ঢাকা ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দিশাহীন রেল!

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৯:০০:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪ ১৮৯ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগ্রহ

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

দৃশ্য-১

ঘটনাস্থল সিরাজগঞ্জ। বঙ্গবন্ধুর সেতুর পশ্চিম প্রান্ত। সময় শনিবার বেলা সোয়া ২টা। কলকাতা থেকে ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন নবনির্মিত ৫ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে। একই সময় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ৫ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে এবং দুই ট্রেন মুখোমুখি অবস্থানে!

দৃশ্য-২

দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার খায়রুল আলম ও পয়েনম্যান ৪ নম্বর লাইনের পরিবর্তে ভুল করে ৫ নম্বর লাইনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস প্রবেশ নির্দেশ দেন। এসময় চালক একই লাইনে অপর ট্রেন দেখতে পেয়ে থেমে যান। এতে ৫ নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন মুখোমুখি সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পায়। এ দুটি ট্রেনে আট শতাধিক যাত্রী থাকার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশনের দায়িত্বরত স্টেশনমাস্টার মনিরুজ্জামান।

মনিরুজ্জামান আরও জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত সাতজন অবসরপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার ও কয়েকজন পয়েনম্যান স্টেশনে যোগদান করেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে এনালগ পদ্ধতিতে লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন।

গাজীপুরের ঘটনার পর ট্রেন উদ্ধার কাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ফের একই ঘটনার চিত্র দেখা গেলো সিরাজগঞ্জে। রক্ষা সংঘর্ষ ঘটেনি।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশনে একই লাইনে যখন দুই ট্রেনের মুখোমুখি অবস্থান, তখন রেলবহরে আরও দুটি নতুন ট্রেন যুক্ত হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রী এসময় শরীয়পুরের শিবচর রেলওয়ে স্টেশন ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। সৌভাগ্য আনন্দ অনুষ্ঠান ভারাক্রন্ত হয়ে ওঠেনি।

বেহাল দশা বাংলাদেশ রেলওয়ের! কেন একের পর এক অবহেলার চিত্র রেলপথ ঘিরে? এই প্রশ্নে কি উত্তর হতে পারে? তাতো অবশ্যই আছে রেলভবনের। সে যাক।

রেলপথ ঘিরে একের পর এক দুর্ঘটনার যে চিত্র জনসম্মুখে আসছে, জানমালের ক্ষতি হচ্ছে, তাতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ও যে খুব সুখে রয়েছে, তা কিন্তু নয়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনা এখন নিয়মে দাঁড়িয়েছে। রেল চলবে আর লাইনচ্যুতি হবে না? এটা কি করে হয়। সারা দুনিয়াতেই হয়ে আসছে। তবে দুনিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে আগে নিজের অবস্থানের বিষয়টি মনে রাখা দরকার।

গাজীপুরে দাড়িয়ে থাকা তেলবাহী ট্রেনে দিনে দুপুরে সরাসরি ধাক্কা দেয় টাঙ্গাইল কমিউটার। যাত্রী ট্রেনের একাধিক বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তেলবাহী ট্রেনের ক্ষতি হয়েছে। তেল পড়তেও দেখা গেছে।

সেই ঘটনার উদ্ধার কাজ পুরো সম্পন্ন না হতেই সিরাজগঞ্জের ঘটনার দায়িত্বহীনতার নজির। বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার খায়রুল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, প্রকল্পের সিনিয়র পয়েনম্যান আলমগীরকে ৪ নম্বর লাইনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন প্রবেশ করার নির্দেশনা দিলে সে ভুলবশত ৫ নম্বর লাইনে ট্রেন প্রবেশ করায়।

তবে একই লাইনে আরও একটি ট্রেন দেখতে পাওয়ায় চালক ট্রেন থামিয়ে ফেলেন। এ কারণে অল্পের জন্য সবাই বেঁচে গেছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একই লাইনে দুটি ট্রেন প্রবেশের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দিশাহীন রেল!

