটা বেশি হলেও ক্রমান্বয়ে সরবরাহ বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক ক্রেতা জানান, শহরে সব কিছুই কিনে খেতে হয়। ফলগুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি বাসার ছোটদের কথা ভেবেও কিছু কিনে নেওয়া হয়। মৌসুমের শুরু ও দাম বেশি হওয়ায় এখন অল্প পরিমাণে কিনতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে হিমসাগর আম, যা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। প্রতি ১০০টি লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায় এবং একটি করে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এছাড়া মহল্লার গলিগুলোতে দেখা গেছে, মৌসুমি বিক্রেতারা অস্থায়ীভাবে তালের শাঁস বিক্রি করছেন। দুপুরের তপ্ত রোদে এসব বিক্রেতার চারপাশে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কেউ কেউ তাৎক্ষণিক খাচ্ছেন, আবার অনেকে বাসার জন্য কিনে নিচ্ছেন। তালের শাঁস বিক্রেতা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এখন দুই ধরনের তালের শাঁস পাওয়া যাচ্ছে। একটি একদম কচি, যেটা নরম হওয়ায় মুরুব্বিরা বেশি পছন্দ করেন। অন্যটি একটু শক্ত, মাঝবয়সীরা সেটা নিতে পছন্দ করেন। দুই ধরনেরই দাম ৩০ টাকা পিস। একটি তালে সাধারণত ৩টি করে শাঁস থাকে।অন্যদিকে ফলের দোকানগুলোতে এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে হিমসাগর আম। বিক্রেতা শামীম আহমেদ বলেন, এখন হিমসাগর আমটাই বেশি আসছে। আমের মৌসুম তো শুরু হলো মাত্র। কয়েকদিনের মধ্যে বাজার ভরে যাবে হিমসাগর ও অন্য জাতের আমে। বাসার জন্য আম কিনছিলেন গৃহিণী আফরোজা। তিনি বলেন, হিমসাগরের দাম নিচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। এটা অনেক বেশি। ছেলে প্রায়ই আম খেতে চায়, তাই অল্প করে নিচ্ছি। এছাড়া বাজারে উঠেছে দেশি লিচুও। দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতার দেখা নেই। দোকানি রিয়াদ হোসেন বলেন, বাজারে লিচু এসেছে কয়েকদিন হলো। এখন প্রতি ১০০টি লিচুর দাম ৪০০ টাকা। কিছু উন্নতমানের লিচুর দাম ৪৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, লিচুর চাহিদা আছে। কিন্তু অনেকেই দাম শুনে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আবার অনেকে কিনেও নিচ্ছেন। আমাদের তো আসলে কিছু করার নেই। আমরা যারা খুচরা বেচি, তারা তো বাজার থেকে কিনে এনে বিক্রি করি। যেমন দামে কিনতে হয়, তেমন দামেই বিক্রি করতে হয়। জ্যৈষ্ঠের রসালো ফলগুলোর মধ্যে আম, লিচু ও তালের শাঁস- শুধু স্বাদের নয়, বরং গ্রীষ্মের তাপদাহে স্বস্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। ঢাকার বাজার-মহল্লার গলিতে এসব ফল এনে দিয়েছে এক টুকরো প্রাকৃতিক আনন্দ। দাম কিছুটা বেশি হলেও মানুষের আগ্রহে ভাটা নেই। বরং এই মৌসুমি ফলগুলো শহুরে জীবনকে ছুঁয়ে দিচ্ছে এক গ্রামীণ আবহে।