ঢাকা ১২:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রাজধানীতে আসছে উত্তরাঞ্চলের মৌসুমি কসাই Logo জমে উঠছে রাজধানীর পশুরহাট ব্যাপারীরা ক্রেতার অপেক্ষায় Logo ভোগান্তিহীন স্বস্তির ঈদযাত্রা ঢাকার ভেতরেই যত বিড়ম্বনা Logo কালীগঞ্জে ৩ হাজার ২শত কৃষককে দেওয়া হল বিনামূল্যে সার ও বীজ Logo খাতের সফল খামারি উদ্যোক্তাদের মাঝে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান Logo কাজী মামুনুর রশীদ কচি সদস্য হওয়াতে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা Logo মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা Logo ইসলামপুর ইউনিয়নে ঈদের চাল নিয়ে পরিষদ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগ Logo মর্গ্যান স্কুলের দুর্নীতির তদন্তে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর, ৬ শিক্ষকের নামে মামলা Logo মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের জেলা কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

দূর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০১:০১:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪ ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যখন উপকূলবাসী দুর দুরু বুকে মানববন্ধনে, তখন বঙ্গোপসাগরে চোক রাঙাছে নিম্নচাপ। যেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে হবে রেমাল! এটি আঘাত হানবে বাংলাদেশের উপকূলে। সর্বশেষ আবহাওয়া বার্তায় তাই বলা হয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক দূর্যোগ আঘাত হানছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, পানি সংকট নিরসন ও বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প নিলেও পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবে তা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ কারণে উপকূলের উন্নয়নে আগামী জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া জরুরি।

আজ শনিবার ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’র ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামেন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ সব কথা বলেন তারা। উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পারিজা)’র সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন, জনলোকের মোক্তার হোসেন, আলীম সাহিত্য সংসদের সানজিদুল হাসান, পাইকগাছার পরিবেশকর্মী অ্যাডভোকেট প্রধীশ হালদার প্রমূখ।

সমাবেশে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা সব থেকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ। আইলা, আম্ফান, ইয়াসসহ একের পর এক দুর্যোগের কারণে ওই অঞ্চলে জীবন-জীবিকার ঝুঁকি বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে উপকূলীয় এলাকাকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। তাই উপকূলের উন্নয়নের জন্য সুনিদ্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পৃথক বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, উপকূলে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন কাজ চলছে ধীরগতিতে। অন্যদিকে শতাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও কোন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। তাই চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণ। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, দুর্যোগ ও লবণ পানির আগ্রাসনের কারণে উপকূলীয় জনপদে সংকট বাড়ছে। তাই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বসতি ও ফসলী এলাকায় লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইতোমধ্যে গৃহীত প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এজন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবনাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে সংকটে আছে। এই সংকট মোকাবেলায় দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।

উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উপকূলে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী সম্প্রসারণ ও সুন্দরবন সুরক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নদ-নদী ও জলাশয় রক্ষায় আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দূর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

আপডেট সময় : ০১:০১:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

 

ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যখন উপকূলবাসী দুর দুরু বুকে মানববন্ধনে, তখন বঙ্গোপসাগরে চোক রাঙাছে নিম্নচাপ। যেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে হবে রেমাল! এটি আঘাত হানবে বাংলাদেশের উপকূলে। সর্বশেষ আবহাওয়া বার্তায় তাই বলা হয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক দূর্যোগ আঘাত হানছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, পানি সংকট নিরসন ও বনায়নসহ অন্যান্য প্রকল্প নিলেও পর্যাপ্ত বাজেটের অভাবে তা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ কারণে উপকূলের উন্নয়নে আগামী জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া জরুরি।

আজ শনিবার ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’র ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামেন আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ সব কথা বলেন তারা। উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পারিজা)’র সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন, জনলোকের মোক্তার হোসেন, আলীম সাহিত্য সংসদের সানজিদুল হাসান, পাইকগাছার পরিবেশকর্মী অ্যাডভোকেট প্রধীশ হালদার প্রমূখ।

সমাবেশে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা সব থেকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ। আইলা, আম্ফান, ইয়াসসহ একের পর এক দুর্যোগের কারণে ওই অঞ্চলে জীবন-জীবিকার ঝুঁকি বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে উপকূলীয় এলাকাকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। তাই উপকূলের উন্নয়নের জন্য সুনিদ্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে হবে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পৃথক বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, উপকূলে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন কাজ চলছে ধীরগতিতে। অন্যদিকে শতাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও কোন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। তাই চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণ। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, দুর্যোগ ও লবণ পানির আগ্রাসনের কারণে উপকূলীয় জনপদে সংকট বাড়ছে। তাই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বসতি ও ফসলী এলাকায় লবণ পানি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ইতোমধ্যে গৃহীত প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এজন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবনাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে সংকটে আছে। এই সংকট মোকাবেলায় দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।

উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উপকূলে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী সম্প্রসারণ ও সুন্দরবন সুরক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নদ-নদী ও জলাশয় রক্ষায় আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।