আপডেট সময় : ০৯:০০:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০২৪

 

দৃশ্য-১

ঘটনাস্থল সিরাজগঞ্জ। বঙ্গবন্ধুর সেতুর পশ্চিম প্রান্ত। সময় শনিবার বেলা সোয়া ২টা। কলকাতা থেকে ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন নবনির্মিত ৫ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে। একই সময় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ৫ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে এবং দুই ট্রেন মুখোমুখি অবস্থানে!

দৃশ্য-২

দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার খায়রুল আলম ও পয়েনম্যান ৪ নম্বর লাইনের পরিবর্তে ভুল করে ৫ নম্বর লাইনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস প্রবেশ নির্দেশ দেন। এসময় চালক একই লাইনে অপর ট্রেন দেখতে পেয়ে থেমে যান। এতে ৫ নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন মুখোমুখি সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা পায়। এ দুটি ট্রেনে আট শতাধিক যাত্রী থাকার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশনের দায়িত্বরত স্টেশনমাস্টার মনিরুজ্জামান।

মনিরুজ্জামান আরও জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত সাতজন অবসরপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার ও কয়েকজন পয়েনম্যান স্টেশনে যোগদান করেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে এনালগ পদ্ধতিতে লাইন নিয়ন্ত্রণ করেন।

গাজীপুরের ঘটনার পর ট্রেন উদ্ধার কাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই ফের একই ঘটনার চিত্র দেখা গেলো সিরাজগঞ্জে। রক্ষা সংঘর্ষ ঘটেনি।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলস্টেশনে একই লাইনে যখন দুই ট্রেনের মুখোমুখি অবস্থান, তখন রেলবহরে আরও দুটি নতুন ট্রেন যুক্ত হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রী এসময় শরীয়পুরের শিবচর রেলওয়ে স্টেশন ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। সৌভাগ্য আনন্দ অনুষ্ঠান ভারাক্রন্ত হয়ে ওঠেনি।

বেহাল দশা বাংলাদেশ রেলওয়ের! কেন একের পর এক অবহেলার চিত্র রেলপথ ঘিরে? এই প্রশ্নে কি উত্তর হতে পারে? তাতো অবশ্যই আছে রেলভবনের। সে যাক।

রেলপথ ঘিরে একের পর এক দুর্ঘটনার যে চিত্র জনসম্মুখে আসছে, জানমালের ক্ষতি হচ্ছে, তাতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ও যে খুব সুখে রয়েছে, তা কিন্তু নয়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনা এখন নিয়মে দাঁড়িয়েছে। রেল চলবে আর লাইনচ্যুতি হবে না? এটা কি করে হয়। সারা দুনিয়াতেই হয়ে আসছে। তবে দুনিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে আগে নিজের অবস্থানের বিষয়টি মনে রাখা দরকার।

গাজীপুরে দাড়িয়ে থাকা তেলবাহী ট্রেনে দিনে দুপুরে সরাসরি ধাক্কা দেয় টাঙ্গাইল কমিউটার। যাত্রী ট্রেনের একাধিক বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তেলবাহী ট্রেনের ক্ষতি হয়েছে। তেল পড়তেও দেখা গেছে।

সেই ঘটনার উদ্ধার কাজ পুরো সম্পন্ন না হতেই সিরাজগঞ্জের ঘটনার দায়িত্বহীনতার নজির। বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার খায়রুল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, প্রকল্পের সিনিয়র পয়েনম্যান আলমগীরকে ৪ নম্বর লাইনে ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন প্রবেশ করার নির্দেশনা দিলে সে ভুলবশত ৫ নম্বর লাইনে ট্রেন প্রবেশ করায়।

তবে একই লাইনে আরও একটি ট্রেন দেখতে পাওয়ায় চালক ট্রেন থামিয়ে ফেলেন। এ কারণে অল্পের জন্য সবাই বেঁচে গেছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একই লাইনে দুটি ট্রেন প্রবেশের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।