দুদকের ৩ মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে পিআইও কালাম

- আপডেট সময় : ০৪:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ ৭০ বার পড়া হয়েছে
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ আবুল কালাম আজাদ দুর্নীতির দায়ে দুদকের তিনটি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও এখনও বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন—এ নিয়ে এলাকায় উঠেছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
দুর্নীতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে উপার্জনের অভিযোগে দুদকের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। অথচ এসব অভিযোগকে যেন কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না তিনি। এখনও কর্মস্থলে সক্রিয় থেকে প্রভাব খাটিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁর নামে-বেনামে, স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামে গড়ে তুলেছেন কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়। তাঁর ব্যবহৃত একটি প্রিমিও গাড়ির মূল্যই প্রায় অর্ধকোটি টাকা, যেটি ব্যবহার করে প্রতিদিন তিনি পাবনা থেকে শাহজাদপুরে যাতায়াত করতেন।
২০১৯ সালে শাহজাদপুরে পিআইও হিসেবে যোগদানের পর তিনি তৎকালীন সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠজন হয়ে ওঠেন এবং তাঁর কার্যালয় দুর্নীতির এক ‘আখড়ায়’ পরিণত হয়। ২০২১ সালে বদলির আদেশ হলেও প্রভাব খাটিয়ে পুনরায় শাহজাদপুরেই থেকে যান।
২০২২ সালে অন্যত্র বদলি হলেও শাহজাদপুরের দুর্নীতির সুবিধা ও রাজনৈতিক সম্পর্কের ফায়দা নিতে ২০২৪ সালে আবারও ফিরে আসেন। তবে বর্তমান প্রশাসনিক বাস্তবতা ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে এবার আর আগের মতো সুবিধা নিতে পারেননি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবনা কার্যালয়ের তদন্তে উঠে আসে, তাঁর স্ত্রী মর্জিনা খাতুন ও ছেলে ফজলে রাব্বীর নামে ৪ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার সম্পদের অস্তিত্ব রয়েছে, যার কোনো বৈধ আয় উৎস নেই।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১১ই মার্চ দুদকের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বাদী হয়ে আবুল কালাম আজাদ, তাঁর স্ত্রী ও পুত্রের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘পিআইও আবুল কালাম আজাদের কারণে আমি নিজেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত এর সুরাহা হবে’
এদিকে, বারবার চেষ্টা করেও পিআইও আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে কার্যালয়ে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।